× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার

মো. রেজাউর রহিম

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২৮ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্ব ও পারস্পারিক সহযোগিতায় নতুন মাত্রায় উন্নীত হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতায়ও আসছে ‘বিশেষ গতি’। কিছুদিন আগেও অর্থাৎ ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের সময়ে ভারতের ওপর অধিক নির্ভরশীলতার কারণে চীনের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছাড়া আন্যান্য সম্পর্কেও ওপর জোর দেওয়া হয়নি। তবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের স্বার্থেকে প্রাধান্য দিয়ে চীনের সঙ্গে ‘বহুমাত্রিক’ সম্পর্ক বিস্তারের ওপর জোর দিয়েছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে নিরাপত্তা ও সামরিক সম্পর্কও জোরদার হচ্ছে।  

এছাড়া পণ্য ও কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতনির্ভরতা কমছে। আর বিশ্ব বাণিজ্যের বিভিন্ন সমীকরণে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কে নতুন উচ্চতায় উন্নত করার দিকে দৃষ্টি দিয়েছে দু’দেশ। পাশাপাশি চীন এখন বাংলাদেশের আমদানি পণ্যের প্রধানতম উৎস হয়েও উঠেছে এবং চীনও বাংলাদেশের আমদানিনির্ভর খাতে ধীরে ধীরে নিজেকে করে তুলেছে ‘অপরিহার্য’ তুলেছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘদিনের পুরনো বন্ধু চীন। গত শতাব্দীর পঞ্চশের দশকে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে চীনের সঙ্গে প্রথম সখ্যতা শুরু হলেও স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। এখন দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে গতি পাচ্ছে।

জানা গেছে, গত কয়েক মাসে প্রধান উপদেষ্টা, সেনাপ্রধানসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চীন সফর সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অর্থনীতি, পানি সম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে কৌশলগত নিরাপত্তা প্রতিটি ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব দিন দিন আরো দৃঢ় হচ্ছে। বিশেষ করে তিস্তা নদী ও ঢাকার নদীগুলোর দূষিত পানি পরিশোধন, নতুন হাসপাতাল স্থাপনা, উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প এবং বিনিয়োগ-সুবিধার মাধ্যমে দেশের জনগণকে ‘জনসম্পদে’ রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। চীনের সঙ্গে এই সম্পর্কন্নোয়ন দেশের বিপুল জনগোষ্ঠিকে জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায় হিসেবে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর চলতি বছরের ২৬-২৯ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২৮ মার্চ তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং দেশটির বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য এশিয়ার নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে বাংলাদেশের বেশকিছু বড় অর্জন রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে; যা বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পর দুই বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে।

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়েছেন, এটি ড. ইউনূস সরকারের জন্য একটি সুখবর। চীন সরকার ও সেদেশের কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশ ২১০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এছাড়া দেশটির ৩০টি কোম্পানি চট্টগ্রামের অনোয়ারায় চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। এছাড়া মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ, বহুল প্রতিশ্রুত তিস্তা প্রকল্পে সহায়তাসহ বাংলাদেশের নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীন থেকে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছে বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার ওই সফরে একটি চুক্তি ও আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এর মধ্যে রয়েছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যসেবা খাত। চীনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের সুদের হার ১-২ শতাংশ হ্রাস করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা চীনের তৈরি পোশাক কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিকস, চিপ উৎপাদন এবং সৌর প্যানেল শিল্প বাংলাদেশে হস্তান্তর সহজ করতে বেইজিংয়ের সহায়তা চান। এ বিষয়ে চীন ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছে। এসব বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে চীনের ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও তৈরি হবে।

বিএনপি নেতাদের চীন সফর: ২২ জুন রাতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল চীন যান। তারা বেইজিং গ্রেট হলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। চীনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী সান ওয়েইডং, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংঝং এর সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে এসব বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহ উল্লাহ, সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ছিলেন।

চীন সফর শেষে ২৭ জুন রাতে দেশে ফেরার পর মির্জা ফখরুল বলেন, চীন সফরের মধ্য দিয়ে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের এই সফরটা ছিল রাজনৈতিক।

তিনি বলেন, আমাদের এই সফরটা সফল হয়েছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ মিটিং হয়েছে। ‘পার্টি টু পার্টি’ সম্পর্ক আরও নিবিড় এবং শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তারা দাওয়াত করেছেন এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা খুশি হয়েছেন।

জামায়াত নেতাদের চীন সফর: প্রথমবারের মতো গত ১০ জুলাই চীন সফর করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

১৫ জুলাই রাতে ঢাকায় ফেরার পর  জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৬ আগস্ট চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। চলতি বছর এই সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি হয়েছে। ৫০ বছরের বন্ধুত্বের বার্তা তাদের পৌঁছে দিয়েছি। চীনের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় চীনের প্রেসিডেন্টকে এই দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

শফিকুর রহমান বলেন, গত ৩৫ বছরে চীনের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এটা তারা কীভাবে সম্ভব করেছেন, সেটা জানার চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শুধু ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’-এর মধ্যেই এখন সীমাবন্ধ নয়, এটা এখন প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক হয়েছে। সেটা শুধুমাত্র একটি দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সকল দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

এনসিপি নেতাদের চীন সফর: চীন সরকারের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সফরে গত ২৬ আগস্ট দেশটিতে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল। গত ৩১ আগস্ট রাতে দেশে ফেরেন তারা। এ সময় নাহিদ ইসলাম চীন সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য চীনের সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

সফরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সংস্কার স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য তারা তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তিস্তায় যুক্ত হচ্ছে চীন-বাংলাদেশে তিস্তা নদীসহ পানিসম্পদ খাতের সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হচ্ছে চীন। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা অভিন্ন নদী যমুনার উজানে পানিপ্রবাহের বিষয়ে তথ্য দেবে দেশটি।

সেনাপ্রধানের চীন সফর: গত ২০ আগস্ট সরকারি সফরে চীনে যান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সফর শেষে গত ২৭ আগস্ট রাতে দেশে ফেরেন তিনি।  

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সফরে সেনাপ্রধান পিপলস লিবারেশন আর্মির স্থল বাহিনীর পলিটিক্যাল কমিশার জেনারেল চেন হুইসহ উচ্চপদস্থ চীনা সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

গত ২২ আগস্ট সেনাবাহিনী প্রধান পিপলস লিবারেশন আর্মির সদর দপ্তরে পৌঁছলে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনী প্রধান পিপলস লিবারেশন আর্মির স্থল বাহিনীর পলিটিক্যাল কমিশার জেনারেল চেন হুইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা, জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনে সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশের সামরিক শিল্পের উন্নতিতে চীন কর্তৃক প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া সফরকালে সেনাপ্রধান পিপলস লিবারেশন আর্মির একাডেমি অব আর্মড ফোর্সেসের বেইজিং ক্যাম্পাসের প্রশিক্ষণ সুবিধাদিসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন গবেষণাগার পরিদর্শন করেন।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে সবচেয়ে  বড় গন্তব্য ছিল ভারত। গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ায় কড়াকড়ি আরোপ করে ভারত। এ অবস্থায় চীন সরকার এগিয়ে আসায় বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য দেশটি ভালো গন্তব্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চীনের তিনটি সরকারি এবং একটি বেসরকারি হাসপাতাল বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলো হচ্ছে, দ্য ফার্স্ট পিপলস হসপিটাল অব ইউনান প্রভিন্স, দ্য ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল অব কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, চায়নিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেসের ‘ফাওয়াই ইউনান হসপিটাল’ এবং ট্র্যাডিশনাল চায়নিজ মেডিকেল হসপিটাল (টিএমসি)।

অটুট বিশ্বস্ততা ও স্থিতিশীলতা:  ১৯৭৫ সালে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর চীন থেকে পণ্য আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে চীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস।

অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-চায়না অ্যালামনাইয়ের (এবিসিএ) সাধারণ সম্পাদক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক  ভোরের আকাশ’কে বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, যা গতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন।

চীনকে ‘ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি’র দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন,  তারা ব্যবসাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। কোনো ভূ-রাজনৈতিক কারণে সে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক টানাপোড়েন কখনো হয়নি। এ ধরনের বিশ্বস্ততা ও স্থিতিশীলতা চীনের প্রতি এদেশের ব্যবসায়ীদেরও আগ্রহী করে তুলেছে।

সাহাবুল হক বলেন, একসময়ের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন বিশেষ করে-নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হয়েও বন্দর বন্ধ করে দেওয়া, হুট করে পণ্যে অস্বাভাবিক শুল্কারোপ এবং নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘটনায় চীনের প্রতিবাংলাদেশের সরকার ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ আগের চেয়ে আরো বেড়েছে।

তিনি বলেন, দুই দেশের দীর্ঘদিনের ব্যবসা শুধু অর্থনৈতিক সম্পর্ক নয়, আঞ্চলিক ও কৌশলগত দিক থেকে দুদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অবকাঠমো খাতে সহযোগিতা: এদিকে সম্পর্কের শুরু থেকেই দু’দেশের সরকারি পর্যায়েও ভালো সমঝোতা বিদ্যমান। আর অবকাঠামো খাতে বিশেষ করে সড়ক ও রেল খাতে বিনিয়োগে চীনের বড় প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক থেকে শুরু করে পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী টানেলসহ বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প কিংবা এক্সপ্রেসওয়ে-সবখানেই রয়েছে চীনের সহযোগিতা।

এছাড়া চীনের সরকারি ঋণ ও বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের অন্যতম বড় উৎস। প্রতিবেশী চারটি দেশ নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক জোট বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চায়না-ইন্ডিয়া-মিয়ানমার) অর্থনৈতিক করিডোর এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় বাংলাদেশের ৩০টিরও বেশি প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে চীন। অর্থনীতিবিদদের হিসাবে, বর্তমানে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৩৫ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৬৪ কোটি মার্কিন ডলার এবং রপ্তানি আয় ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৫৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২ হাজার ১৮০ কোটি ডলার ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক হাজার ৮৫০ দশমিক ৪০ কোটি ডলারের বাণিজ্য সম্পন্ন হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মূলত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক বিষয়গুলোর চাহিদা পূরণেও বাংলাদেশ এখন বহুক্ষেত্রে চীননির্ভর। এছাড়া দেশে বহু খাদ্যপণ্যের শিল্পকারখানার কাঁচামাল কিংবা আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ নানা প্রযুক্তির সবই চীনের। হাসপাতালের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রাংশের বেশিরভাগ চীন থেকে আসে। আর দেশে যে ওষুধগুলো তৈরি হচ্ছে, তার কাঁচামালও আসে চীন থেকে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ভোরের আকাশ’কে বলেন,  পণ্য, পণ্যের কাঁচামাল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চীনের বিকল্প এখন বাংলাদেশের হাতে নেই। চীন প্রতিযোগিতামূলক দামে বিভিন্ন মানের পণ্য উৎপাদনের দিকে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ মূলধনী যন্ত্রপাতি আনা শুরু করেছে চীন থেকে। আগে বাংলাদেশ এগুলো আমদানি করতো জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া-এসব দেশ থেকে।

তিনি বলেন, মধ্যবর্তী অনেক ভোগ্যপণ্যও আসছে চীন থেকে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়নে চীনা প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য, নানা প্রযুক্তিপণ্য। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়িক সম্পর্ক বিরাজ করছে যা দুদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।  

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চীন থেকে এক লাখ ২৬ হাজার ২৪১ কোটি টাকার খাদ্যপণ্য আমদানি করা হয়েছে; যা মোট আমদানির ২৩ শতাংশ। একই সময়ে চীনের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারত থেকে ৫৬ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার খাদ্যপণ্য এসেছে।  যা মোট আমদানির সাড়ে ১৩ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ খাদ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় অংশটি আমদানি করে চীন থেকে। প্রধান আমদানিপণ্যের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের কাঁচামাল, কিছু ভোজ্যতেল, গম, রসুন, আদা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচসহ বিভিন্ন ফল, কাঁচা মাছ ও মাংস রয়েছে। যদিও চীন থেকে এককভাবে কোনো শস্য সর্বোচ্চ আমদানি হয় না, কিন্তু নানা ধরনের পণ্য আমদানির কারণে এ পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ‘বৈদেশিক বাণিজ্য পরিসংখ্যান’র তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চীন থেকে এক লাখ ২৬ হাজার ২৪১ কোটি টাকার খাদ্যপণ্য আমদানি করা হয়েছে; যা মোট আমদানির ২৩ শতাংশ। একই সময়ে চীনের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারত থেকে ৫৬ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার খাদ্যপণ্য এসেছে; যা মোট আমদানির সাড়ে ১৩ শতাংশ।

ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টরা জানান, চীনা পণ্যের দাম সবসময় ভালো থাকে। এছাড়া এলসি করে ঠিকঠাক পণ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। তাদের মতে, চীন থেকে পণ্য আমদানিতে পরিবহন খরচ তুলানামুলকভাবে কম। আর দেশটি থেকে থেকে পণ্য আমদানিতে ঝুঁকিও কম।

ওষুধের এপিআই বেশিরভাগই চীনের: এছাড়া বাংলাদেশের ওষুধের কাঁচামাল অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টের (এপিআই) ৯৭ শতাংশ চাহিদা মেটানো হয় আমদানির মাধ্যমে। গত অর্থবছর দেশে ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় হয় ৬০ কোটি ডলার বা পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কাঁচামাল চীনের বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, ওষুধ ফরমুলেশনে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। কিন্তু এপিআই সক্ষমতা না থাকায় চীন আমাদের ব্যাকআপ দিচ্ছে। ওষুধের কাঁচামালের সবচেয়ে সাশ্রয়ী উৎসও দেশটি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের সঙ্গে আমদানির পাশাপাশি সেখানকার বাজারে প্রবেশের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এখন চীনের সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্কটা অনেক বেশি শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের আমদানির পাশাপাশি চীনের মার্কেটে প্রবেশের বিষয়টিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবি পার্টির চেয়ারম্যানের বৈঠক

চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবি পার্টির চেয়ারম্যানের বৈঠক

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের

হার দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ

হার দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

জুলাই আদেশ হচ্ছে, গণভোট হবে কী

জুলাই আদেশ হচ্ছে, গণভোট হবে কী

 নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজায় বিমান হামলা ও মিসাইল বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতির অনিশ্চয়তা

নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজায় বিমান হামলা ও মিসাইল বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতির অনিশ্চয়তা

 শিক্ষায় বিনিয়োগ না বাড়ালে গুণগত মান উন্নয়ন সম্ভব নয়: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সলর

শিক্ষায় বিনিয়োগ না বাড়ালে গুণগত মান উন্নয়ন সম্ভব নয়: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সলর

 গাজীপুরে ২৮ অক্টোবরের পল্টন ট্রাজেডির শহীদদের স্মরণে আলাচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

গাজীপুরে ২৮ অক্টোবরের পল্টন ট্রাজেডির শহীদদের স্মরণে আলাচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

 কুয়েটে নিরাপত্তা গার্ডদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কুয়েটে নিরাপত্তা গার্ডদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

 কাপাসিয়ায় যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ

কাপাসিয়ায় যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ

 খুলনায় জোড়া হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

খুলনায় জোড়া হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

 ডিজিটাল লেনদেন স্মার্ট বাংলাদেশের মূল চাবিকাঠি: আরিফ হোসেন খান

ডিজিটাল লেনদেন স্মার্ট বাংলাদেশের মূল চাবিকাঠি: আরিফ হোসেন খান

 টাঙ্গাইলে বিএডিসি বীজ ডিলারদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

টাঙ্গাইলে বিএডিসি বীজ ডিলারদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: যৌথ গবেষণায় কোলাবরেটিভ গ্রান্টে গুরুত্ব

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: যৌথ গবেষণায় কোলাবরেটিভ গ্রান্টে গুরুত্ব

 রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদকে নীলফামারীতে ফুলেল সংবর্ধনা

রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদকে নীলফামারীতে ফুলেল সংবর্ধনা

 নড়াইলে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম

নড়াইলে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম

 পিরোজপুরে একমাত্র নারী মনোনয়ন প্রত্যাশী এলিজা জামান

পিরোজপুরে একমাত্র নারী মনোনয়ন প্রত্যাশী এলিজা জামান

 ঐক্য নতুবা বহিষ্কার

ঐক্য নতুবা বহিষ্কার

 নাজিরপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও যুব সমাবেশ

নাজিরপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও যুব সমাবেশ

 চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার

চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার

 ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ,যুবক গ্রেফতার

ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ,যুবক গ্রেফতার

 নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-অন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-অন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

 লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৭৪ বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৭৪ বাংলাদেশি

 জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

সংশ্লিষ্ট

চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার

চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-অন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-অন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৭৪ বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৭৪ বাংলাদেশি

সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিজেসিএসসির সৌজন্য সাক্ষাৎ

সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিজেসিএসসির সৌজন্য সাক্ষাৎ