নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫ ১২:৩৯ এএম
ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে কোরবানির হাট
বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার মধ্যেও জমে উঠছে ঝালকাঠির কোরবানির পশুর হাট। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে থেমে থেমে ঝিরিঝিরি আর মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও পশু কিনতে ও বিক্রি করতে হাটে উপস্থিত হয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সদর উপজেলার বিকনা হাট ও রাজাপুর উপজেলার বাঘরী হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট-বড় নানা আকারের গরু নিয়ে আসছেন খামারিরা। দুপুর তিনটা পর্যন্ত হাটের ভেতর এবং আশপাশে ব্যাপক গরুর সমাগম ছিল।
নলছিটির খামারি মোসলেম আলী বলেন, “এক লাখ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকার গরু বেশি চলছে। যারা ছোট গরু এনেছেন, কিছুটা লাভ করছেন। কিন্তু বড় গরুর চাহিদা কম, লাভও কম।”
তিনি জানান, গবাদিপশু পালনের খরচ গত বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। “গত বছর ২ হাজার টাকায় যে খড় মিলতো, এবার সেটি ৩ হাজার। ভূষি, কুড়া, খুদের দামও বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। অথচ গরুর দাম প্রায় আগের মতোই।”
বিক্রেতা তোতা আলী বলেন, “আবহাওয়া খারাপ, ক্রেতাও কম। এর পাশাপাশি রাজনীতির পট পরিবর্তনের কারণে বড় গরু কেনা আগের সেই লোকজন এবার বাজারে নেই। যারা বড় গরু কিনতেন, তারা অনেকেই পলাতক।”
একই কথা বলেন গরু ব্যবসায়ী আশাবুল। “যারা পলাতক, তারা অনেক টাকার মালিক ছিল। কোরবানিতে অনেক গরু কিনতো। বড় নেতা থেকে পাতি নেতাও হাটে আসত। এবার তারা না থাকায় বাজারে সেই রকম চাঙাভাব নেই।”
ক্রেতা মোসলেম বলেন, “সবাই এখন একটা অস্থির পরিস্থিতিতে আছে। বড় অংকের টাকা খরচ করতে চায় না। বাজার এখনো পুরো জমেনি।”
রাজাপুরের ক্রেতা আব্দুর রশিদ বলেন, “বাজেট আর পছন্দ মিললেই কিনব, না হলে আরও ঘুরব।”
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চারটি উপজেলায় ৮৩টি প্রচলিত হাট-বাজার রয়েছে, যেগুলো কোরবানির সময় পশুর হাটে রূপ নেয়। সদর উপজেলায় ১৬টি, নলছিটিতে ২৫টি, রাজাপুরে ৩০টি এবং কাঁঠালিয়ায় ১৩টি হাট রয়েছে।
হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন, ভেটেরিনারি টিম এবং ব্যাংক প্রতিনিধিরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
বড় গরুর বিক্রি আশানুরূপ না হলেও, শেষ সময়ে বাজার চাঙা হবে বলে আশা করছেন হাট ইজারাদাররা। তবে খামারিরা বলছেন, আশানুরূপ দাম না পেলে অনেকেই পশু বাড়ি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবেন।
ভোরের আকাশ/হ.র