তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫ ১০:০৪ এএম
অবশেষে আইএমএফের ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ
নানা নাটকিয়তা শেষে বাংলাদেশকে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার দিতে রাজি হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ঋণ ছাড়করণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে শিগগিরই কর্মকর্তা পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষর করবে সংস্থাটি। এরপর আগামী জুনের শেষে আইএমএফের পর্ষদ সভায় ঋণ ছাড়ের প্রস্তাব উত্থাপিত হবে। ওই সভায় প্রস্তাব অনুমোদন হলে জুনের মধ্যেই ঋণের দুই কিস্তির অর্থ পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোরের আকাশ’কে বলেছেন, আইএমএফের সঙ্গে আমাদের চলমান আলোচনা শেষ হয়েছে এবং সংস্থাটি ঋণের কিস্তি ছাড় করতে রাজি হয়েছে।
এর আগে ডলারের বিনিময় হার নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় ঋণের কিস্তি পাওয়ার বিষয়টি ঝুলে গিয়েছিল। ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে বলেছিল আইএমএফ। কিন্তু এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকায় এই শর্তে দ্বিমত পোষণ করে আসছিল বাংলাদেশ।
রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক দেনার চাপ সামাল দিতে ২০২২ সালে আইএমএফের দারস্থ হয় বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে এই ঋণ দেওয়ার কথা। যথাসময়ে প্রথম তিন কিস্তির ২৩১ কোটি ডলার ঋণ পায় বাংলাদেশ।
সর্বশেষ কিস্তি পায় ২০২৪ সালের জুনে। চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। কিন্তু নানা শর্তে সেই ঋণ আটকে যায়। পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করলে চলতি বছরের মার্চে ঋণের চতুর্থ কিস্তি পাবে। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় ঘোষণা আসে, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একত্রে চলতি বছরের জুনে দেওয়া হবে।
এ নিয়ে আলোচনার জন্য গতমাসে বাংলাদেশে আসে আইএমএফ মিশন। ওই সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায়, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের অবসরে আবারও আলোচনা হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল। ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বৈঠকের অবসরে আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফায় আলোচনার টেবিলে বসেন অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নর সহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
ওই আলোচনায় দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় বাংলাদেশে ফিরে পৃথক বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্ট ও গভর্নর বলেছেন, শর্ত মেনে আইএমএফের ঋণ নিতেই হবে এমন অবস্থানে নেই বাংলাদেশের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে আইএমএফের আগ্রহে গত ৫ ও ৬ মে দুই দিন ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ