আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫ ১২:১৯ এএম
রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের তদন্ত শুরু
ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগে ভারতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জাতিসংঘ। অভিযোগ উঠেছে, অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন বিষয়টিকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
৬ মে রাতে দিল্লির কয়েকটি এলাকা থেকে UNHCR-নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের আটক করে পুলিশ। প্রথমে বলা হয়েছিল, বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে, কিন্তু পরে তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়নি। আটকদের প্রথমে ডিটেনশন সেন্টারে, এরপর ৮ মে একটি নৌবাহিনীর জাহাজে করে আন্দামান পাঠানো হয়। অভিযোগ, সেখান থেকে তাদের চোখ-মুখ বেঁধে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানিয়েছে, যাদের ফেলা হয়েছে, তাদের মধ্যে কিশোর, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিও ছিলেন। অনেকেই বলছেন, পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে লাঞ্ছনাও করেছে।
জাতিসংঘ বলছে, এই রোহিঙ্গারা আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখে। তাদের কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হয়েছে, আদালতে তোলা হয়নি এবং নারী-শিশুদের সুরক্ষাও নিশ্চিত করা হয়নি।
এই ঘটনার পর জাতিসংঘ ৪০ জন রোহিঙ্গার খোঁজ শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেরাই সাঁতরে মিয়ানমারের তানিনথারি এলাকায় পৌঁছেছেন।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট করলেও আদালত প্রমাণের ঘাটতির কথা বলে তা খারিজ করেছে। তবে বিষয়টি চলমান মামলার বেঞ্চে উপস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতিরা। শুনানি হবে ৩১ জুলাই।
মানবাধিকার আইনজীবীরা বলছেন, ভারত আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব না পাওয়া এই শরণার্থীদের কীভাবে জোর করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
একজন তরুণ রোহিঙ্গা বলেন, “আমার ভাই কোনো রাজনীতিতে ছিল না, ভালো মানুষ ছিল। তাকে আবর্জনার মতো ফেলে দেওয়া হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং ভারতকে মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ আহ্বান জানিয়েছে।
ভোরের আকাশ//হ.র