আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৫ ০১:২০ পিএম
পাকিস্তানে বৃষ্টি ও বন্যায় প্রাণহানি বেড়ে ২২১
পাকিস্তানে চলমান মৌসুমি বৃষ্টিপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২১ জনে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) জানিয়েছে, নতুন করে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি এলাকায় আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস এবং বজ্রপাতের ঘটনা বাড়ছে, যার ফলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিজনিত ঘটনায় নতুন করে দুই পুরুষ এবং তিন শিশু নিহত হয়েছে। একইসঙ্গে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এনডিএমএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমি বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত মোট ৫৯২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৭৭ জন পুরুষ, ৪০ জন নারী এবং ১০৪ জন শিশু।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাঞ্জাব প্রদেশ
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃত্যুর কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভবন ধস, পানিতে ডুবে যাওয়া, ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া।
এছাড়া মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৮০৪টি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ২০০টি গবাদিপশু মারা গেছে।
বাবুসর এলাকায় বন্যাজনিত জরুরি অবস্থা জারি করেছে এনডিএমএ। টানা বৃষ্টির কারণে বাবুসর টপ এলাকায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার জুড়ে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধস দেখা দিয়েছে। অন্তত ১৪ থেকে ১৫টি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং সেখানে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে চিলাস শহরে।
দেশজুড়ে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। তবে আগাম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় এনডিএমএ সবাইকে— বিশেষ করে নিচু এলাকা ও বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (PMD) জানিয়েছে, কাশ্মীর, খাইবার পাখতুনখোয়া, ইসলামাবাদ, পাঞ্জাব ও গিলগিট-বালতিস্তানের কিছু এলাকায় দমকা হাওয়া, বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু অঞ্চলে আবহাওয়া গরম ও আর্দ্র থাকলেও বেশ কয়েকটি এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ুতে মৌসুমি বৃষ্টি একটি স্বাভাবিক চক্র, যা কৃষিকাজ ও পানির উৎস রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে নগরায়ণের দ্রুত প্রসার, দুর্বল নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভোরের আকাশ//হ.র