শহীদুল ইসলাম
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০১ এএম
ছবি: সংগৃহীত
প্রাকৃতিক স্বর্গরাজ্য আর বহুমাত্রিক সংস্কৃতির মেলবন্ধন পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা-খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অঘটন ঘটানোর মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার যে দেশ-বিদেশি ষড়যন্ত্র, তার ধারাবাহিকতায় তিন পার্বত্য জেলায় নাশকতামূল কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। বিছিন্নতাবাদী সংগঠনের চাঁদাবাজি, বাঙালি বনাম পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে অবিশ্বাস, রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনা, প্রশাসনিক অদক্ষতা, ভিন্ন রাষ্ট্রের উস্কানিসহ ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়াকে কাজে লাগাচ্ছে একটি কুচক্রিমহল। বিশৃঙ্খলার পেছনে এসবই মূল কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলায় মারমা সম্প্রদায়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ওই চক্রটি রীতিমতো রাষ্ট্রঘাতি অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে। তারা পাহাড়ি জনপদে রক্তাক্ত সংঘাতের চক্রান্ত করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আক্রমণ, বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুরের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে লিপ্ত হয়েছে তারা। পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের উত্তেজনার মধ্যে রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা ছড়িয়ে পরে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে অন্তত ৩ জন নিহত হন। এই ঘটনায় একজন মেজরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার সচিবলয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, খাগড়াছড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। খাগড়াছড়িতে একটা মহল পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব চলছে। এই উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু একটা মহল চেষ্টা করছে এই উৎসবটা যেন ভালোভাবে না হয়। একটা মহলই খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পাহাড়ে অস্ত্র-অর্থ যোগান দেওয়া হচ্ছে কীনা এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ভারত ও ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে পাহাড়ে যেন কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটতে পারে এজন্য আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছি। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা ঘটনাস্থলে রয়েছেন, তিনি সার্বিক বিষয় দেখছেন।
তিনি বলেন, কিছু সন্ত্রাসী পাহাড়ের ওপর থেকে ফায়ার (গুলি) করছে। এ হাতিয়ারগুলো (অস্ত্র) অনেক সময় বাইরে থেকে আসছে। আমি অবশ্য সেই দেশের নাম বলতে চাই না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা বিভাজন, অশান্তি জিইয়ে রেখে একটি পক্ষ বারবার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা আর দ্বিতীয় পক্ষকে সুবিধা নিতে দেব না। আমাদের মধ্যে যদি সমস্যা থাকে, আমরা নিজেরাই সুরাহা করব। এ জন্য আপনাদের-আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
খাগড়াছড়ির ঘটনার সূত্রপাত যেখান থেকে: গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলায় মারমা সম্প্রদায়ের একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন দুর্বৃত্তের হাতে অপহরণের শিকার হয়ে ধর্ষিত হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ওই স্কুল ছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষা করলে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এই জঘন্য ঘটনায় জড়িত মূল আসামি শয়ন শীলকে বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর সদর জোনের সহযোগিতায় পুলিশ গ্রেফতার করে। আদালতে হাজির করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। বাকি অপরাধীদের ধরতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই দ্রুত পদক্ষেপ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর অগ্রণী ভূমিকার প্রমাণ বহন করে।
রোববার ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে অবরোধ চলাকালে খাগড়াছড়ির গুইমারা বাজার এবং এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালায় ভারতের প্রশিক্ষিত পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। এ সময় ২০ থেকে ২৫টি দোকান, বেশ কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল এবং শান্তিপ্রিয় বাঙালি-পাহাড়িদের বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে এবং প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করে। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হন। সম্প্রতি সময়ে পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প বৃদ্ধি ও সেনা সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন শান্তিপ্রিয় বাঙালি-পাহাড়িরা। ভারতের প্রশিক্ষিত উপজাতি সন্ত্রাসীরাই পাহাড়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে এবং পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি ও উস্কানি: এই ঘটনার পর ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) গ্রুপের উস্কানিতে উখ্যানু মারমার নেতৃত্বে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ ব্যানারে তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনী নিশ্চিত হয় উখ্যানু মারমা ইউপিডিএফের প্ররোচনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও পাহাড়ের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এই প্রেক্ষিতে উখ্যানু মারমাকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয় যাতে অরাজকতা বা নৈরাজ্য সৃষ্টি করা না হয়।
এদিকে, রাঙামাটি চাকমা সার্কেলের চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়ান ইয়ান রাখাইন তার ফেসবুক আইডি থেকে উস্কানিমূলক পোস্ট প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেন। একইভাবে, কানাডা প্রবাসী প্রজ্ঞা তাপস চাকমা সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ঘেরাও করার মতো চরম উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করার প্রয়াস চালান।
সহিংসতা ও নাশকতা : ২৬ সেপ্টেম্বর খাগড়াাছড়ি জেলায় ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র ব্যানারে মহাসমাবেশের সময় উখ্যানু মারমার নেতৃত্বে এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা গুজবের প্রভাবে একটি সেনাবাহিনীর টহল দলের উপর হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এতে তিনজন সেনাসদস্য আহত হন। পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধের সময় ইউপিডিএফের গুলিতে একটি টমটম গাড়ির চালক আহত হন।
এছাড়া, আলুটিলা পুনর্বাসন এলাকায় একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। দিন গড়াতে খাগড়াছড়ি পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে বাঙালি সম্প্রদায়ের উপর অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে একটি মসজিদে হামলা এবং ১৬-১৭ জন বাঙালি আহত হন, যারা বর্তমানে খাগড়াাছড়ি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বরনির্ভর বাজারে বাঙালি ব্যবসায়ীদের অন্তত ১০টি দোকান লুটপাট ও ভাঙচুরের শিকার হয়, যার ফলে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
ইউপিডিএফের উদ্দেশ্য : ইউপিডিএফ কথিত ধর্ষণের এই ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অংশ হিসেবে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের একটি অংশকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা ও উস্কানিমূলক স্লোগান যেমন ‘পাহাড় থেকে সেনা হটাও’ প্রচার করে তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
প্রশাসনের পদক্ষেপ : পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে এরপরও জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবর্ষণ ও ইউপিডিএফের প্ররোচনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্যরা খাগড়াছড়ি কলেজগেট, পৌরসভা, মহাজন পাড়াা, চেঙ্গী স্কয়ার, স্বরনির্ভর, টেকনিক্যাল ও নারানখাইয়া এলাকায় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নাশকতার চেষ্টা করে।
খাগড়াছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিও লে. কর্ণেল কামরান কবীর উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে, সেখানে ইস্যু তৈরির বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এর নেপথ্যে বাইরের কোন শক্তি জড়িত রয়েছে কিনা তা তদন্ত না করে বলা সম্ভব নয়। আমরা নেপথ্যের কারন অনুসন্ধ্যান করছি।
সামরিক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোস্তফা কামাল বলেন, খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি মেয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও রাস্তা অবরোধের যে প্রতিক্রিয়া পাহাড়িরা দেখাচ্ছেন এর নেপথ্যে রয়েছে ভারতের ইন্ধন। স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালীর মধ্যে সম্পর্ক অস্থিতিশীল করার জন্য উস্কানিমূলক কার্যক্রম ইৎসাহিত করছে। ভারতের ইন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে পাহাড়িরা আইন হাতে তুলে নিয়ে বড় ধরনের বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে। অথচ দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন কোন অপরাধ ঘটার পর গুরুত্ব দিয়েই অপরাধীকে আইনের আওতায় আনছে বা আনার চেষ্টা করছে।
এদিকে, পাহাড়ে প্রায় দু’যুগের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র আন্দোলন চলার পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি। পার্বত্য শান্তি চুক্তির ৭২ ধারার মধ্যে ইতিমধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৫টি ধারা আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ৯টি ধারার বাস্তবায়ন চলমান আছে। কিন্তু শুধুমাত্র একটি শান্তি চুক্তি না মেনে জেএসএম মূল সহ পাহাড়ে চার সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ পার্বত্যাঞ্চলকে জুম্মুল্যান্ড করার পায়রাতা করছে। চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও খুন-খারাবি। স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের এই অংশকে দখল করার। এ কারণে দেশি-বিদেশী লবিস্টও তারা অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করেছে। সশস্ত্র গ্রুপের শীর্ষ নেতারা চাঁদার টাকায় বিলাস বহুল জীবনযাপন করেন। বিদেশেও বাড়ি আছে অনেকে। তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা এদেশে থাকেন না, বিদেশে পড়াশুনা করেন। আর এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের উস্কানি দেয় কতিপয় শিক্ষিত গ্রুপ।
সূত্র জানিয়েছে, গত ১৭ মে চট্রগ্রামের একটি পোশাক কারখানা থেকে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এর অর্ডাও করা ২০ হাজার ৩০০ পিস পোশাক (ইউনিফর্ম) উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা পাহাড়কে জুমল্যান্ড নামের নতুন একটা দেশ বানানোর পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষে তারা ১০ হাজার সদস্য বিশিষ্ট সশস্ত্র আর্মফোর্স বাহীনি ও ৪০ হাজার সাধারণ যোদ্ধা তৈরি করেছে। পাশের একটি দেশ তাতে সহায়তা করেছে। তারা ৪ ভাগে বিভক্ত ইউপিডিএফকে এক করতে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে তারা। বিনিময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের চাঁদার টাকার ভাগ পান তারা।
এদিকে চাঁদাবাজির পাশাপাশি পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো নারী নির্যাতনও করে। এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুললে হত্যা করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলের সীমান্তে মিয়ানমার ও মিজোরাম অবস্হিত। সীমান্তে প্রায় ১০১ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত। হাঁটা ছাড়া সেখানে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। পার্বত্য সীমান্তের ওপারে রয়েছে শান্তি চুক্তিবিরোধী উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের ৭টি আস্তানা। সেখান থেকে অবাধে আসছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। আর এসব মাদক ও অত্যাধুনিক অস্ত্র তারা ব্যবহার করছে এবং সেখান থেকে সারাদেশে উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসীদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে এলএমজি, এসএমজি/একে৪৭, ৭.৬২ মি.মি. রাইফেল, এম-১৬ রাইফেল, জি-৩ রাইফেল, ০.২২ রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, পিস্তল, মর্টার, দেশীয় পিস্তল, দেশীয় বন্দুক, হ্যান্ড গ্রেনেডসহ রকেট লাউঞ্চারও রয়েছে। একই সঙ্গে ইয়াবা, আইসসহ ভয়ঙ্কর সব মাদকও দেশে আসছে। ৩ পার্বত্য জেলায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ করেও উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা ওই সাত আস্তানায় গিয়ে নিরাপদে আশ্রয়ে থাকেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ