জেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫ ০১:০৬ পিএম
কালুরঘাট সেতুতে দুর্ঘটনা: বরখাস্ত ৪ রেলকর্মী, তদন্ত কমিটি গঠন
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে একাধিক যানবাহনের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত এবং ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই বছরের শিশুকন্যা আয়েশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালক তুষার। তবে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় লোকোমাস্টারসহ ৪ জন রেলকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্ঘটনার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন।
বরখাস্ত হওয়া কর্মীরা হলেন—চট্টগ্রাম হেডকোয়ার্টারের ট্রেন গার্ড সোহেল রানা, টি নম্বর–৫৩০–এর লোকোমাস্টার গোলাম রসুল, টি নম্বর–৭২৩–এর সহকারী লোকোমাস্টার আমিন উল্লাহ এবং অস্থায়ী গেটকিপার মাহবুব (টিএলআর)।
গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন-চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও)। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ডিএমই (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার–১ এবং বিভাগীয় চিকিৎসক (পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম)। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে প্রাথমিক তদন্তে লোকোমাস্টারের অবহেলাকেই প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালুরঘাট সেতুতে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানয়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সিগনাল না মেনে সেতুতে উঠে গেলে এসময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এরপর ট্রেনটি আরও একটি মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপ ভ্যানকে চাপা দেয়। ট্রেনের ধাক্কায় এসব যানবাহনগুলো দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়।
আহত পাঁচজনকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে আসিফ উদ্দিন বাপ্পী, আসমা আহমেদ ও অঞ্জু আরার পরিচয় নিশ্চিত করেছে চমেক ফাঁড়ি পুলিশ। তবে এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
জানালিহাট স্টেশনের দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন জানান, সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হওয়ার কারণে সব গাড়ি সেতু থেকে নামতে পারেনি। কিন্তু ট্রেনটি দ্রুতগতিতে সেতুর ওপর উঠে পড়ে। ওই সময় সেতুতে যানজটের কারণে আমরা লাল সিগন্যাল দিই, গার্ডও লাল পতাকা হাতে সংকেত দেন। কিন্তু ট্রেনচালক মানেননি।
তিনি আরও জানান, নিয়ম অনুযায়ী কোনো ট্রেনকে কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে অন্তত ১০০ গজ দূরে থেমে থাকতে হয় এবং লাইনম্যানের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই সেতু পার হতে হয়। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় ট্রেনচালক এই প্রটোকল অমান্য করে সংকেত না নিয়ে সেতুতে প্রবেশ করায় দুর্ঘটনার সংঘটিত হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ