নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫ ১১:৩৯ পিএম
জবি আন্দোলন নিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্ট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও তা ঘিরে উদ্ভূত উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ৯টার পর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।
পোস্টে তিনি লিখেন, “ভুল হলে তা থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”
মাহফুজ আলম জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি বিচার করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। তবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকেও তিনি জবি শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিক সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন।
তিনি বলেন, “গত পরশু রাতেই জবি থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল আন্দোলনের বিষয়টি। তখন আমি শিক্ষার্থীদের গতকাল রাত ৯টায় বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সকালেই আন্দোলনে নামেন এবং যমুনার কাছাকাছি পৌঁছে যান। এরপর থেকেই ভিসি স্যারের সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলাম।”
তিনটি আলোচ্য বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার পর তিনি ভিসি ও অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। সেখানে এক শিক্ষার্থী তাঁর দিকে বোতল নিক্ষেপ করেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি দায়িত্ববোধ থেকে শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে কথা বলতে শুরু করি। পূর্বনির্ধারিত টকিং পয়েন্ট অনুযায়ী, যদি পুলিশের বাড়াবাড়ি বা উসকানিমূলক কিছু হয়ে থাকে— সে জন্য ক্ষমা চেয়ে বিভাগীয় তদন্তের কথা বলতে গিয়েছিলাম। ঠিক তখনই এক শিক্ষার্থী বোতল ছুড়ে মারেন।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনার পেছনে কোনো সংগঠিত চক্রান্ত থাকতে পারে এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান বিষয়টি তদন্ত করে দেখার।
মাহফুজ আলম আরও জানান, ঘটনার পর হতাশ হয়ে তিনি ফিরে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি, তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমার হতাশা বা ক্ষোভে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
পরবর্তীতে তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনও করেন, যেখানে তিনি আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা, দাবি পূরণের রোডম্যাপ ও পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দেন। সেখানে জবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানান।
তিনি লেখেন, “জবির শিক্ষার্থীদের আবাসনসংক্রান্ত দাবি ন্যায্য। আমি আশাবাদী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো দ্রুত সমাধানে আসবে।”
পোস্টের শেষদিকে তিনি স্মরণ করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জবি শিক্ষার্থীদের অবদান ও শহিদদের কথা। তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলন আমাদের মাঝে একটি আত্মিক ফ্যাসিবাদবিরোধী বন্ধন তৈরি করেছে। এটি যেন কোনো গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে ভেঙে না পড়ে।”
তিনি আরও জানান, আন্দোলনকারীদের যেন জোর করে সরানো না হয় বা কোনো হামলার শিকার না হন— সে জন্য তিনি ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
“সবার শুভবোধ জাগ্রত হোক,” মন্তব্য করে পোস্টটি শেষ করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
ভোরের আকাশ//হ.র