দেশে আসছেন খালেদা জিয়া
এম. সাইফুল ইসলাম
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫ ০৯:২৯ এএম
উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায় নেতাকর্মীরা
চিকিৎসা শেষে চার মাস পর দেশের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ রোববার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তার। তবে, গতকাল শনিবার দলের যৌথসভা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন দলীয় চেযারপারসন। ফলে সময়সূচির পরিবর্তন হতে পারে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বড় পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান দেশে ফিরছেন। তারও নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছে বিএনপি। দলীয় প্রধান ও তার সফরসঙ্গীদের শুভেচ্ছা জানাতে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুত নিয়েছে বিএনপি। চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থার উন্নতির পর দলীয় চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার খবরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, চিকিৎসা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আবেগ ও উচ্ছ্বাস কাজ করছে। দলের নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানাতে এয়ারপোর্ট ও তার আশপাশে অবস্থান নেবেন। তবে, জনভোগান্তি পরিহার করে দলীয় নেতাকর্মীদের সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর থেকেই গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা জন্যে বিদেশে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে বিএনপি। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
চার মাস পর আগামীকাল সোমবার খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন। এ লক্ষ্যে আজ লন্ডনের স্থানীয় সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়মিত বিজি-২০২ ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। সেই হিসেবে আগামীকাল সকাল ৯টায় প্রথমে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা। এরপর একই ফ্লাইটে খালেদা জিয়া ঢাকায় ফিরবেন বলে জানানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার মহানগরের দুই অংশ ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভা করে বিএনপি। যার নেতৃত্ব দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভা শেষে মির্জা ফখরুল বিমান বাংলাদেশে নয়, কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আগামীকাল সোমবার দেশে ফিরবেন তিনি। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তারই দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হকও সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আপসহীন খালেদা জিয়া সবসময় গণতন্ত্রের জন্যে লড়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি নিয়ে দেশ ফেরা আমাদের জন্যে অনরকম আবেগের।
রাজধানীবাসীর চলাচলের যেন কষ্ট না সেটি মাথায় রাখার জন্যে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে আমরা শুভেচ্ছা জানানো। রাস্তায় যেন কোনো যানজট সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখবো। তিনি ফ্লাইটটি নামার আগে আ কিছু সময় পর পর্যন্ত বিমান বন্দরের এলিভেটেট সড়ক ব্যবহার করতে সবার কাছে অনুরোধ করেন।
এদিকে, যৌথসভার পর ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিেিত শুরু করেছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়েও তারা কথা বলেছেন।
বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরছেন এটি নেতাকর্মীদের কাছে ভিন্ন রকম আবেগের খবর। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তাকে চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে দেয়নি পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরছেন এতে দলের নেতাকর্মীর পাশাপাশি গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষের মাঝেও ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে। বিমানবন্দর ও আশপাশে লোকে লোকারণ্য হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তিনি। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ সঙ্গে থাকায় বাড়তি খুশির খবর বলেও জানান আমিনুল।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ থাকলে দেশের গণতন্ত্র সুস্থ থাকে। আলহামদুল্লাহ তিনি যতটুকু সুস্থ হয়ে ফিরছেন তাতে দেশে গণতন্ত্রকামীদের জন্যে বড় খুশির খবর। দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানাতে ছাত্রদলের পাশাপাশি দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ম্যাডাম কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সোমবার দেশে আসছেন। তবে সময় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজাকে প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও জানান শায়রুল কবির খান।
এর আগে শুক্রবার গণমাধ্যমকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চার মাস পরে আগামী ৫ মে (সোমবার) লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ম্যাডামের দেশে ফেরার ব্যাপারে কাতারের আমিরের কাছ থেকে যে অ্যাম্বুলেন্সটা তাকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য পেয়েছিলাম সেটা এখন একটু বিলম্বিত হচ্ছে টেকনিক্যাল কারণে। সেজন্য ম্যাডাম ঠিক করেছেন যে, ওইটা (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায় উনি বাংলাদেশ বিমানেই আসবেন। বাংলাদেশ বিমানে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছড়া লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি জানিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সব কিছু জানানো হয়েছে। এছাড়া জোবাইদা রহমানের নিরপত্তা নিশ্চিতে তিনি পুলিশের আইজিপিকে চিঠি লেখেন।
এদিকে, বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেট হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে সেখানেও বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল।
জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সিলেট হয়ে খালেদা জিয়ার ঢাকায় যাবেন। তাকে স্বাগত জানাতে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সিলেট বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার সিলেট হয়ে ঢাকা ফেরার বিষয়টি সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে দল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং সর্বস্তরের মানুষকে আগামী সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে বিমানবন্দরের সামনে উপস্থিত থাকতেও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা নির্দেশনা দিয়েছেন। খালেদা জিয়া সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরলেও এখানে কোনো সভা কিংবা সমাবেশে অংশ নেবেন না। বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটের সিলেটের যাত্রীদের নামিয়ে বিমানটি ঢাকার উদ্দেশে ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন।
এ সময় প্রায় ঘণ্টাখানেক খালেদা জিয়া সিলেটের বিমানবন্দরে অবস্থান করবেন। সেখানে অবস্থানকালে সিলেটে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী।
২০১৮ সালে বেগম খালেদা জিয়া কথিত দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি ছিলেন। করোনা মহামারির সময় বিগত পতিত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় শর্ত সাপেক্ষে ৬ মাস সাজা স্থগিত করে। পরে যার মেয়াদ বাড়ানো হয় কয়েক দফা। এর মাঝে তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে বিদেশ নিতে অনুমতির জন্যে আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেয়নি সরকার। এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধ যুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছিলেন, ৪ মে লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে রওনা দেয়ার কথা ছিল। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় এনে ফ্লাইটের গন্তব্যপথ পরিবর্তন করে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট করার প্রস্তাব দেয়। তবে অন্য যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে বেগম খালেদা জিয়া এই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। ফলে মানবিকতার আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি।
সরিয়ে দেওয়া হয়েছে খালেদা জিয়ার ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে : এদিকে, বিশেষ ফ্লাইট নিশ্চিত হওয়ার আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার কথা ছিল। ওই ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল এমন দুই কেবিন ক্রুকে শুক্রবার মধ্যরাতে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারা হলেন আল কুবরুন নাহার কসমিক ও মো. কামরুল ইসলাম বিপোন।
বিমান সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে আল কুবরুন নাহার কসমিক নিয়মিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার ফ্লাইট পরিচালনা করতেন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে সরকারি সুবিধা ভোগের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চাকরি জীবনে তিনি ১৮ বার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন। শাস্তি হিসেবে একাধিকবার গ্রাউন্ডেড হয়েছেন।
অপরদিকে, জুনিয়র পার্সার কামরুল ইসলাম বিপোন দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দলের নানা কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতি বছর ১৫ আগস্ট পালনের জন্য নিয়মিত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দেওয়া, শেখ কামালের জন্মদিনে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা এবং বিমানে শেখ রাসেল দিবস পালনের অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ