তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ০২:৩৭ এএম
বিদ্যুৎ ছাড়াই সার্ভার ঠাণ্ডা রাখবে নতুন কুলিং প্রযুক্তি
বিশ্বব্যাপী ডাটা সেন্টার ও শক্তিশালী কম্পিউটারগুলোর তাপ নিয়ন্ত্রণে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। ক্লাউড কম্পিউটিং ও বিগ ডাটা বিশ্লেষণের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কেন্দ্রগুলোতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এসব সিস্টেম ঠাণ্ডা রাখতেই ব্যবহার হচ্ছে মোট বিদ্যুৎ খরচের প্রায় ৪০ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে এই চাহিদা দ্বিগুণ হতে পারে।
এই সমস্যার সমাধানে অভিনব এক প্রযুক্তি এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ করতে সক্ষম এই নতুন কুলিং পদ্ধতির নাম ‘প্যাসিভ কুলিং’, যা অনুকরণ করে মানুষের ঘামের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে।
ঘাম ঝরার অনুকরণে কুলিং প্রযুক্তি
গবেষকদের উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ফাইবারযুক্ত পাতলা ঝিল্লি। ঝিল্লির অসংখ্য ক্ষুদ্র ছিদ্রের মাধ্যমে একটি বিশেষ তরল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে যন্ত্রের অতিরিক্ত তাপ অপসারণ করে। এতে বাড়তি বিদ্যুৎ খরচের প্রয়োজন পড়ে না। অর্থাৎ, এটি একেবারেই বিদ্যুৎবিহীন পরিবেশবান্ধব সমাধান।
গবেষকদের দাবি, এই প্রযুক্তি প্রতি বর্গসেন্টিমিটারে ৮০০ ওয়াট পর্যন্ত তাপ অপসারণ করতে সক্ষম, যা প্যাসিভ কুলিং প্রযুক্তিতে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দক্ষতা।
পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর উদ্ভাবন
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ও অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রেনকুন চেন জানান,
“এই পদ্ধতি প্রচলিত বায়ু বা তরলভিত্তিক কুলিংয়ের তুলনায় অধিক কার্যকর এবং অনেক কম শক্তি ব্যবহার করে। এটা ভবিষ্যতের টেকসই কুলিংয়ের অন্যতম পথ হতে পারে।”
গবেষণা সফলভাবে শেষ হওয়ার পর এখন উদ্ভাবক দল একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লক্ষ্য, বিশ্বব্যাপী ডাটা সেন্টার ও হাই-পারফরম্যান্স কম্পিউটারগুলোকে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে ঠাণ্ডা রাখা।
এই উদ্ভাবন যদি সফলভাবে বাজারে আসে, তাহলে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-নির্ভর জগতে বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভোরের আকাশ//হ.র