× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গণভোট প্রসঙ্গ

সমাধান কোন পথে

মাজাহারুল ইসলাম

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১৭ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্য এবং সাংবিধানিক সংকটের ফাঁদে রয়েছে জুলাই সনদ বাস্তাবায়ন প্রক্রিয়ার গণভোট-এমনটাই মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, গণভোট বিতর্কে অন্তর্বর্তী সরকার বিপাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থান। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করছে দলগুলো। রয়েছে সাংবিধানিক সংকটও। সবকিছু বিশ্লেষনে গণভোট সংকট উত্তরণে বাধা দলগুলোর মতানৈক্য। কেননা, সরকার যেটাই সিদ্ধান্ত দিবে, কোনো না কোনো দলের বিপক্ষে চলে যাবে।

এছাড়া গণঅভ্যুত্থানের ক্ষমতাবলে আদেশ জারি করা হলেও, তা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে করতে হবে। তবে বিএনপির দাবি, আদেশ নয়, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গণভোট চায়। গণভোটে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকতে হবে। যে দল যে সংস্কারে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, জয়ী হতে পারলে সেই অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করবে। কিন্তু সদ্য বিলুপ্ত ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে বলা নেই, আদেশ কে জারি করবে এবং গণভোট কখন? এ দুই সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে বলেছে কমিশন। সুপারিশে বলা হয়েছে, গণভোট হবে আদেশের ওপর।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জামায়াত ও এনসিপি দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি নন, আদেশ জারি করতে হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে। 

একাধিক উপদেষ্টা বলেছে, আদেশ জারি হবে আইনানুগভাবে। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সরকারকেও সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে। হঠকারী সিদ্ধান্তে যেকোনো একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ হতে পারে। তাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে। তাই সাত দিন সময় বেঁধে দিয়ে দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সমাধান চেয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু সেক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে দলগুলো। কারণ হিসেবে বিশ্লেষকদের পর্যালোচনায় উঠে আসে দলগুলোর নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে।

বিএনপি বলছে, রাষ্ট্রীয় কোনো বিষয় নিয়ে জামায়াত ডাকলে আমরা কেন যাব, তবে সরকার যদি আমন্ত্রণ জানায় তাহলে আমরা বসতে রাজি।

বিএনপি আরও বলছে, সমস্যার সৃষ্টি করেছে সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন। কারণ, সুপারিশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সনদের মিল নেই। বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট সনদে রাখার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। বিএনপি সরকারকে দায়ী করে বলেছে, গণভোট হলে নির্বাচনের দিনই হতে হবে। পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামপন্থি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে।

এনসিপিও বলছে, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনে হলেও তাদের আপত্তি নাই। তবে, ঐকমত্য না হওয়ায় নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে ফয়সালা গণভোটে হতে হবে। দলটির সিদ্ধান্ত, নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না, যা ঐকমত্য হয়েছে, বাকিটা ঠিক করবে জনগণ। জনগণ যদি বলে তাহলে সেগুলো বাস্তবায়িত হবে।

তবে গণভোট প্রসঙ্গ নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত রয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিএনপি বলছে, সংবিধান ও বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে দলটি। পক্ষান্তরে ৭২ সংবিধানিক ধারায় ফিরে যেতে চায় না জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামপন্থি দল। গণভোট নিয়ে দলগুলোর নেতারা রাজনৈতিক অঙ্গনে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন সেটি মোটেও কাম্য নয়-বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছে, গণতান্ত্রিক পন্থা পরিহার করে অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটছেন কেউ কেউ। প্রতিটি দলের নিজস্ব মৌলিক অধিকার রয়েছে, জুলাই সনদে এমন কিছু ধারা রয়েছে দলের নিজস্ব অধিকারকেও খর্ব করে। বর্তমান সংবিধানে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই। গণভোট করতে হলে সংবিধানের সেই বিধান পরিবর্তন করতে হবে। এই সংশোধনের বিষয়টি সংসদে আলোচনা করে জনগণের মতামত নিয়েই করতে হবে। কাজেই সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তনের একমাত্র স্থান হলো সংসদ। 

সংসদে প্রস্তাব পাস না করে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার এই সংবিধান মেনেই শপথ নিয়েছে, তাই সমাধানও সংবিধানের মধ্যেই খুঁজতে হবে, এর বাইরে নয়। কিছু কিছু বিষয়ে দলগুলোর দ্বিমত থাকায় নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই এমন পরিস্থিতিতে গণভোট ঘিরে সৃষ্টি রাজনৈতিক সংকট অন্তর্বর্তী সরকারকেই সমাধান করতে হবে। তবে সেটিও দেখার বিষয় কোন পথে সেই সমাধান হবে-ভাবছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষদের মতে, রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সরকারকেও সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে। সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে যে কোনো একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ হতে পারে। তাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে। তাই সরকারকে দ্রুত দলগুলোর সঙ্গে বসে একটা সমঝোতায় পৌঁছে নির্বাচনের দিতে যেতে হবে। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারের বেঁধে দেওয়া সাত দিন সময় শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। তবে এখন পর্যন্ত সমঝোতার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। দলগুলো একমত না হতে পারায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হতে পারে। এ জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, আদেশ জারি হবে আইনানুগভাবে। বিএনপি বলছে, আদেশ নয়, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গণভোট চায়। জামায়াত ও এনসিপির দাবি, আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি নন, আদেশ জারি করতে হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথও খুঁজছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে সংবিধান প্রণেতা ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার দলিল। বিগত ৫৩ বছর ধরে এই সংবিধানে নানা পরিবর্তন হয়েছে। এটি সংস্কার একটি সংবেদনশীল বিষয়। এই প্রক্রিয়াটি অবশ্যই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত।

ড. কামাল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধান পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে কোনো সংস্কারের সময় আমাদের মনে রাখতে হবে, সংবিধান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি, বাংলাদেশের সব মানুষের ত্যাগ ও একতাবদ্ধ আকাক্সক্ষার ফসল।

তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তিই এককভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার অধিকার রাখেন না। সংস্কারের প্রস্তাবগুলোতে অবশ্যই জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হতে হবে এবং সমাজের বর্তমান চাহিদার সঙ্গে আমাদের মৌলিক মূল্যবোধের সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

ড. কামাল বলেন, সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ এবং গণতন্ত্রহীনতার জন্য শুধু সংবিধানকে দায়ী করার প্রবণতা থেকে বের হতে হবে। বরং সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণতন্ত্র অনুশীলন সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে। বিগত সময়ে দেশের যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দলীয়করণের ফলে জনআকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলো সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে না পারলে গণতন্ত্র কখনোই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে না।

জামায়াতের আলোচনার আহ্বানকে ‘সঠিক পন্থা’ বলে মনে করছে না বিএনপি। দলটির অভিমত, সমস্যার সৃষ্টি করেছে সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন। কারণ, সুপারিশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সনদের মিল নেই। বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট সনদে রাখার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সরকার দলগুলোকে আলোচনার যে আহ্বান জানিয়েছে, তা তামাশা মাত্র। কাজেই সংবিধান ও বিদ্যমান আইন মেনে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন চায় বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ওপরতলার কিছু শিক্ষিত লোক যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ঘাড়ের ওপর গণভোট ও সনদের মতো বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, কয়েকটা দল বলছে, নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আর আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছেন। আমরাও মেনে নিয়েছি। তারা যতগুলো সংস্কার করতে চান, তাতে আমরা রাজি আছি। যেটাতে রাজি হব, সেটা বাস্তবায়িত হবে। যেটাতে রাজি হব না, সেটা পার্লামেন্টে যাবে। সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, এরপর তা পাস হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সংবিধানে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই। গণভোট করতে হলে সংবিধানের সেই বিধান পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তনের একমাত্র স্থান হলো সংসদ। সংসদে প্রস্তাব পাস না করে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই।

আমীর খসরু বলেন বলেন, বর্তমান সরকার এই সংবিধান মেনেই শপথ নিয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান সংবিধানই কার্যকর ও বলবৎ। তাহলে সমাধানও এই সংবিধানের মধ্যেই খুঁজতে হবে। এর বাইরে গিয়ে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধনের কারো অধিকার নেই।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় গণভোটের বিষয়টিতে মত দেওয়া ছিল বিএনপির উদারতা। জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে এই উদারতা দেখিয়েছিল বিএনপি, যেটা দেখানো ঠিক হয়নি।

বিএনপি গণভোটের প্রস্তাব দিলেও সেটি সাংবিধানিক বা নৈতিকভাবে সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। খসরু বলেন, রাজনৈতিক সহনশীলতা থেকে বিএনপি প্রস্তাবটি দিলেও এটি ভুল ছিল, কারণ এতে জটিলতা বেড়েছে। এখন কেন এত তাড়াহুড়ো করে গণভোটের কথা তোলা হচ্ছে? আইন ভঙ্গ করে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে, গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে এর পেছনে উদ্দেশ্য কী? যারা ঐকমত্য কমিশনের নামে নতুন দাবি তুলছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করে না।

বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের উচিত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র মানে নিয়মিত নির্বাচন এর বাইরের কোনো প্রক্রিয়া গণতন্ত্র নয়। ঢাকায় বসে যারা নিজেদের পছন্দমতো বাংলাদেশ বানাতে চায়, তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনের কোনো পার্থক্য নেই।

আমীর খসরু বলেন, ঐকমত্য কমিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টি করা, কোনো গোষ্ঠীর মত চাপিয়ে দেওয়া নয়। কিন্তু এখন ঐকমত্য না থাকলেও নতুন প্রস্তাব আনা হচ্ছে-এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলের প্রধান হতে পারবেন না-এমন প্রস্তাবে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। এমন বিধান তো মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। কারণ দলীয় প্রধান তৃণমূল নেতাদের ভোটে নির্বাচিত হন। এখন যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তাকে যদি দলের তৃণমূল নেতারা ভোট দিয়ে দলীয় প্রধান হিসাবে নির্বাচিত করেন, সেই অধিকার তাদের রয়েছে। এই অধিকার কমিশন কি খর্ব করতে পারে? এটা কি দেশের সংবিধান অ্যালাউ করে? এটি তো দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনের আগে গণভোটের বিরোধিতা করছে বিএনপি।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই জুলাই সনদের আদেশের উপর গণভোট দিতে হবে। দেশবাসী সকলেই গণভোটের ব্যাপারে একমত। তবে যারা সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায় যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। 

তাহের বলেন, একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এ পরিস্থিতির অবসান চাই।

এ প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে নির্বাচন হবে কি হবে না- এই প্রশ্ন করার পরিবেশ নেই। নির্বাচন হবেই। 

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সংস্কারের পথে হাঁটেনি, তাই সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। আমরা সংস্কারের পথে হেঁটে ঝামেলা বাড়িয়ে ফেলেছি।

নাগরিক ঐক্যের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ৮৬টা সংস্কার যা সমাধান হয়েছে, সেখানে পিআর নেই। সংস্কার কমিশনে পিআর নিয়ে আলোচনা হয়নি, সেখানে নতুনভাবে নিয়ে আসা হয়েছে গণভোট।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিবিপি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জমি কিনেছে দলিল একভাবে লিখে, আর টাকা-পয়সা নিয়ে পরে দলিল বদলে গেছে। জুলাই সনদেও এইভাবে জাতি ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আর এভাবে গণভোট করা মানে জোর করে ভোট দিতে বাধ্য করা, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।

গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান অক্ষত রাখতে হবে। এটাতে পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই। যদি কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, সেটা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদের মাধ্যমে হতে হবে।  

তিনি বলেন, ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবসে অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিবৃতিও দেয়নি। তার মানে তারা বাহাত্তরের সংবিধান ধারণ করে না। উল্টো এখন সংস্কারের নামে সংবিধান ধ্বংস করতে চাইছে।  

এনসিপি বলছে, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনে হলেও তাদের আপত্তি নাই। তবে তারা চায় জুলাই জাতীয় সনদের আদেশটা যেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেন। সেই আদেশের ভাষাটা যেনো আগেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো হয়, তার নিশ্চয়তা চায় দলটি।

জুলাই সনদের আদেশ প্রধান উপদেষ্টাকেই দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) বলে কিছু থাকবে না। সনদে কোনো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রাখার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আশা করব, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করেই আমরা নির্বাচনের দিকে যাব।

এ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫ জারি করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। সেভাবেই প্রস্তুতি চলছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তৈরি খসড়া আদেশ চূড়ান্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় না এলে, আদেশে কী কী থাকবে, সরকারই সিদ্ধান্ত দেবে।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়া উত্থাপন করা হতে পারে। গণভোট কখন হবে- সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আদেশ জারির মাধ্যমে গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গত ২৮ অক্টোবর সরকারকে সুপারিশ করে ঐকমত্য কমিশন। সদ্য বিলুপ্ত এ কমিশনের সুপারিশে বলা নেই, আদেশ কে জারি করবে এবং গণভোট কখন? এ দুই সিদ্ধান্ত তারা সরকারকে নিতে বলেছে।

সুপারিশে বলা হয়েছে, গণভোট হবে আদেশের ওপর। গণভোটে তা অনুমোদিত হলে, আগামী নির্বাচনে দ্বৈত ভূমিকার সংসদ গঠন হবে। সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত কন্সটিটুয়েন্ট ক্ষমতার ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ সনদ বাস্তবায়ন করবে।

কমিশনের তৈরি আদেশের প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার পরিষদ ২৭০ দিনে না পারলে, অন্তর্বর্তী সরকারের তৈরি সংবিধান সংশোধনের বিল পাস বলে গণ্য হবে। গণভোট হবে আদেশ এবং সংবিধান সংশোধনের বিলের ওপর।

দ্বিতীয় খসড়ায় বলা হয়েছে, গণভোট হবে আদেশ এবং তপশিলে যুক্ত সংস্কারের ৪৮টি প্রস্তাবের ওপর। ২৭০ দিনে গণভোটে অনুমোদিত তপশিল অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করবে পরিষদ। কমিশনের সুপারিশে সনদে সংস্কার প্রস্তাবে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) থাকলেও, তপশিলে তা নেই। অর্থাৎ, গণভোটে নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না। এ প্রসঙ্গে সরকারে থাকা একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, আদেশ জারি হবে আইনানুগভাবে।

এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সরকারের দেওয়া সময়সীমা রোববার শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্ত আসতে না পারলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’

শফিকুল আলম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আগাম কোনো কিছু বলা ঠিক হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি বলে, তাদের আরও দু-একদিন সময় লাগবে, তবে সরকার তা বিবেচনা করবে।

তিনি আরও বলেন, দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত থাকবেই। এরপরও আমাদের ঐকমত্যে পৌঁছে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা দ্রুতই হবে। কারণ, নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকুক, সরকার তা চায় না।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

নির্বাচনে আমরা থাকব নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায়: সিইসি

নির্বাচনে আমরা থাকব নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায়: সিইসি

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে

বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

জামায়াতসহ আট দলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতসহ আট দলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

 ময়মনসিংহে মহানগর জামায়াতের অবস্থান হোন্ডা মিছিল

ময়মনসিংহে মহানগর জামায়াতের অবস্থান হোন্ডা মিছিল

 প্রত্যেক শিশুর একটা না একটা প্রতিভা আছে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রত্যেক শিশুর একটা না একটা প্রতিভা আছে: প্রধান উপদেষ্টা

 দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ উপলক্ষে সাংবাদিক ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা

দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ উপলক্ষে সাংবাদিক ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা

 শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

 নির্বাচনে আমরা থাকব নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায়: সিইসি

নির্বাচনে আমরা থাকব নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায়: সিইসি

 দিনাজপুরে ব্রি-৫১ জাতের ধান কেটে উদ্বোধন: জেলা প্রশাসক

দিনাজপুরে ব্রি-৫১ জাতের ধান কেটে উদ্বোধন: জেলা প্রশাসক

 পেরুতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭

পেরুতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭

 পঞ্চগড়ে হিমেল হাওয়ার দাপট, তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রিতে

পঞ্চগড়ে হিমেল হাওয়ার দাপট, তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রিতে

 ‘ঢাকা লকডাউন’ ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তা বলয়

‘ঢাকা লকডাউন’ ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তা বলয়

 পদ্মা সেতুর সামনে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ, ট্রাকে আগুন

পদ্মা সেতুর সামনে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ, ট্রাকে আগুন

 ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে

ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে

 আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

 নিষিদ্ধ আ.লীগ ঠেকাতে ভোরেই মাঠে নেমেছে: জামায়াত

নিষিদ্ধ আ.লীগ ঠেকাতে ভোরেই মাঠে নেমেছে: জামায়াত

 রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু আজ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু আজ

 বরগুনায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পেট্রল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগ

বরগুনায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পেট্রল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগ

 ট্রাইব্যুনাল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা জারি

ট্রাইব্যুনাল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা জারি

 জার্মান নিরস্ত্র পুলিশ কাজ শুরু করেছে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে

জার্মান নিরস্ত্র পুলিশ কাজ শুরু করেছে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে

 হাসিনা-কামালের রায়ের দিন ঘোষণা আজ

হাসিনা-কামালের রায়ের দিন ঘোষণা আজ

 সরকার হার্ডলাইনে

সরকার হার্ডলাইনে

সংশ্লিষ্ট

নিষিদ্ধ আ.লীগ ঠেকাতে ভোরেই মাঠে নেমেছে: জামায়াত

নিষিদ্ধ আ.লীগ ঠেকাতে ভোরেই মাঠে নেমেছে: জামায়াত

জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, কী হবে আজ

জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, কী হবে আজ

আওয়ামী লীগের অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করবে এনসিপি

আওয়ামী লীগের অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করবে এনসিপি

জামায়াতের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠক

জামায়াতের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠক