ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:১৪ পিএম
শ্রীপুরে বনের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর বিটের অধীনে তেলিহাটি এলাকায় বনের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে তেলিহাটি ইউনিয়নের তালতলি মুরগীবাজার এলাকায় বনবিভাগের জমিতে স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায় বনবিভাগ। এসময় ৫৬টি ঘর উচ্ছেদের তালিকা করা হয়।
বনবিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ আগস্টের পর এক শ্রেনীর বনখেকো দালালচক্র ও বনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বন বিভাগের জমি দখল করে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে। এদের মধ্যে অনেকেই দোতলা ভবন, কেউ টিনশেড, আবার কেউ আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। কিছু প্রভাবশালী বনভূমি দখল করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। বনবিভাগ মাইকিং করে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাগিদ দিলেও দখলদাররা কেউ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। শনিবার সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় চারটি এস্কেভেটর দিয়ে উপজেলার মুরগী বাজার, সাইটালিয়া ও উত্তর পেলাইদ এলাকায় সম্প্রতি তৈরি ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনটি স্পটে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের চার একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। বনের জমিতে ৫ আগস্টের পর তৈরি করা ৫৬ বাড়িতে লাল কালিতে মার্ক করা হয়। এদের প্রত্যেককে বনভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল।কিন্ত কেউ কর্ণপাত করেনি।
উপজেলার মুরগী বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী শহিদ বলেন, ‘আমি একজন প্রতিবন্ধী। এটা জানার পরও তারা আমার ঘরটা ভেঙে দিয়েছে। এখন আমি কীভাবে আবার ঘরটা করবো? আমি তো নিস্ব হয়ে গেলাম।এখন বউ পোলাপাইন লইয়া কই থাকবো। এ ঘরটা মোছলেম চেয়ারম্যানের ছেলে তৈরি করে দিয়েছিল। আজ ভাইঙ্গা দিল।’
তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনিরুজ্জামান মানিক এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি সত্যিই মর্মাহত। আজ আমার ওয়ার্ডে বন বিভাগের লোকজন এ অভিযান চালিয়ে গরীব মানুষগুলার বাড়ি ভেঙে দিচ্ছে । আমি এখানকার মানুষের জন্য কোনো উপকার করতে পারছি না।’
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যারিস্টার সজীব আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও বন বিভাগের বিভিন্ন ইউনিট।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, বনের চার একর জমি অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছে। এখনে বনায়ন করা হবে।অবৈধভাবে বনের জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, আমাদের প্রতিটি পয়েন্টে ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, পুলিশ, বন বিভাগের সদস্য উপস্থিত থেকে অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযান চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ ঘন্টা আগে
আপডেট : ১০ ঘন্টা আগে
শ্রীপুরে বনের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর বিটের অধীনে তেলিহাটি এলাকায় বনের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে তেলিহাটি ইউনিয়নের তালতলি মুরগীবাজার এলাকায় বনবিভাগের জমিতে স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায় বনবিভাগ। এসময় ৫৬টি ঘর উচ্ছেদের তালিকা করা হয়।
বনবিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ আগস্টের পর এক শ্রেনীর বনখেকো দালালচক্র ও বনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বন বিভাগের জমি দখল করে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে। এদের মধ্যে অনেকেই দোতলা ভবন, কেউ টিনশেড, আবার কেউ আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। কিছু প্রভাবশালী বনভূমি দখল করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। বনবিভাগ মাইকিং করে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাগিদ দিলেও দখলদাররা কেউ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। শনিবার সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় চারটি এস্কেভেটর দিয়ে উপজেলার মুরগী বাজার, সাইটালিয়া ও উত্তর পেলাইদ এলাকায় সম্প্রতি তৈরি ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনটি স্পটে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের চার একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। বনের জমিতে ৫ আগস্টের পর তৈরি করা ৫৬ বাড়িতে লাল কালিতে মার্ক করা হয়। এদের প্রত্যেককে বনভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল।কিন্ত কেউ কর্ণপাত করেনি।
উপজেলার মুরগী বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী শহিদ বলেন, ‘আমি একজন প্রতিবন্ধী। এটা জানার পরও তারা আমার ঘরটা ভেঙে দিয়েছে। এখন আমি কীভাবে আবার ঘরটা করবো? আমি তো নিস্ব হয়ে গেলাম।এখন বউ পোলাপাইন লইয়া কই থাকবো। এ ঘরটা মোছলেম চেয়ারম্যানের ছেলে তৈরি করে দিয়েছিল। আজ ভাইঙ্গা দিল।’
তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনিরুজ্জামান মানিক এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি সত্যিই মর্মাহত। আজ আমার ওয়ার্ডে বন বিভাগের লোকজন এ অভিযান চালিয়ে গরীব মানুষগুলার বাড়ি ভেঙে দিচ্ছে । আমি এখানকার মানুষের জন্য কোনো উপকার করতে পারছি না।’
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যারিস্টার সজীব আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও বন বিভাগের বিভিন্ন ইউনিট।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, বনের চার একর জমি অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছে। এখনে বনায়ন করা হবে।অবৈধভাবে বনের জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, আমাদের প্রতিটি পয়েন্টে ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, পুলিশ, বন বিভাগের সদস্য উপস্থিত থেকে অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযান চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ