ছবি: ভোরের আকাশ
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে নিম্নমানের বীজের কারণে হাজারো কৃষক চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, বীজতলায় ধান গাছে অকালেই শীষ ধরায় মাঠে রোপণের আগেই শতাধিক মেট্রিক টন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার কৃষক পরিবার উৎপাদন বিপর্যয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে সাউথ এশিয়ান সীডস কোম্পানির ২২ নাম্বার জাতের ধানে বাম্পার ফলন হওয়ায় এবারও কৃষকরা একই কোম্পানির বীজ সংগ্রহ করেন। কিন্তু মাত্র ১৫–২০ দিন পর বীজতলা থেকে চারা তুলতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে অকালেই শীষ এসেছে। ফলে মাঠে রোপণের সুযোগ না পেয়েই জমি খালি পড়ে গেছে। নতুন করে বীজতলা তৈরির সময়ও আর হাতে নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, কিছু অসাধু ডিলার আসল কোম্পানির বস্তায় নিম্নমানের বীজ ভরে বাজারজাত করেছেন। তবে স্থানীয় ডিলার নাসির উদ্দিন সরদার দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন।
এবছর তিনি কোম্পানির কাছ থেকে ২৫ মেট্রিকটন বীজ কিনেছেন, এর মধ্যে মাত্র ১ মেট্রিক টনে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে সাউথ এশিয়ান সিডস এর ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, “কৃষকরাই আমাদের প্রাণ। সমস্যার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্ভবত জমি প্রস্তুত করতে দেরি হওয়ায় বীজে ফলন চলে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের ক্ষতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্র দাস বলেন, “কৃষকদের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের ক্ষতি সত্যিই অপূরণীয়। ডিলারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। যদি তা না হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হবে।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, এটি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং পুরো এলাকার কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
গাজীপুরের শ্রীপুরে ৬ দফা দাবিতে কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হেল্থ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন শ্রীপুরের ব্যানারে কর্ম বিরতি পালন করে শ্রীপুরে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা। শনিবার সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মবিরতি পালিত হয়।শ্রীপুর উপজেলা হেল্থ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আমীরুজ্জামান জানান, বেতন বৈষম্য নিরসনে ছয় দফা দাবিতে নিয়োগবিধি সংশোধন, শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (বিজ্ঞান)-সংযোজন, ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সাভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান, পদোন্নতি ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড প্রদান। তিনি আরো জানান স্বাস্থ্য সহকারীরা দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।শ্রীপুর উপজেলা হেল্থ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম শেখ আরো জানান, বর্তমানে টিসিভি ক্যাম্পেইন, নিয়মিত ইপিআই কার্যক্রম সহ যাবতীয় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমাদের দাবি-দাওয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সরকার আমাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছে। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব শিশুদেরকে ০ থেকে ১৮ মাসের শিশু, কিশোরী, গর্ববর্তী মহিলা ও করোনা কালীন সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার টিকাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তারপরও সরকার আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। তাই আমরা সরকারের কাছে আহব্বান জানাই, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের বৈষম্য দূর করুন।শ্রীপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শেখের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেল্থ এ্যাসিস্ট্যান্ট শ্রীপুর উপজেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. কবির হোসেন, এস এম শাহিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রুহুল আমিন, সম্মানিত সদস্য মোহাম্মদ শামীম সহ উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুরে কর্মরত সকল স্বাস্থ্য সহকারীবৃন্দ।ভোরের আকাশ/জাআ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অতিরিক্ত মদ্যপানে অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু'জনের মৃত্যু হয়েছে।শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।মৃতরা হলেন- বিজয়নগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের সৌরভ দাস (১৭) ও শ্রীনিবাস মালাকার (৬৫)।বিজয়নগর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে সৌরভ ও শ্রীনিবাস অতিরিক্ত মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে যায়।পরে সৌরভ দাসকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।এছাড়া একই সময়ে নিজ বাড়িতে মারা যান শ্রীনিবাস।খবর পেয়ে মৃতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।ভোরের আকাশ/জাআ
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আদিবাসিদের ঐতিহ্যবাহী মিলন মেলায় যোগ দিতে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁ সহ দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সকল বয়সের নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে।শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ আসতে শুরু করে মেলায়।শারদীয় দূর্গা পুজার একদিন পরে উপজেলার গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলন মেলায় উৎসবে মেতে উঠে সকল বয়সের আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা।মেলায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে জুড়ানো বর্ণাঢ্য আয়োজনে সকল ধরনের দোকানপাট, খেলনা সামগ্রী, দোলনা সহ উপভোগ করার মতো জনসাধারণের উপচে পড়া ভিড় জমায়।বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব মুখর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এই মিলন মেলা। যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলাটি অনেকের কাছে বাসিয়া হাটি নামে পরিচিত।প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নিজপাড়া, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের আয়োজনে এবং গোলাপগঞ্জ দূর্গাপুজা উদযাপন কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ মনজুরুল ইসলাম।আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহবায়ক যোশেফ হেমরম এর সভাপতিত্বে, বীরগঞ্জ থানা আদিবাসী সমাজ কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি কমলাকান্ত ও সহ সেক্রেটারি বিশ্বনাথ মরমু এর সঞ্চালনায় মিলন মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান চৌধুরী (শাহীন), নিজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস, দিনাজপুর কালিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক রবি মাডি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক মনোজ কুমার রায়সহ আরো অনেকে।এই মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে একটি গুজব দেখা যায়। এখানে নাকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোনো পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্ত বাস্তবে এর সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি।এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শীতল মার্ডি বলেন, পূর্ব পুরুষেরা এই মেলা শুরু করে। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটি সঠিকভাবে বলা যাবে না। আনুমানিক কয়েক শত বছর পূর্ব থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এই মেলাটি আমাদের পূর্বপুরুষ বাপ-দাদার কাছ থেকে শুনেছি। তবে বিয়ের বিষয়টি আমি এই মেলায় হতে দেখিনি। কেউ মেলায় কাউকে পছন্দ করে পরে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করতেই পারে।এই দিনটি ঘিরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সব বয়সী নারী-পুরুষেরা নানা রুপে ভিন্ন ভিন্ন সাজে মেলায় আসেন ঐতিহ্যবাহী এই মেলা উপভোগ করত।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নিয়োগবিধি সংশোধন, ইন সার্ভিস ট্রেনিং এবং ১৪তম গ্রেডে আপগ্রেডেশনসহ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।এজন্য কাপাসিয়ায় টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।বাংলাদেশ হেল্থ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন, কাপাসিয়া শাখার আয়োজনে বুধবার (১ অক্টোবর ২০২৫) সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি শুরু হয়।সংগঠনের সভাপতি আরিফ হোসেন সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে কর্মবিরতিতে অংশ নেন শতাধিক স্বাস্থ্য সহকারী।এ সময় বক্তব্য রাখেন মো. উসমান গণী, মোমতাজ উদ্দিন আসাদ, তানিয়া, আজমল হুদা মিঠু, বেলায়েত হোসেন, আব্দুস সামাদ, চিত্তরঞ্জন দাস, শাহানাজ পারভীন, খাদিজা আক্তার, শিপন সরকার, রবি উজ্জামান রাজীব, ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ।বক্তারা অভিযোগ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন।বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি।তাই বাধ্য হয়ে তারা কর্মবিরতিতে গেছেন।স্বাস্থ্য সহকারী বেলায়েত হোসেন বলেন, “আমাদের ন্যায্য দাবি বহুদিন ধরে উপেক্ষিত হয়েছে।সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।”আজমল হুদা মিঠু জানান, আমাদের এ টিকা প্রদান করা কাজটি সম্পন্ন টেকনিক্যালধর্মী হলেও আমরা টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত।তাছাড়া আমরা দীর্ঘদিন থেকে টেকনিক্যাল পদমর্যাদার দাবি করে এলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ বাস্তবায়ন না করায় স্বাস্থ্য সহকারীরা পদমর্যাদাসহ সরকারের সব কর্মচারী থেকে চরম বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।তানিয়া আক্তার জানান, আমরা বার বার শুধু কর্তৃপক্ষের আশার বাণী শুনে যাচ্ছি।এ বার আর আশার বাণীতে বিশ্বাসী নয়, বাস্তবায়ন চাই।আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার পর্যন্ত একজন্য স্বাস্থ্য সহাকারীও কর্মস্থলে ফিরব না। স্বাস্থ্যকর্মীদের এ কর্মবিরতির কারণে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।ভোরের আকাশ/জাআ