অর্থনীতি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫ ১১:৪২ পিএম
রিজার্ভে স্বস্তি: আইএমএফের কিস্তির অর্থে ছাড়াল ২৭ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশ আবারও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তির জায়গায় ফিরেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির ১৩০ কোটি ডলারের ঋণ একসঙ্গে পাওয়ার ফলে মঙ্গলবার (২৪ জুন) রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, দিন শেষে গ্রোস রিজার্ভ এই পরিমাণে পৌঁছেছে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম-৬) অনুযায়ী, এই রিজার্ভের পরিমাণ ২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে বর্তমানে ব্যয়যোগ্য বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।
সূত্র জানায়, ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার হিসেবে তিন মাসেরও বেশি সময় আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে এক দেশকে নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয় যদি তার রিজার্ভ কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম হয়।
চলতি মাসের শুরুতে (৪ জুন) গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার এবং ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়নের ঘরে। এখন তা কিছুটা বেড়ে স্বস্তির জায়গায় এসেছে।
সোমবার রাতে ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড বৈঠকে বসে। বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদিত হয়। এরপরই একসঙ্গে ১৩০ কোটি ডলারের ঋণ ছাড় করা হয়।
২০২২ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ প্রথম আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার আবেদন করে। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি এই ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এর আওতায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। বাকি ২৩৯ কোটি ডলারের মধ্যে এই দুটি কিস্তি ছাড় হওয়ায় এখন বাকি রয়েছে ১২৯ কোটি ডলার, যা পর্যায়ক্রমে আরও দুটি কিস্তিতে দেওয়া হবে।
এই ঋণ কর্মসূচির আওতায় তিনটি ধাপ রয়েছে—
এর মধ্যে আরএসএফ হলো আইএমএফের নতুন একটি তহবিল, যেখানে থেকে বাংলাদেশ প্রথম এশিয়ান দেশ হিসেবে ঋণ পেয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু এরপর কোভিড-পরবর্তী আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রিজার্ভ ক্রমশ কমতে থাকে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি শুরু করে, যা রিজার্ভে আরও চাপ তৈরি করে।
তৎকালীন সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে আইএমএফ থেকে ঋণ সহায়তা নেয়। পরবর্তীতে নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখা হয় এবং বিকল্প উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহের চেষ্টা চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করেছে।
ভোরের আকাশ//হ.র