বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৫:১৮ এএম
সোহাগ হত্যায় ক্ষোভে উত্তাল দেশ, রাজনৈতিক এজেন্ডা থেকে দূরে থাকার আহ্বান সালমান মুক্তাদিরের
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্যে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ (৩৯) হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। দিনদুপুরে নির্মম এই হত্যাকাণ্ড এবং ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতবাক প্রতিক্রিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে প্রতিবাদের ঝড়, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকারাও।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সামাজিক আবেগকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন অভিনেতা ও মডেল সালমান মুক্তাদির। শনিবার নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “যে ধর্ষণ আর হত্যাকাণ্ড আপনাকে কষ্ট দেয়, সেগুলো পাশের রাজনৈতিক লোকগুলোর কাছে আনন্দের খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। কেউ শুধু জাতীয় সংকটে আপনার পক্ষে কথা বলছে বলে ভাববেন না যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে। তারা সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের স্বার্থে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক, তারা কখনো রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে কাজ করে না। যারা নিঃস্বার্থভাবে পাশে থেকেছে, কেউ প্রাণ দিয়েছে, কেউ হাত-পা হারিয়েছে—আমাদের উচিত তাদের চিনে রাখা এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, দলমত নির্বিশেষে।”
সতর্ক করে সালমান লেখেন, “চারপাশ চিনুন। আপনার আবেগকে যারা রাজনৈতিক হাতিয়ার বানাতে চায়, তাদের ফাঁদে পা দেবেন না। তারা চায় আপনি যেন তাদের ‘ত্রাণকর্তা’ ভাবেন, অথচ মানবতা ও সহমর্মিতা যেন কোনো দলের প্রচারণার পণ্য না হয়ে যায়।”
সোহাগ হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, “এই ভয়ংকর ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লেগেছে প্রায় দুই দিন। অথচ দেশে এত ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এত সংগঠন থাকার পরও শুরুতে কেউ মুখ খোলেনি। বিএনপি, এনসিপি বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—কেউ কোনো অবস্থান নেয়নি। কিন্তু সাধারণ তরুণরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য দিয়ে সক্রিয় হয়েছে।”
সালমান মুক্তাদিরের ভাষায়, “সব অপরাধী রাজনীতিবিদ নয়, আবার সব রাজনৈতিক দলও নির্দোষ নয়। আমরা যদি শুধুমাত্র একটি দলের বিরুদ্ধে দাঁড়াই, তাহলে সেটা পক্ষপাত হয়। আমাদের উচিত হচ্ছে অপরাধ এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে এককথায় দৃঢ় অবস্থান নেওয়া—দল, মত নির্বিশেষে।”
তার এই স্ট্যাটাস ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই একে সময়োপযোগী ও সাহসী মন্তব্য হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, এ ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক দায় এড়ানোর কৌশলও হতে পারে।
তবে অধিকাংশের একমত, সোহাগ হত্যার মতো নৃশংসতা যেন আর না ঘটে এবং অপরাধীরা যে দলেই থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
কালের সমাজ//হ.র