মিশরের কাছে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বিক্রির অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র
মিশরের কাছে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সম্ভাব্য অস্ত্রচুক্তি দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পেন্টাগনের অধীনস্থ ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি (DSCA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বিক্রয় চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সহায়ক হবে।
চুক্তির আওতায় মিশর পাবে ‘NASAMS’ (National Advanced Surface-to-Air Missile System) নামের একটি আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত ও প্রতিহত করতে সক্ষম।
বিক্রয়ের প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৪টি AN/MPQ-64 Sentinel রাডার, শত শত সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, গাইডেন্স সিস্টেম, লজিস্টিক সহায়তা এবং সামরিক প্রশিক্ষণ। এসব সরঞ্জাম তৈরি ও সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান RTX Corporation।
চুক্তিটি কার্যকর হলে প্রায় ২৬ জন মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা এবং ৩৪ জন বেসরকারি ঠিকাদার মিশরে গিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেবেন।
এদিকে, এই চুক্তিকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও সামনে এসেছে। সম্প্রতি মিশর চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করছে। চলতি বছরের এপ্রিলে দেশ দুটির মধ্যে ‘Eagles of Civilization 2025’ নামে প্রথম যৌথ বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মিশর বলছে, এটি চীনের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র-মিশর এই অস্ত্র বিক্রয় চুক্তিটি মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কংগ্রেস যদি কোনো আপত্তি না তোলে, তাহলে এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।
তথ্যসূত্র: আলজাজিরা
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে দায়ী করেছেন গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার জন্য। তাঁর অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবেই চুক্তিতে যেতে চায়নি এবং ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি পাওয়ার পর কী হবে, সেই আতঙ্কেই পিছিয়ে গেছে।শুক্রবার (২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমরা এখন চূড়ান্ত ধাপে জিম্মি মুক্তির অপেক্ষায় আছি। আর হামাস জানে, সবশেষ বন্দিরা ছাড়া হলে এরপর কী হতে পারে। সেই কারণেই তারা চুক্তি চায় না।”ট্রাম্প আরও বলেন, “হামাসকে এখন খুঁজে খুঁজে বের করা হবে। তারা আসলে কোনো সমঝোতায় আগ্রহী নয়। আমি মনে করি, তারা মরতে চায়। আর এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়।”ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল এখনই যুদ্ধ পুরোপুরি থামাতে আগ্রহী নয়। বরং, তারা স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে কেবল ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্ত করতে চায়।এই অবস্থানের পেছনে মার্কিন প্রশাসনের যুক্তি তুলে ধরেছেন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। তিনি বলেন, হামাসের অনাগ্রহের কারণে ওয়াশিংটন আলোচনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা কমিয়ে দিয়েছে।ইসরাইলও জানিয়েছে, তারা কাতার থেকে তাদের আলোচক দল ফিরিয়ে নিয়েছে। উল্লেখ্য, গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল কাতার। আলোচনা অনুযায়ী, প্রতিদিন ১০ জন করে ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।হামাসের দাবি, তারা মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশরের সহায়তায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে গেছে। সংগঠনটি বলেছে, তাদের অবস্থান ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ ছিল, যা মধ্যস্থতাকারী দুই দেশও স্বীকার করেছে।তবে ইসরাইলের অবস্থান বরাবরই ছিল ভিন্ন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, জিম্মিরা মুক্তি পাওয়ার পর তারা আবারও গাজায় হামলা চালাবে এবং ধাপে ধাপে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দেবে। এমনকি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ বলেছেন, যুদ্ধবিরতির সময় হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি আটকশিবিরে পাঠানো হবে—যাতে পরবর্তীতে তাদের সম্পূর্ণভাবে গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়।চলতি মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও জানান, যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও গাজায় তাদের ‘মিশন’ এখনো শেষ হয়নি।ভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী সংকট নিরসনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি সমর্থন জানাল রাশিয়া। মস্কো বলছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে এই স্বীকৃতি একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “রাশিয়া শুরু থেকেই দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে রয়েছে। ১৯৮৮ সালেই আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছি।”তিনি আরও জানান, “এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান তখনই সম্ভব, যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হবে।”রাশিয়ার এই অবস্থান এমন সময় এলো, যখন ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।এদিকে যুক্তরাজ্যেও বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে। দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ৯টি রাজনৈতিক দলের ২২০ জন এমপি। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অধিকাংশই লেবার পার্টির সদস্য এবং এটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি।চিঠিতে এমপিরা উল্লেখ করেন, “যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি বিশ্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথকে সুগম করবে।”বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই নতুন তরঙ্গ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে সময়ই বলে দেবে, এই স্বীকৃতিগুলো দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কোনো টেকসই সমাধান বয়ে আনতে পারে কি না।ভোরের আকাশ//হ.র
ইসলামাবাদ পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা এবং সিনেটের বিরোধীদলীয় নেতা শিবলি ফারাজের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে লাহোরের একটি আদালত। একই মামলায় পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তলব করা হয়েছে।২০২৩ সালের মার্চে তোশাখানা মামলার শুনানিতে অনুপস্থিত থাকা ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে ইসলামাবাদ পুলিশ যখন লাহোরের জামান পার্কে যায়, তখন পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ইমরান খান, শিবলি ফারাজ ও প্রায় ১৫০ জন পিটিআই কর্মী এ সময় পুলিশকে বাধা দেন, হেনস্তা করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।ঘটনার পর ইসলামাবাদ সেক্রেটারিয়েট থানার ওসি নাদিম তাহির বাদী হয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেন। মামলার শুনানি গতকাল শুক্রবার লাহোরের বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রফিকের আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি শিবলি ফারাজের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এবং আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, যেন বর্তমানে কারাবন্দি ইমরান খানকে আগামী ৩০ জুলাই আদালতে হাজির করা হয়।ঘটনার দিন শিবলি ফারাজ পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, ইমরান খান বাসায় নেই। তবে পরে দেখা যায়, সেদিনই নিজ বাসা থেকে ইমরান খান সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে পুলিশ অভিযোগ করে, শিবলি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আইন প্রয়োগকারীদের কাজে বাধা দিয়েছেন।এদিকে ৯ মে’র সহিংসতা-সংক্রান্ত মামলায় লাহোর ও সারগোধার সন্ত্রাসবিরোধী আদালত ইতোমধ্যেই একাধিক পিটিআই নেতাকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছে। অন্যদিকে, ‘ফাইনাল কল’ আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে ইসলামাবাদের একটি আদালত গত বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ১৩ কর্মীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।তথ্যসূত্র: দ্য ডনভোরের আকাশ//হ.র
তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাকের বিরুদ্ধে দেশটিকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন তুর্কি রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম। এমনকি ক্ষমতাসীন দল থেকে শুরু করে বিরোধীপক্ষ—সব পক্ষই এই মার্কিন কূটনীতিকের কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।গত মে মাসে রাষ্ট্রদূত হিসেবে আঙ্কারায় পৌঁছান টম বারাক। তখন তার আগমনকে তুর্কি মহলে ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হয়েছিল। কারণ, তিনি নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তার পূর্বপুরুষদের শেকড় এই তুরস্কেই। আঙ্কারায় প্রথম ভাষণে বারাক বলেছিলেন, “আমি মনে করি এটি আমার জীবনের একটি বিশেষ দিন। এই ভূমির প্রতিধ্বনি আমি অনুভব করছি, এখান থেকেই আমার পূর্বপুরুষরা এসেছেন।”তবে দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। তুরস্কের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আগত রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে টম বারাকই সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং তিনি শুধু তুরস্কেই সীমাবদ্ধ নন—তার কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে সিরিয়া ও লেবানন পর্যন্ত।বিশেষত সিরিয়ায় একটি সামরিক গোষ্ঠীকে সংগঠিত করে ‘আন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ আহমেদ আল শারার অধীনে একত্রিত করার প্রচেষ্টা তুর্কি মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।তুর্কি সরকার আশা করছিল, বারাক হয়তো তুরস্কের বহু প্রতীক্ষিত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরবেন। কিন্তু জনমনে তার কার্যকলাপ নিয়ে তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ভাবমূর্তি।দেশটির সংবাদপত্র ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রদূত বারাক ‘তুরস্ক ভাঙার’ একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় যুক্ত। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, এই অভিযোগ শুধু সরকারি মহলেই সীমাবদ্ধ নয়; বারাকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তুরস্কের বিরোধীরাও।বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অভিযোগ কেবল কূটনৈতিক অস্থিরতাই নয়, বরং তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপরও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।ভোরের আকাশ//হ.র