× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অতিরিক্ত লবণ খেলে যা হয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫ ০৯:২৪ পিএম

অতিরিক্ত লবণ খেলে যা হয়

অতিরিক্ত লবণ খেলে যা হয়

খাবারের সঠিক স্বাদ এনে দিতে লবণ ছাড়া যেন চলেই না। কিন্তু এই লবণ ব্যবহারের সঠিক মাত্রা জানতে হবে। অতিরিক্ত লবণ ব্যবহারে শুধু খাবারের স্বাদই নষ্ট হয় না, এটি শরীরের জন্যও ক্ষতিকর। বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তাদের সতর্ক থাকা উচিত।

অনেকেই আছে খাবার প্লেটে কাঁচা লবণ নিয়ে বসেন। ভাত খাওয়ার সময়ে লবণ না নিলে খাবারের স্বাদই নাকি পাওয়া না। চিকিৎসকরা কাঁচা লবণ খেতে যতই নিষেধ করুক না কেন, তাদের প্লেটে লবণ থাকবেই। শুধু কাঁচা লবণই নয়, নোনতা খেতেও অনেকের কাছে খুবই ভালো লাগে।

বিকেল হলেই ভাজাপোড়া, চপ, শিঙাড়া, সমুচা, পাকোড়া খেতে মন চায় অনেকেরই। এই যে লবণ বা নোনতা খাওয়ার এত ইচ্ছা, এত দিন মনে করা হতো, শরীরে পানি ও খনিজ লবণের ঘাটতি হলেই বুঝি লবণ খাওয়ার ইচ্ছা হয়। কিন্তু তা নয়, এর নেপথ্যের কারণ ভিন্ন।

কিন্তু ‘সল্ট ক্রেভিং’-এর আসল কারণ কী, সে বিষয়ে এখনো গবেষণা হচ্ছে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্য বলছে, লবণ খাওয়ার ইচ্ছার একটি কারণ হলো হরমোনের গোলমাল। অ্যাল্ডোস্টেরন নামক একটি হরমোন রয়েছে, যেটির তারতম্য হলে লবণ খাওয়ার অদম্য ইচ্ছা জাগে। অ্যাল্ডোস্টেরন এমন একটি স্টেরয়েড হরমোন, যা অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে বের হয়।

এই হরমোনটি শরীরে রক্তচাপ ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। এর আরো একটি কাজ হলো শরীরের সোডিয়াম শোষণে সাহায্য করা এবং অতিরিক্ত পটাশিয়াম প্রস্রাবের সঙ্গে বের করে দেওয়া। এই হরমোনের তারতম্য হলে রক্তচাপ বাড়ে, শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রাও বাড়ে। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে কিডনির অসুখও। তবে হরমোনের গন্ডগোল ছাড়াও লবণ বা নোনতা খাবার খাওয়ার ইচ্ছার আরো কিছু কারণ রয়েছে।

যেমন, কম ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা থাকলে ‘সল্ট ক্রেভিং’ বাড়তে পারে। যারা প্রচণ্ড ঘামেন, তাদের নোনতা খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে। প্রচণ্ড মানসিক চাপ বা উদ্বেগ থেকেও নোনতা খাবার খাওয়ার সাধ জাগে।

আবার কিছু রোগ আছে, যা থেকেও এমন ইচ্ছা হয়। তার মধ্যে একটি হলো ‘বার্টার সিন্ড্রোম’। এটি জিনগত রোগের রোগীদের শরীর থেকে সোডিয়াম দ্রুত বেরিয়ে যায়, ফলে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের তারতম্য দেখা দেয়। এই সিন্ড্রোম থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়, কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা বেশি হয়, রক্তচাপ যখন তখন কমে যেতে পারে।

আবার ‘সিস্টিক ফাইব্রোসিস’ নামক রোগের ক্ষেত্রেও লবণ বেশি খাওয়ার ইচ্ছা হয়। এই রোগে ফুসফুস ও বিপাকক্রিয়া পুরোপুরি নষ্ট হতে থাকে।

স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপরেও খারাপ প্রভাব ফেলে কাঁচা লবণ। রান্না করা খাবারে লবণ ছিটিয়ে খেলে ক্ষতি বেশি। ফলে শরীরে রক্তচাপ বাড়ে। কম লবণও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও থাকে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক দুই চা-চামচ লবণ খাওয়া দরকার।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার পর শরীরে কী প্রভাব পড়ে তার কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো-

জল ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি: আপনি খেয়াল করে থাকবেন যে, নোনতা খাবার খাওয়ার পর মাঝে মাঝে আপনি ফুলে ওঠা বা অস্থির বোধ করেন। এটি ঘটে কারণ আপনার শরীরে নির্দিষ্ট সোডিয়াম থেকে পানির অনুপাত বজায় রাখার চেষ্টা করে। আমরা যখন অতিরিক্ত লবণ খাই, তখন কিডনি অতিরিক্ত জল ধরে রাখে। এর ফলে হাত-পা ফুলে যেতে পারে এবং অস্বস্তি বোধ হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ: লবণ সমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্তনালী এবং ধমনীতে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। এটি অস্থায়ীভাবে রক্তচাপকে বাড়িয়ে তোলে। তবে, প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের রক্তচাপের মাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টি টের পায় না, কারণ এটি জেনেটিক্স এবং হরমোনগুলোর মতো উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়। প্রবীণ লোকদের নোনতা খাবার খাওয়ার পর রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকে।

তৃষ্ণা বাড়ায়: নোনতা খাবার খাওয়ার পর আপনি বেশি পানি পান করার তাগিদ পেতে পারেন। এটি আপনার দেহ সোডিয়াম ও পানির অনুপাতের ভারসাম্য রক্ষার অন্য উপায়। খুব বেশি তরল পান করাও উচিত নয়। অন্যদিকে কম পানি পান নিরাপদ স্তরের বাইরে শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে, ফলে হাইপারনেট্রেমিয়া নামের একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়।

কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা: যদি আপনি খুব বেশি লবণ খান তাহলে এটি দীর্ঘমেয়াদে হার্টের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। রক্তের পরিমাণ বাড়ার ফলে রক্তনালীর উপর চাপ বাড়তে পারে, যার অর্থ আপনার হার্টকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এটি উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

বেশি লবণ খেয়ে থাকলে কী করবেন-

লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকলেও মাঝে মাঝে কোনো কারণে বেশি লবণ খাওয়া হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অনেকেই আছেন যারা পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ খান। এটি এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যদি বেশি লবণ খেয়ে থাকেন তাহলে এটি থেকে মুক্তির কিছু উপায় রয়েছে। সেগুলো হলো-

বেশি পরিমাণে পানি পান করা: পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করতে সহায়তা করে। নোনতা খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান কিডনি থেকে সোডিয়াম অপসারণ করতে সহায়তা করে এবং ফোলাভাব থেকে মুক্তি দেয়।

ব্যায়াম: বেশি পরিমাণে লবণ খেয়ে ফেললে একটু বেশি পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে। এমন ব্যায়াম করুন যা শরীরে বেশি প্রভাব ফেলে এবং ঘাম হয়। ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম শরীর থেকে বের হয়।

একটি কলা খাওয়া: দেহে সোডিয়ামের প্রভাব হ্রাস করার জন্য পটাসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, সাদা মটরশুঁটি, শাকসবজি শরীরে সোডিয়ামের নেতিবাচক প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।

ভোরের আকাশ/এসআই

  • শেয়ার করুন-
 আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনা: আসিফ মাহমুদ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনা: আসিফ মাহমুদ

সংশ্লিষ্ট

অতিরিক্ত লবণ খেলে যা হয়

অতিরিক্ত লবণ খেলে যা হয়

গরমে নিজেকে সতেজ রাখার উপায়

গরমে নিজেকে সতেজ রাখার উপায়

কাঁচা কাঁঠাল কেন খাবেন

কাঁচা কাঁঠাল কেন খাবেন

খাওয়ার পর পেট ফুলে যায়? জেনে নিন কারণ

খাওয়ার পর পেট ফুলে যায়? জেনে নিন কারণ