নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫ ১১:৪৪ পিএম
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে হাঁটার চেয়েও ধীর গাড়ি, ঈদযাত্রায় আনন্দ হারাচ্ছেন যাত্রীরা
ঈদের আগে ঢাকা ছাড়ার প্রবল চাপে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দিন পেরিয়ে রাত নামলেও এই পথে ঈদযাত্রীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তরা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট, যেখানে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিলেন, আবার কেউ কোনো পরিবহনই পাচ্ছেন না। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সড়কের পাশে বসে অপেক্ষা করছেন তারা।
বাসের সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অনেক যাত্রী এখন সিটিবাস, মিনিবাস, এমনকি মালবাহী পিকআপেও গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ভাড়া চড়া হওয়া সত্ত্বেও এসব গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, ঈদের এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে কোনও পরিকল্পনা ছিল না সংশ্লিষ্টদের। ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সড়কে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ যানবাহন রয়েছে, ফলে চাপও তুলনামূলক বেশি।
নাঈমুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই দুরবস্থার জন্য পুলিশের অব্যবস্থা এবং সমন্বয়হীনতাই দায়ী। ঈদযাত্রা যদি রাস্তায় বসে কেটে যায়, তবে এটা কিসের উৎসব?” অন্যদিকে রবিউল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, “বাড়ি ফেরার আনন্দটাই যাত্রাপথে হারিয়ে গেছে।” দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা, অতিরিক্ত ভাড়া ও বাস সংকটে মানুষ যেন উৎসবের আগেই ক্লান্ত।
পরিবহন সংকটে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠছেন ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বা পিকআপে। গাজীপুর, টঙ্গী বা উত্তরা থেকে এভাবেই বহু মানুষ ফিরছেন ময়মনসিংহ বা এর আশপাশের জেলাগুলোর পথে। এমন অবস্থায় পরিবহন মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগও উঠেছে। একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, ট্রাক বা পিকআপে করে যেতে গুনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত, যা স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ বা ততোধিক।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উৎসবের আনন্দে ঘেরা এই সময়টাতে এমন দুর্ভোগ সাধারণ যাত্রীদের জন্য শুধু হতাশারই নয়, বরং নিরাপত্তা ও সম্মানজনক যাতায়াতের প্রশ্নেও বড় ধাক্কা হয়ে উঠেছে।
ভোরের আকাশ/হ.র