আকতার হোসেন
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫৩ এএম
অস্থিরতা কাটছেই না
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আট মাস পূর্ণ হলো। কিন্তু প্রশাসনে এখনও আসেনি কাক্সিক্ষত গতি। দায়িত্ব নেওয়ার পর চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারলেও গণঅভ্যুত্থানের পর জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী এগোচ্ছে না প্রশাসন। জনপ্রশাসন চলছে ধীরগতিতে। বর্তমান জনপ্রশাসন সাধারণ রুটিন দায়িত্বও ঠিকমতো পালন করতে সক্ষম হচ্ছে না। যার কারণে জনগণের সেবাপ্রাপ্তি বিঘ্নিত হচ্ছে; অহরহ জনশৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সাধারণ সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনগণ। এতে জনমনে অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে। শক্ত অবস্থান নিয়ে প্রশাসনের কাজে গতি ফেরাতে পারেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বড় কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আমলাদের মধ্যে একটি অংশ সরকারকে সহযোগিতা করছে না বলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং পদত্যাগী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এরপরও গতি আসেনি কাজে। গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার কাজগুলো এগোচ্ছে ধীরগতিতে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের ৮ মাস পার হয়েছে এরইমধ্যে।
বর্তমান সরকারের কার্যকাল নিয়ে সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এই আটমাসেও জনপ্রশাসনে গতিশীলতা আসেনি। এখনও দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সংস্কারও আনা হয়নি প্রশাসনে। বরং প্রশাসনের ধীরগতির কারণে সরকারের অগ্রাধিকার বা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। আর অনভিজ্ঞতার কারণে শুরু থেকেই প্রশাসনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বদলাতে হচ্ছে। যা সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আট মাস হলো। এরমধ্যে প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগে যে সংস্কার এবং যে ধরনের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, সেটা মানুষ দেখতে পাচ্ছে না। সরকারে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা যেভাবে নেতৃত্ব দেবেন, যেভাবে সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা দিয়ে কাজে নামিয়ে দেবেন, সরকারের কাজকে গতিশীল করবেন সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাই এই জায়গায় তাদের আরও মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনে অনেক সিদ্ধান্তহীনতা দেখছি যেটা মানুষকে হতাশ করে। একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা বারবার পরিবর্তন করলে তো প্রশাসনকে ওই জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে না, যেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার দরকার একটা উৎসবমুখর, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য।
প্রশাসনে গতি ফেরাতে করণীয় বিষয়ে সাবেক এই সচিব বলেন, নেতৃত্বের পর্যায়ে রদবদল এনে তাদের মেসেজ দেবেন। কাজে উৎসাহিত করবেন, তাদের সুরক্ষা দেবেন। তারা যাতে আইনানুযায়ী কাজ করে সেই পরিষ্কার বার্তা তাদের দিতে হবে। তাদের মনিটর করবেন। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফেরদৌস আরফিনা ওসমান বলেন, প্রশাসন খুব ঢিলেঢালা গতিতে চলছে। আরও শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন ছিল। যে কঠিন আন্দোলনের পর এ সরকার এসেছে তাতে সরকারের শক্তভাবে হাল ধরা উচিত ছিল।
তিনি বলেন, এতো আন্দোলন তো আগে ছিল না। আন্দোলন করলে দাবি আদায় হয়, এই মেসেজটা মানুষের কাছে যেতে দেওয়া হলো কেনো? প্রশাসন ভীষণ দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। প্রশাসনের ভেতরে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। একটা স্থবিরতার মধ্যে আছে। অনেকে মনে করছেন এ সরকার তো কিছুদিন আছে, নির্বাচন হোক। যেভাবে চলা উচিত ছিল, সেভাবে চলছে না প্রশাসন। ভীষণ ধীরগতিতে সবকিছু চলছে। এখানে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার প্রাধান্যটা বেশি। তাই এটাকে সামনে নিতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, খুবই দুঃখজনক যে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বারবার পাল্টাতে হচ্ছে। ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গেজেট প্রকাশের পর যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটা সংকেত দেয় যে প্রশাসন শক্তভাবে কাজ করছে না।
জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অতিমাত্রায় দলীয়করণ এবং জনপ্রশাসনের সর্বস্তরে দুর্নীতির লাগামহীন বিস্তারের কারণে জনপ্রশাসন অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। ছাত্র-জনতার বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এ অকার্যকর জনপ্রশাসন তছনছ হয়ে একটি ভঙ্গুর ও অস্থির জনপ্রশাসনে পরিণত হয়েছিল। অস্থির জনপ্রশাসনে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ।
এছাড়া ব্যাপকহারে বাধ্যতামূলক অবসর এবং ওএসডি করার কারণে এ অস্থিরতার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রশাসনিক ব্যাপক শূন্যতা, যা দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাকে একটা নাজুক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুরু থেকেই প্রশাসনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগ প্রশাসনে চরম বিশৃঙ্খলা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে নজীরবিহীনভাবে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম-সচিব কে এম আলী আযম ও জিয়াউদ্দিনের কক্ষে হট্টগোল করেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা। বিকেল ৩টা থেকে তারা এ দুই যুগ্ম-সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া ৫৯ জন ডিসির মধ্যে
গত ১২ সেপ্টেম্বর নয়জনের নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে চার জেলার ডিসি পদে রদবদল আনা হয়। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) এ কে এম মতিউর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র তিনদিনের মাথায় ৩ অক্টোবর তাকে ওএসডি করা হয়। নিয়োগের এক দিনের মাথায় গত ১ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইলাহী দাদ খানের নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর এ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তাকে। তাকে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে ওই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও বিতর্কের মুখে পরের দিন তা বাতিল করা হয়। সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আত্মগোপনে চলে যান। পরদিন মধ্যরাতে নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পান মো. ময়নুল ইসলাম।
অপরদিকে গত ৬ আগস্ট ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন মো. মাইনুল হাসান। মাত্র তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার পদে নতুন মুখ আসে। বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পান বাহারুল আলম। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় শেখ সাজ্জাদ আলীকে।
গত ১৩ জানুয়ারি বিতর্ক ওঠায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) ছয়জন সদস্যের নিয়োগ বাতিল করা হয়। অথচ তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল গত ২ জানুয়ারি। এর মধ্যে তিনজনের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। এর মধ্যে ডা. শাহিনা সোবহানের বাবা জামালপুর-৫ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য। আরেকজন ডা. শাহিনা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বান্ধবী। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ ডিজিএফআইয়ের সাবেক ডিজি। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্বপালন করেন। তার সময়ে ‘আয়নাঘরে’ অনেকেই বন্দি ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ড. মো. মিজানুর বিসিএস ৮৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি আওয়ামী লীগের সময়ে বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
৪৩তম বিসিএস থেকে দুই হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সুপারিশের দীর্ঘ ১০ মাস পর এ বিসিএস থেকে নিয়োগ দিয়ে প্রথমে ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে গত ৩০ ডিসেম্বর নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েন ১৬৮ চাকরিপ্রার্থী। এর আগে ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েছিলেন ৯৯ জন। সবমিলিয়ে ৪৩তম বিসিএস থেকে মোট বাদ পড়েন ২৬৭ জন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুগ্ম-সচিব থেকে অতিরিক্ত, উপ-সচিব থেকে যুগ্ম-সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়। অভিযোগ ওঠে এদের মধ্যে অনেকেই বিতর্কিত কর্মকর্তা। তাদের কেউ কেউ অতীতে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিভাগীয় মামলায় পেয়েছিলেন শাস্তি। কেউ কেউ ছিলেন পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অপকর্মের সহযোগী। এরইমধ্যে কয়েকদফা আন্দোলন হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর আন্দোলন ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বার বার। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসনেও রদবদল হয়েছে ব্যাপক।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে যেসব জেলা প্রশাসক রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং যেসব পুলিশ সুপার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্যে অনেককেই বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হচ্ছে বা ওএসডি করা হচ্ছে। তাদের শূন্যতা পূরণে সঠিক কর্মপরিকল্পনার অভাব দেখা গেছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে। জনগণের সেবাপ্রাপ্তিতে দেখা দিচ্ছে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা।
মব জাস্টিসের কারণে নিরীহ লোকজন হেনস্তার শিকার হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাণ হারাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের কোনো সিদ্ধান্ত বা কাজ জনস্বার্থের অনুকূল হওয়া সত্ত্বেও তা ব্যক্তিবিশেষ বা গোষ্ঠীর মনঃপূত না হলে তাদেরকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে আন্দোলনে নেমে যাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে যাচাই না করেই সরকারও তাতে সায় দিচ্ছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসাবে অপবাদ দেওয়ার সুযোগ নিচ্ছে কেউ কেউ। এতে করে প্রশাসন আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এর প্রভাব পড়ছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর বাংলাদেশ সচিবালয়ে। মাঠ পর্যায়ে অর্থাৎ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনেও এর ছাপ পড়ছে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে থাকছেন, কখন কোন সিদ্ধান্ত আসে। এসব কারণে ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে অভয় দিয়ে বলা হচ্ছে, নিরপরাধ কর্মকর্তারা কোনও সমস্যায় পড়বেন না। বাংলাদেশ সচিবালয়, কয়েকটি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
আকতার হোসেন
প্রকাশ : ১ সপ্তাহ আগে
আপডেট : ১ সপ্তাহ আগে
অস্থিরতা কাটছেই না
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আট মাস পূর্ণ হলো। কিন্তু প্রশাসনে এখনও আসেনি কাক্সিক্ষত গতি। দায়িত্ব নেওয়ার পর চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারলেও গণঅভ্যুত্থানের পর জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী এগোচ্ছে না প্রশাসন। জনপ্রশাসন চলছে ধীরগতিতে। বর্তমান জনপ্রশাসন সাধারণ রুটিন দায়িত্বও ঠিকমতো পালন করতে সক্ষম হচ্ছে না। যার কারণে জনগণের সেবাপ্রাপ্তি বিঘ্নিত হচ্ছে; অহরহ জনশৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সাধারণ সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনগণ। এতে জনমনে অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে। শক্ত অবস্থান নিয়ে প্রশাসনের কাজে গতি ফেরাতে পারেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বড় কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আমলাদের মধ্যে একটি অংশ সরকারকে সহযোগিতা করছে না বলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং পদত্যাগী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এরপরও গতি আসেনি কাজে। গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার কাজগুলো এগোচ্ছে ধীরগতিতে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের ৮ মাস পার হয়েছে এরইমধ্যে।
বর্তমান সরকারের কার্যকাল নিয়ে সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এই আটমাসেও জনপ্রশাসনে গতিশীলতা আসেনি। এখনও দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সংস্কারও আনা হয়নি প্রশাসনে। বরং প্রশাসনের ধীরগতির কারণে সরকারের অগ্রাধিকার বা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। আর অনভিজ্ঞতার কারণে শুরু থেকেই প্রশাসনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বদলাতে হচ্ছে। যা সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আট মাস হলো। এরমধ্যে প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগে যে সংস্কার এবং যে ধরনের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, সেটা মানুষ দেখতে পাচ্ছে না। সরকারে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা যেভাবে নেতৃত্ব দেবেন, যেভাবে সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা দিয়ে কাজে নামিয়ে দেবেন, সরকারের কাজকে গতিশীল করবেন সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাই এই জায়গায় তাদের আরও মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনে অনেক সিদ্ধান্তহীনতা দেখছি যেটা মানুষকে হতাশ করে। একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা বারবার পরিবর্তন করলে তো প্রশাসনকে ওই জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে না, যেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার দরকার একটা উৎসবমুখর, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য।
প্রশাসনে গতি ফেরাতে করণীয় বিষয়ে সাবেক এই সচিব বলেন, নেতৃত্বের পর্যায়ে রদবদল এনে তাদের মেসেজ দেবেন। কাজে উৎসাহিত করবেন, তাদের সুরক্ষা দেবেন। তারা যাতে আইনানুযায়ী কাজ করে সেই পরিষ্কার বার্তা তাদের দিতে হবে। তাদের মনিটর করবেন। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফেরদৌস আরফিনা ওসমান বলেন, প্রশাসন খুব ঢিলেঢালা গতিতে চলছে। আরও শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন ছিল। যে কঠিন আন্দোলনের পর এ সরকার এসেছে তাতে সরকারের শক্তভাবে হাল ধরা উচিত ছিল।
তিনি বলেন, এতো আন্দোলন তো আগে ছিল না। আন্দোলন করলে দাবি আদায় হয়, এই মেসেজটা মানুষের কাছে যেতে দেওয়া হলো কেনো? প্রশাসন ভীষণ দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। প্রশাসনের ভেতরে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। একটা স্থবিরতার মধ্যে আছে। অনেকে মনে করছেন এ সরকার তো কিছুদিন আছে, নির্বাচন হোক। যেভাবে চলা উচিত ছিল, সেভাবে চলছে না প্রশাসন। ভীষণ ধীরগতিতে সবকিছু চলছে। এখানে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার প্রাধান্যটা বেশি। তাই এটাকে সামনে নিতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, খুবই দুঃখজনক যে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বারবার পাল্টাতে হচ্ছে। ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গেজেট প্রকাশের পর যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটা সংকেত দেয় যে প্রশাসন শক্তভাবে কাজ করছে না।
জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অতিমাত্রায় দলীয়করণ এবং জনপ্রশাসনের সর্বস্তরে দুর্নীতির লাগামহীন বিস্তারের কারণে জনপ্রশাসন অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। ছাত্র-জনতার বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এ অকার্যকর জনপ্রশাসন তছনছ হয়ে একটি ভঙ্গুর ও অস্থির জনপ্রশাসনে পরিণত হয়েছিল। অস্থির জনপ্রশাসনে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ।
এছাড়া ব্যাপকহারে বাধ্যতামূলক অবসর এবং ওএসডি করার কারণে এ অস্থিরতার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রশাসনিক ব্যাপক শূন্যতা, যা দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাকে একটা নাজুক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুরু থেকেই প্রশাসনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগ প্রশাসনে চরম বিশৃঙ্খলা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে নজীরবিহীনভাবে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম-সচিব কে এম আলী আযম ও জিয়াউদ্দিনের কক্ষে হট্টগোল করেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা। বিকেল ৩টা থেকে তারা এ দুই যুগ্ম-সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া ৫৯ জন ডিসির মধ্যে
গত ১২ সেপ্টেম্বর নয়জনের নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে চার জেলার ডিসি পদে রদবদল আনা হয়। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) এ কে এম মতিউর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র তিনদিনের মাথায় ৩ অক্টোবর তাকে ওএসডি করা হয়। নিয়োগের এক দিনের মাথায় গত ১ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইলাহী দাদ খানের নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর এ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তাকে। তাকে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে ওই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও বিতর্কের মুখে পরের দিন তা বাতিল করা হয়। সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আত্মগোপনে চলে যান। পরদিন মধ্যরাতে নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পান মো. ময়নুল ইসলাম।
অপরদিকে গত ৬ আগস্ট ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন মো. মাইনুল হাসান। মাত্র তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার পদে নতুন মুখ আসে। বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পান বাহারুল আলম। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় শেখ সাজ্জাদ আলীকে।
গত ১৩ জানুয়ারি বিতর্ক ওঠায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) ছয়জন সদস্যের নিয়োগ বাতিল করা হয়। অথচ তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল গত ২ জানুয়ারি। এর মধ্যে তিনজনের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। এর মধ্যে ডা. শাহিনা সোবহানের বাবা জামালপুর-৫ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য। আরেকজন ডা. শাহিনা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বান্ধবী। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ ডিজিএফআইয়ের সাবেক ডিজি। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্বপালন করেন। তার সময়ে ‘আয়নাঘরে’ অনেকেই বন্দি ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ড. মো. মিজানুর বিসিএস ৮৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি আওয়ামী লীগের সময়ে বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
৪৩তম বিসিএস থেকে দুই হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সুপারিশের দীর্ঘ ১০ মাস পর এ বিসিএস থেকে নিয়োগ দিয়ে প্রথমে ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে গত ৩০ ডিসেম্বর নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েন ১৬৮ চাকরিপ্রার্থী। এর আগে ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েছিলেন ৯৯ জন। সবমিলিয়ে ৪৩তম বিসিএস থেকে মোট বাদ পড়েন ২৬৭ জন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুগ্ম-সচিব থেকে অতিরিক্ত, উপ-সচিব থেকে যুগ্ম-সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়। অভিযোগ ওঠে এদের মধ্যে অনেকেই বিতর্কিত কর্মকর্তা। তাদের কেউ কেউ অতীতে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিভাগীয় মামলায় পেয়েছিলেন শাস্তি। কেউ কেউ ছিলেন পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অপকর্মের সহযোগী। এরইমধ্যে কয়েকদফা আন্দোলন হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর আন্দোলন ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বার বার। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসনেও রদবদল হয়েছে ব্যাপক।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে যেসব জেলা প্রশাসক রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং যেসব পুলিশ সুপার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্যে অনেককেই বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হচ্ছে বা ওএসডি করা হচ্ছে। তাদের শূন্যতা পূরণে সঠিক কর্মপরিকল্পনার অভাব দেখা গেছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে। জনগণের সেবাপ্রাপ্তিতে দেখা দিচ্ছে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা।
মব জাস্টিসের কারণে নিরীহ লোকজন হেনস্তার শিকার হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাণ হারাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের কোনো সিদ্ধান্ত বা কাজ জনস্বার্থের অনুকূল হওয়া সত্ত্বেও তা ব্যক্তিবিশেষ বা গোষ্ঠীর মনঃপূত না হলে তাদেরকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে আন্দোলনে নেমে যাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে যাচাই না করেই সরকারও তাতে সায় দিচ্ছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসাবে অপবাদ দেওয়ার সুযোগ নিচ্ছে কেউ কেউ। এতে করে প্রশাসন আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এর প্রভাব পড়ছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর বাংলাদেশ সচিবালয়ে। মাঠ পর্যায়ে অর্থাৎ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনেও এর ছাপ পড়ছে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে থাকছেন, কখন কোন সিদ্ধান্ত আসে। এসব কারণে ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে অভয় দিয়ে বলা হচ্ছে, নিরপরাধ কর্মকর্তারা কোনও সমস্যায় পড়বেন না। বাংলাদেশ সচিবালয়, কয়েকটি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ