পাসপোর্টে ডলার এনডোর্সমেন্ট ফি নির্ধারণ করে নতুন নির্দেশনা
ব্যাংক থেকে ডলার কেনাবেচায় কোনো ধরনের অতিরিক্ত মাশুল আদায় করা যাবে না। বিদেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টে ডলার সংযুক্তি (এনডোর্সমেন্ট) করতে চাইলে এখন থেকে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত ফি নিতে পারবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবৃদ্ধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, তফসিলি ব্যাংকগুলো অনুমোদিত ডিলার শাখার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হারে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ আদায়ের পাশাপাশি পৃথকভাবে সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশনও আদায় করার কারণে ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ে গ্রাহক নিরুৎসাহিত হচ্ছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অবহিত হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বৈধ মাধ্যম থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যাংক কর্তৃক বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির সময় পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ এবং সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশন আদায়ের ক্ষেত্রে এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ হিসেবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করা যাবে।
এছাড়া এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ ব্যতীত কোনো সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশন বা অনুরূপ যে কোন নামে অতিরিক্ত কোন ফি, চার্জ ও কমিশন আদায় করা যাবে না।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
ব্যাংক থেকে ডলার কেনাবেচায় কোনো ধরনের অতিরিক্ত মাশুল আদায় করা যাবে না। বিদেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টে ডলার সংযুক্তি (এনডোর্সমেন্ট) করতে চাইলে এখন থেকে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত ফি নিতে পারবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবৃদ্ধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।নির্দেশনায় বলা হয়, তফসিলি ব্যাংকগুলো অনুমোদিত ডিলার শাখার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হারে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ আদায়ের পাশাপাশি পৃথকভাবে সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশনও আদায় করার কারণে ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ে গ্রাহক নিরুৎসাহিত হচ্ছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অবহিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বৈধ মাধ্যম থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যাংক কর্তৃক বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির সময় পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ এবং সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশন আদায়ের ক্ষেত্রে এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ হিসেবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করা যাবে। এছাড়া এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ ব্যতীত কোনো সার্ভিস ফি, চার্জ ও কমিশন বা অনুরূপ যে কোন নামে অতিরিক্ত কোন ফি, চার্জ ও কমিশন আদায় করা যাবে না। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, অবিলম্বে কার্যকর হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের চলমান কলম বিরতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজস্ব প্রশাসনের কার্যক্রম। গত তিন দিন ধরেই জরুরি সেবা ছাড়া নিয়মিত কোনও কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। এতে রাজস্ব আদায় এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে।আজ রোববারও সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা এই আন্দোলন করছেন। তবে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চলমান অচলাবস্থা সমাধানে তাদের আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন।গতকাল শনিবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ জানান এনবিআর কর্মকর্তা। একই ব্যানারে তারা আন্দোলন করে আসছেন।সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার নিপুণ চাকমা বলেন, সংলাপের দরজা সব সময় খোলা ছিল এবং তা খোলা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।এনবিআর কর্মকর্তারা অভিযোগ করে আসছেন, এনবিআর সংস্কার কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করেই এনবিআর পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকার এনবিআরকে দুটি আলাদা সত্তা, রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভাগ করে পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এনবিআর সংস্কার কমিটির সুপারিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রস্তাবিত রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ এবং এনবিআর কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে রাজস্ব ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার।কর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা বাস্তবভিত্তিক সংস্কারের পক্ষে। তবে তা যেন অংশীজনদের মতামত নিয়ে হয় এবং এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিনুল হক শাহিন ও হাসনাত ইমাম সরকারও বক্তব্য দেন।বুধ ও বৃহস্পতিবারের মতো শনিবারও সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী স্ব-স্ব কার্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও কোনও দাপ্তরিক কার্যক্রম করেননি। এজন্য আন্দোলনকারীরা করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন, যৌক্তিক দাবি পূরণ হলে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পেছানো কাজ দ্রুত সম্পন্ন করবেন। ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে বহিরাগতদের জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।এ সময় তারা বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের অনির্বাচিত ও কার্যকরিহীন কমিটিকে ‘প্রতিনিধিত্বহীন’ বলে অভিহিত করেন।তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই কমিটিগুলোর নামে কোনও বক্তব্য বা কার্যক্রম শুধু ব্যক্তিগত বিবেচিত হবে এবং সংশ্লিষ্টরা দায় বহন করবেন।এদিকে এনবিআর কর্মকর্তাদের চলমান কলম-বিরতি কর্মসূচি ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান।গত ১৫ মে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে, আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে গত তিন দিন ধরে স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরণের কাস্টমস কার্যক্রম। দেশের বৃহত্তম এই কাস্টমস স্টেশনে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্ক নির্ধারণসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা।চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার বিল অব এন্ট্রি ও বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হয়। এর মধ্যে আমদানির প্রায় ২ হাজার ও রপ্তানির প্রায় ৫ হাজার। তবে কর্মবিরতির কারণে কোনো কার্যক্রমই চলছে না।প্রসঙ্গত, গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করে, যার ফলে প্রায় পাঁচ দশকের পুরনো এনবিআর বিলুপ্ত হয়। এরপর থেকেই রাজস্ব প্রশাসনের তিন শাখার কর্মকর্তারা ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নিয়ে আমরা যতটা ভয় পাচ্ছি; ততটা ভয়ের কিছু নেই। কারণ, বাণিজ্য অর্থনীতিতে চূড়ান্ত শত্রু বলে কিছু নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এমন মন্তব্য করেছেন।শনিবার (১৭ মে) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক এবং বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এমন কথা বলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। ইউএস ট্যারিফ বিষয়ে সরকারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ঠিকই ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাত-পা কাঁপানোর দরকার নেই।দেবপ্রিয় বলেন, এরই মধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা শুরু হয়েছে। আমাদের ওপর ট্যারিফ দিলে, এটা তাদের জন্যও ক্ষতি। তাদের পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে যাবে। কারণ, শুল্কের দাঁত তাদের ওপরও পড়বে। তাই আমাদের ওপর শুল্কের আঘাত তুলনামূলক হিসেবে আসছে না।এ সময় ড. দেবপ্রিয় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের হাতে দুই বছর রয়েছে। এই সময়টা আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পেরেছি কি না সেটা দেখতে হবে। শুধু ট্রেড পলিসি দিয়ে এই ট্যারিফ মোকাবিলা করা যাবে না; পণ্য বৈচিত্র্যকরণে যেতে হবে। আমাদের শক্তির জায়গা থেকে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনোযোগ পণ্যের চেয়ে সেবাখাতে বেশি দিতে হবে।সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের নেগোসিয়েশন দক্ষতা কম। নেগোসিয়েশন দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে। পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, দুই হাতি যখন মারামারি করে, তখন নিচের ঘাস ক্রাশ (দলিত-মথিত) হয়। আবার তারা খেলা করলেও ঘাস ক্রাশ হয়। সুতরাং, চায়না এবং ইউএস-এর এই যুদ্ধে আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ইউএস ট্যারিফ মোকাবিলায় তুলার জন্য ওয়্যারহাউস তৈরিসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।সভায় বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ’র পরিচালক রাজিব হায়দার বলেন, প্রতিটি দুর্যোগের পর একটা সুযোগ আসে। কিন্তু সেই সুযোগ তারাই পায়, যারা বেঁচে থাকে। গ্যাসের যে দুর্যোগ শুরু হয়েছে, তাতে আমরা ব্যবসায়ীরা তো বেঁচেই থাকব না। প্রতিদিন গ্যাসের মিটার নামছে। আমাদের ৪০ শতাংশ উৎপাদন কমে গেছে। সুতরাং, আমাদের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই। তিনি দ্রুত গ্যাস সমস্যার সমাধানে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনার দাবি জানান।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে তারা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গতকাল বিকেলে প্রধান কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুষ্কৃতকারীরা আবারও নগদে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ফলে পুনরায় অবৈধ টাকা বা ই-মানি তৈরির আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এই সুযোগে নতুন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মীদের বিভাগ পরিবর্তন করা শুরু করেছে নগদ। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেনসিক অডিটে যারা সহায়তা করেছেন এমন ২৩ জন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি ‘অবৈধ পন্থায়’ নগদে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন এক ব্যক্তিকে যিনি বিপুল আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামি।মুখপাত্র বলেন, নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন উচ্চ আদালত। এর উপর ভিত্তি করে এমন সব ব্যক্তিদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে যারা অবৈধভাবে ৬৫০ কোটি টাকার ই মানি তৈরি করেছিল।আরিফ হোসেন বলেন, নগদের আইটি বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘দুষ্কৃতকারীরা’ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে এই মুহূর্তে কি হচ্ছে- তা নিয়ে শংকিত বাংলাদেশ ব্যাংক। বিগত সময়ের মতো অর্থ তসরুপ এবং বেআইনি কর্মকাণ্ড হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানান মুখপাত্র। তিনি বলেন, আগামী ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিদের পুলিশ কেন খুঁজে পাচ্ছে না সে প্রশ্ন রাখেন মুখপাত্র। উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডাক বিভাগকে নগদ পরিচালনার লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু ডাক বিভাগ কেন দ্বিতীয় পক্ষের হাতে প্রতিষ্ঠানটিকে তুলে দিল তা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে।জানা গেছে, গত ১৫ মে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নগদ পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে প্রশাসক দল কাজ করে আসছিলেন, তারা দায়িত্ব হারিয়েছেন। ফলে নগদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগ, দুই প্রতিষ্ঠানই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।এদিকে নগদের অর্থ তসরুপের জন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, তাদের মধ্যে একজনকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক মো. সাফায়েত আলম। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়ে তিনি নতুন মানবসম্পদ কর্মকর্তা নিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছেন। গত দুই দিনে শীর্ষ পর্যায়ের ২৩ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আরও দুই আসামিকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে নগদ পরিচালনায় নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে ১৯ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক বসানোর পর নিরীক্ষায় উঠে আসে, নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। সাবেক সরকারের আমলে নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রাহক বানানো ও সরকারি ভাতা বিতরণসহ একচেটিয়া সুবিধা পায় নগদ।প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। সবার চোখের সামনে এসব অনিয়ম হয়। এ ঘটনায় সরকারের ডাক বিভাগের আটজন সাবেক ও বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি), নগদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, জনগণের টাকার নিরাপত্তা দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব। আগে প্রতিষ্ঠানটি যেনতেনভাবে চলেছে। এ জন্য সরকার পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছিল। এখন আদালতের আদেশের কারণে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয়েছে। আমরা সেই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করি, জনগণের টাকার নিরাপত্তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার দায়িত্ব ফিরে পাবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ