ছবি- সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ৮ থানার ওসি বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বদলিকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে- জিএমপি সদর থানার ওসি মো. মেহেদী হাসানকে টঙ্গী পূর্ব থানায়, টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. হারুন-অর-রশিদকে বাসন থানায়, কাশিমপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে গাছা থানায়, পূবাইল থানার ওসি মো. খালিদ হাসানকে কাশিমপুর থানায়, বাসন থানার ওসি মো. শাহীন খানকে টঙ্গী পশ্চিম থানায়, গাছা থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলামকে সদর থানায়, ডিবি (উত্তর) বিভাগ মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন মাহমুদকে কোনাবাড়ী থানায়, টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমানকে পূবাইল থানায়, টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. ওহিদুজ্জামানকে ডিবি উত্তর এবং কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. সালাহউদ্দিনকে ডিবি দক্ষিণে বদলি করা হয়েছে।
বদলিকৃত কর্মকর্তাদের বিদ্যমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দ্রুততম সময়ে নতুন পদে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জের একমাত্র সড়ক পথ মুক্তারপুর সেতুর উপর আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত মহিউদ্দিন পক্ষের নেতা–কর্মীরা।শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করেন আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব নিজে উপস্থিত না থাকলেও হাজার হাজার লোক সমাগম হয়।এতে সেতু দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ পথের যাত্রীরা।ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামানকে। এই ঘোষণার পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলার দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে মুক্তারপুর সেতু এলাকায় জড়ো হতে থাকেন মহিউদ্দিন আহমেদ এর সমর্থকরা। সে সময় ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আসতে থাকে বিএনপি'র নেতা-কর্মীরা। বেলা তিনটার দিকে পুরো সেতু এলাকায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় সেতুর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশ পর্যন্ত বিক্ষুদ্ধরা ছড়িয়ে পড়েন।সেতুর অন্তত ৬ টি স্থানে আগুন জ্বালায় নেতা-কর্মীরা। এতে সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত ১৭ বছর এ আসনে আন্দোলন, সংগ্রাম সংগঠিত করে রেখেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই ও তাঁর ছোট ভাই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। সে সময় কামরুজ্জামান মাঠে ছিলেন না। এখন তিনি মনোনয়ন পাওয়ায় এই আসনের নেতা–কর্মীরা ক্ষুদ্ধ। দ্রুত মনোনয়ন পরিবর্তন করা না হলে এ আসনে বিএনপির মধ্যে বিভক্তি দেখা হবে। আন্দোলন সংগ্রামে পুরো মুন্সিগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে।কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ফকির, তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কমীরা এ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করতে হবে বলে নানা ধরনের স্লোগান দেয়। যে পর্যন্ত প্রাথী পরিবর্তন করা না হবে, সেই পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উত্তরাঞ্চলের প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়ন (রেজি. রাজ-২৬৪৭)'র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন-২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে।নির্বাচনের ফলাফলে সভাপতি পদে মো. রাহেনুল ইসলাম, মো. রবিউল ইসলাম রবি সিনিয়র সহ সভাপতি ও মো. রাহেনুর রহমান সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২৯ নভেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকায় অবস্থিত ইউনিয়ন কার্যালয় সংলগ্ন গোডাউনে ভোটকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ১৮ টি পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. ছাদেকুল ইসলাম ও প্রিজাইটিং অফিসারের সাক্ষরিত প্রকাশিত ফলাফলে প্রাপ্ত ভোটে সভাপতি পদে মো. রাহিনুল ইসলাম গরুর গাড়ী প্রতীকে ৫৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. আসাদুজ্জামান চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭২ ভোট। সাধারন সম্পাদক পদে হরিণ প্রতীকে মো. রাহেনুর রহমান ৫৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. শাহিবুর রহমান সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩২৪ ভোট। সিনিয়র সহ সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম রবি দোয়াত কলম প্রতীকে ৬৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. জাহাঙ্গীর আলম সাইদার বেলচা প্রতীকে পেয়েছেন ২৯২ ভোট।এ নির্বাচনে অন্য পদে বিজয়ীরা হলেন- সহ সভাপতি পদে মো. মাসুদ রানা ৪৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. শাহিবুল ইসলাম বাবু পেয়েছেন ৪২২ ভোট। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আবু সুফিয়ান ৫২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. হাসেম সরদার পেয়েছেন ৩২২ ভোট। সহ সাধারণ সম্পাদক পদে মো. লিটন খান ৫৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. আনিছুর রহমান পেয়েছেন ৪২৩ ভোট। অর্থ সম্পাদক পদে মো. মাহাবুর রহমান ৫৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. রবিউল ইসলাম পেয়েছেন ৩৩৬ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. হযরত আলী ৫২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. মোছাব্বর আলী পেয়েছেন ৩৩৩ ভোট।দপ্তর সম্পাদক পদে মো. এরশাদ আলী ৪৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. ফরহাদ আলী পেয়েছেন ৩৫৬ ভোট। সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ২টি পদে মো. মির্জা এসকেন্দার তালা চাবি প্রতীকে ৩৩১ ভোট ও মো. আলিফুল ইসলাম ময়ুর প্রতীকে ২৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তাদের প্রতিদ্বন্ধী যথাক্রমে মো. শাহাজালাল ফুটবল প্রতীকে ১৭৪ ভোট ও মো. মোরশেদ এ্যাম্বুলেন্স প্রতীকে ২৩৩ ভোট পেয়েছেন।ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. আব্দুর রউফ ব্যাট বল প্রতীকে ৫০২ পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. আল আমিন মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৩১৭ ভোট। প্রচার সম্পাদক পদে মো. আব্দুর রহিম মাইক প্রতীকে ৫২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। তার প্রতিদ্বন্ধী মো. মোছাদ্দেক হোসেন মই প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪২ ভোট। কার্যনির্বাহী সদস্যের ৫টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন- মো. মিঠু বাবু (৫০৬ভোট), মো. মিজানুর রহমান মিজান (৪৬৪ ভোট), মো. রুহুলআমিন রাহুল (৪৯৫ভোট) মো. মানিক মন্ডল (৪৮৫ ভোট), ওসমান গনী (৫৩০ ভোট) পেয়ে বিজয়ী হয়।প্রসঙ্গত, এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১০৩৩ জন, উপস্থিত ভোটার ৯৮৭ জন, অনুপস্থিত ভোটার ৪৬ জন। নষ্ট ভোট সংখ্যা সভাপতি পদে ১৬, সিনিয়র সহ সভাপতি পদে ৬৪, সহ সভাপতি পদে ১২৭, সাধরণ সম্পাদক পদে ১১৩, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৩, সহ সাধারণ সম্পাদক পদে ২৪, অর্থ সম্পাদক পদে ১০০, সাংগঠনিক পদে ১৩২, দপ্তর সম্পাদক পদে ১৭০, সমাজ কল্যাণ পদে ৬, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পদে ১৬৮, প্রচার সম্পাদক পদে ১১৯, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ১৫৯টি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পড়েছে। একটি পাথরবোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাকটি সেতুর মাঝখানে আটকে যায়। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে দুটি উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ।শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগম সাথী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। ব্রিজটি মেরামতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজ শুরু করেছে। আশা করছি, আজকের (শুক্রবার) মধ্যেই সেতুটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে।’এলাকাবাসী জানায়, হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কটি বানিয়াচং এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এ সড়কে রত্না নদীর ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সেতুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্রিজের পাশেই লেখাও আছে ‘সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ’। কিন্তু শুক্রবার সকালে জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক সেতুর ওপর ওঠামাত্রই সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে নিচে নেমে যায়। এতে ট্রাকের পেছনের দুটি চাকাও সেতুর নিচের দিকে ঝুঁকে ট্রাকটি আটকে যায়।এতে সেতুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, প্রাইভেটকারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী যানবাহন। দুর্ঘটনার পর থেকে সেতুর একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছেন।প্রত্যক্ষদর্শী আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের বাসিন্দা তাবিদুর রহমান বলেন, ‘সকালে জেলা সদর থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলাম। এসময় একটি ট্রাক রত্না সেতু অতিক্রম করার সময় বেশ জোরে শব্দ হয়। মুহূর্তেই দেখি সেতুর পাটাতন ভেঙে ট্রাকটির পেছনের চাকা ঝুলে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি।’হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ট্রাকটি সরানোর জন্য রেকার এসেছে। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যেই আনলোড করে ট্রাকটি সরানো সম্ভব হবে।তিনি আরও বলেন, রাতে সেতুটি মেরামতের কাজ করা হবে। আশা করি শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক সম্ভব হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
পিরোজপুরের কাউখালীতে নিলুফার ইয়াসমিন নামে এক নারী উদ্যোক্তা স্থানীয় সুপারি গাছের পরিত্যক্ত খোল দিয়ে নানা তৈজসপত্র তৈরি করছেন। উদ্যোক্তা নিলুফার এর তৈরি পরিবেশবান্ধব থালা, বাটি, বাসন, ট্রে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত সহ শহর অঞ্চলে বাজারজাত করে আর্থিক সমৃদ্ধি অর্জন করছেন।উদ্যোক্তা নিলুফার ইয়াসমীন উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেউন্দিয়া গ্রামের কেউন্দিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান জুয়েলের স্ত্রী। সে স্থানীয় নাঙ্গুলী গ্রামে ন্যাচারাল বিউটি প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কারখানা স্থাপন করে সুপারির খোল দিয়ে নানা তৈষজসপত্র উৎপাদন করে আসছেন। তিনি সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। উদ্যোক্তা নিলুফার ইয়াসমিনের স্বামী হাফিজুর রহমান জুয়েল জানান, তার স্ত্রী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন যে প্লাস্টিকের সামগ্রী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। প্লাস্টিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। সে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে জানতে পারেন সুপারি গাছের খোল দিয়ে বিভিন্ন প্রকার পরিবেশবান্ধব সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব। এতে তার আগ্রহ জন্মে। তার ইচ্ছা অনুযায়ী সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী তৈরি করার কারখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কারখানার মেশিন আমদানি নিয়ে। মেশিনগুলো ইন্ডিয়া অথবা অন্য কোন দেশ থেকে আমদানি করতে হলে অনেক ব্যয়বহুল। যে কারণে থমকে যায় তার পরিকল্পনা।নিলুফার অন্য একটি কারখানা দেখে ইণ্ডিয়ান মেশিনের মত করে নিজস্ব পরিকল্পনায় বাংলাদেশই তৈরি করেন সুপারির খোল দিয়ে থালা বাসন তৈরি করার মেশিন। এতে সফল হন তিনি। পরে বাড়ির পাশে কাউখালী - ঝালকাঠি সড়কের পাশে নাাঙ্গুলী সাহাপুরা গ্রামে মামা ফরিদ হোসেনের একটি ঘর ও জায়গা ১০ বছর চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কারখানাটি স্থাপন করা হয়।এতে প্রায় ১৮/২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। কাউখালী সোনালী ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় স্থাপনকৃত এ কারাখালাদিয়ে নিলুফার এলাকায় একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। এ কারখানায় স্থানীয়ভাবে সুপারী গাছের পরিপক্ক খোল সংগ্রহ করে উৎপাদন শুরু করে বিভিন্ন প্রকার থালা, বাসন, বাটি, পেয়ালা, ট্রে সহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব সামগ্রী তৈরী করা হচ্ছে। উদ্যোক্তা নিলুফার ইয়াসমীন বলেন, কাউখালীতে প্রচুর সুপারীর ফলন ঘটে যা অর্থকারী ফসল। সেই সুপারি গাছের পরিত্যক্ত খোলা এখন আর পরিবেশ দূষণ করবে না। এটি ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করে পরিবেশের ভারসাম্য জন্য তৈরি করা হচ্ছে। প্লাস্টিকের বিকল্প সামগ্রী হিসেবে এটি দিনদিন মানুষের কাছে আগ্রহের সৃষ্টি করছে। স্থানীয় সাধারণ মানুষ বিষয়টিতে আশ্বস্ত হয় সকলেই শুরু পরিত্যাক্ত সুপারি গাছের খোল সংগ্রহ কওে কারখানায় সরবরাহ করছেন।গাছ থেকে একটি সুপারি গাছের খোল পরার সাথে সাথেই সংগ্রহ করছেন বাগানের মালিকরা। উন্নতমানের ভালো সাইজের একটি খোল দুই টাকার বিনিময়ে কারখানা ক্রয় করা হয়। বাকি অংশটি নিজেরাই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন সুপারি গাছের মালিক পক্ষ। যার ফলে এই এলাকায় সুপারি গাছের চাষ এক বছরে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য আগাছা গাছ কেটে মানুষ এখন ঝুকছে সুপারীর বাগান তৈরি করতে। সাধারণ মানুষ ও ভোক্তরা স্বল্প মূল্যে মানসম্মত প্লাস্টিকের বিকল্প থালা-বাসন সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে বেশ খুশি। জানা গেছে, বর্তমানে ৫/৬ জন কর্মচারী খোল দিয়ে বিভিন্ন মালামাল উৎপাদন করছেন। খোল সংগ্রহে অনেকে কর্মব্যস্ত থাকেন তারাও লাভবান হচ্ছেন। দৈনিক ৪/৫ শত থালা,বাসন সামগ্রী উৎপাদন করা হয়। সম্পূর্ণ রাসায়নিকমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে এই মালামাল তৈরি করা হয়। নিয়ম মেনে একাধিকবার ব্যবহার করলেও কোনও সমস্যা হয় না। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিল কর্মচারী বেতন দিতে প্রায় ৫০/ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করে লাভবান হচ্ছেন উদ্যোক্তা। বাসুরী, কাঠালিয়া, নাঙ্গলী, আমরাজুড়ি, সুবিদপুর, চিরাপাড়া গ্রামের কয়েকজন সুপারি চাষীদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, কাউখালীতে দক্ষিণ অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি সুপারের উৎপাদন হয়। যেখানে সুপারির খোলগুলো নষ্ট হয়ে পরিবেশের দূষণ ঘটাত সেই জায়গায় সে খোলটি বিক্রি করে টাকা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজসেবক এইচ এম দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, গৃহবধূ নিলুফার এর অদম্য আগ্রহের কারণে এটা করা সম্ভব হয়েছে। এমন উদ্যোগের ফলে সে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। পরিবেশবান্ধব উৎপাদিত এ সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব এ পণ্য। তবে সরকারের সহযোগিতা পেলে কারখানার পরিধি বৃদ্ধি করা সম্ভব। কাউখালী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার নূরে জান্নাত ফেরদৌসি বলেন, একজন নারী স্ব উদ্যোগে পরিবেশবান্ধব একটি শিল্প গড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপণ করেছেন। তার এ শিল্প উদ্যোগ এলাকায় অন্য নারীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। মহিলা দপ্তর হতে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বজল মোল্লা বলেন, সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশ বান্ধব থালা-বাস উৎপাদন করায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে। অপরদিকে বেকারত্ব হ্রাস পাবে । আমাদের সকল বেকার যুবক যুবতীদের এই জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে । তাহলে কারো চাকুরির জন্য ঘুরতে হবে না। বরং উদ্যোক্তারা চাকরি দিতে পারবেন। উদ্যোক্তা নিলুফা ইয়াসমিনের তেমন একজন দৃষ্টান্ত। জাতীয় কাজে যে কোনো সহযোগিতার চাওয়া হইলে উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.