বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক নাঈম ও সাংবাদিকসহ ১০ জনকে পিটুনি, আটক ৩
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈমের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৮ জুন) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।

আহতরা হলেন- রামগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেক ও সংবাদকর্মী রায়হানুর রহমানসহ ১০ জন। খবর পেয়ে রাতেই তাদেরকে হাসপাতাল দেখতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশই গ্রামের গনক বাড়ির উঠানে ফুটবল খেলার সময় একই বাড়ির উদ্দীপন এনজিও কর্মী সোহাগ আলমের এক বছর বয়সী শিশু আনাছুর রহমানের মাথায় ফুটবল পড়ে গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় শিশু আনাছের মা আমেনা আক্তার বিথী ফুটবল খেলোয়াড় রাহুল (১০) ও সাফোয়ান (১২)কে জিজ্ঞাসা করলে রাহুল ও সাফোয়ানের স্বজনদের সাথে বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। সন্ধা সাড়ে ৬টায় শিশু আনাছের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে আনাছের বাবা সোহাগ আলম সন্তানকে নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পথে খেলোয়াড় রাহুলের বাবা রাজন ও সাফোয়ানের বাবা লিপনসহ কামাল ও জাহাঙ্গীর শিশুর বাবা সোহাগকে আইনের আশ্রয়ে গেলে গ্রামে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়।
পরে আনাছের আত্মীয়স্বজনদের সহযোগীতায় শিশু আনাছকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে হাসপাতাল সংলগ্ন আঙ্গারপাড়া এলাকার রাহুল ও সাফোয়ানের নিকটাত্মীয় মাসুদ, তুষার, কামালসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে শিশু আনাছের ফুফু জান্নাতুল ফেরদাউসকে হসপিটালের ভিতরে ঢুকে চুল টেনে হসপিটাল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় শিশুর বাবা সোহাগ আলম তার নিকটাত্মীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে খবর দিলে তারা বিষয়টি জানতে হসপিটালে যায়।
হাসপাতালে গিয়ে শিশু আনাছের বাবার কাছে পুরো ঘটনা জানতে চাওয়ার এক পর্যায়ে মাসুদ, তুষার, কামাল ও লিটনসহ ২০/২৫জনের একটি গ্রুপ বাঁশ, লাঠি ও কাঠ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে বেদম মারধর করে।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে ঢুকে মারধর করার ঘটনায় আমরা নিজেরা উদ্বীগ্ন। আমাদের চিকিৎসক ও নার্স তারাও অনিরাপদ।
ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মাহবুব আলম রাত ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান।
এ সময় তিনি বলেন, "এই ন্যাক্কারজনক হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। আমরা অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।"
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী মাসুদ, তুষার ও কামালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বরগুনার পাথরঘাটায় জামায়াতের কর্মীসভায় সোলায়মান বাহিনীর হামলায় জামায়াতের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর দুই জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাথরঘাটা হাসপাতাল থেকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আসরের নামাজের পর জামায়াতের ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় নেতারা দাবি করেন খুলনা শ্রমিকলীগের নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনির ভাইয়ের ছেলে সোলায়মান সাদিকে তাদের কর্মীদের উপর এ হামলা করেন।পাথরঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাংচেনলা বলেন, এই ঘটনার সত্যতা নাই। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।এর আগে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে মোশারফ হোসেন মোল্লার বাড়িতে জামায়াতের কর্মী বৈঠকে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে জামায়াত।এ ঘটনায় আহতরা হলো- পাথরঘাটা পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম, পাথরঘাটা পৌর প্রচার সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম, জামায়াত কর্মী ওয়ালিদ পহলান, ফুলমিয়া, ইলিয়াস, মোহাম্মদ হানিফ, ফিরোজ হোসেন, মাহবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, ইউনুছ হাওলাদারের নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে আব্দুল কাইয়ুম এবং তাওহিদুল ইসলামকে রেফার করা হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির মাসুদুল আলম বলেন, বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আমরা নাচনাপাড়া ইউনিয়ন এর জামাত কর্মীর বাড়িতে নিয়মিত দলের কর্মসূচি পালন করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথে খুলনা পরিবহন শ্রমিকলীগের নেতা সোলাইমান সাদিক তার বাহিনী নিয়ে আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায় এতে আমাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমরা এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার চাই।এসময় ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি এসএম সোলায়মান বাদশা বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরগুনা-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম মনির ভাইয়ের ছেলে এই সুলাইমান সাদিক একসময়ে খুলনাতে শ্রমিক লীগ সংগঠনের নেতৃত্ব দিতেন। জুলাই আগস্ট এর পর তিনি তার নিজ বাড়িতে এসে বিশেষ বিএনপির নব্য নেতা হিসাবে সমাজকর্মী দাবি করে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছেন।এরপর থেকে পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি জমি দখল সালিশ নামে অন্যের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে আসছে। সোলাইমান সাদিক ফুটপাতের একজন টোকাই থেকে গত এক বছরে কোটিপতি হয়ে গেছেন। আমরা প্রশাসনের কাছে এই সন্ত্রাসীর বিচার দাবি করছি। তা না হলে আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সোলায়মান বাহিনী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও তিনি জানান। এসময় তিনি এই বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য জামায়াতের ও ইসলামী আন্দোলনের সবাই আড়াই হাত গাবের কচা প্রস্তুত রাখতে বলেন।জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলের পরপরই তাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এনামুল হোসেন। এসময় বিএনপির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, সদ্য সাবেক পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এম ইসমাইল সিকদার এসমে সহ বিএনপির সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর পর তারাও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে শহরে উত্তপ্ত ছড়িয়ে পড়ে।এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোলায়মান সাদিক বলেন, আমি ৫ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করতেছি। জামায়াত নেতারা নির্বাচনী ফায়দা নেয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করতেছেন। আমি বিএনপি পরিবারের সদস্য। আমাকে জোর করে শ্রমিকলীগের নেতা বানানো হচ্ছে।তিনি বলেন, আমার চাচা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মনি। তিনি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী। তার জনপ্রিয়তা দেখে জামাত নেতারা নানা রকমের মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাংচেনলা বলেন, জামায়াতের লোকজন যেভাবে বুধবার রাতের ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন আসলে ঘটনানি তেমন না। জামায়াতের কর্মীসভা শেষে স্থানীয় কিছু লোকদের সাথে তর্ক বিতর্ক হয়েছে এমনটাই জানা গেছে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি।রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত তাপের বিষয়ে ওসি বলেন, পাথরঘাটা আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। যাতে কোথায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে অতিরিক্ত নজরদারি রয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি বিষয়টি ওসির কাছ থেকে জেনে নিন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
যে মাঠে ছুটে বেড়ানো শুরু, যে গ্যালারিতে বসে স্বপ্ন দেখেছিল এক কিশোর—সেই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামেই আজ আবেগে ভেসে গেলেন মুশফিকুর রহিম। শততম টেস্ট খেলার মাইলফলক ছুঁয়ে নিজ শহরে ফিরে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ পেলেন ভালোবাসার উষ্ণ সংবর্ধনা।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে তরুণ ক্রিকেটারদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বগুড়ার এই কৃতি সন্তানকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সম্মান জানান জাতীয় দলের বর্তমান তারকা ও আরেক বগুড়াবাসী তৌহিদ হৃদয়। পরিচিত মুখ, চেনা মাঠ আর শৈশবের স্মৃতিতে ভরা পরিবেশে সংবর্ধনা যেন পরিণত হয় এক আবেগঘন পুনর্মিলনে।সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নিজের স্বপ্নের কথা অকপটে জানান মুশফিকুর রহিম। বলেন, উত্তরবঙ্গের মাটিতে প্রতিভার অভাব নেই, অভাব কেবল সুযোগের। সেই অভাব ঘোচাতেই বগুড়ায় একটি মানসম্মত ক্রিকেট একাডেমি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। যেখানে বারো মাস অনুশীলনের সুযোগ থাকবে, থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ। কোনো বিলাসী অবকাঠামো নয়, বরং বাস্তবসম্মত ও কার্যকর একটি ক্রিকেট চর্চাকেন্দ্র গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।নিজের শুরুর দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তরুণদের উদ্দেশে মুশফিক বলেন, আমিও একসময় এই মাঠেই স্বপ্ন দেখেছি। পরিবার আর আল্লাহর রহমতই আমাকে আজকের জায়গায় এনেছে। সময়ের নিয়মে আমরা সরে যাব, কিন্তু হৃদয়-তামিমদের হাত ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে যাবে।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৌহিদ হৃদয় আবেগ লুকাতে পারেননি। তিনি বলেন, মুশফিক ভাইকে দেখেই ক্রিকেটে বড় হওয়া। শৈশবের সেই দিনগুলো আজও চোখে ভাসে। এমন একজন কিংবদন্তির পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা আমার জন্য গর্বের।স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের উদীয়মান ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সংগঠকরা। অনেক খুদে ক্রিকেটারের চোখেমুখে স্পষ্ট ছিল অনুপ্রেরণার আলো।বগুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা—ক্যারিয়ার শেষ করার আগে যেন মুশফিকুর রহিম অন্তত একবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারেন নিজের ঘরের মাঠে। সংবর্ধনা শেষে মাঠে নেমে তরুণদের সঙ্গে সময় কাটান মুশফিক, দেন উৎসাহ আর স্বপ্ন দেখার সাহস।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন মূলত জনগণের ওপর নির্ভর করে। এরপর অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি সহাবস্থানে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে সেটি সবার জন্যই ভালো।এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চলতি মৌসুমে আলু চাষে অনেক কৃষক লোকসানের মুখে পড়েছেন। তবে লোকসান সত্ত্বেও কৃষকরা আবার আলু রোপণে এগিয়ে এসেছেন। সরকার কৃষকদের জন্য প্রণোদনার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, জেলা প্রশাসক নূরমহল আশরাফী, পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।এর আগে তিনি সিরাজদীখান কুসুমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, কুসুমপুর উচ্চ বিদ্যালযের চার তলা একাডেমিক ভবন, ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদ্যমান একাডেমিক ভবনের ওপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ঊর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ, বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন ও রাজদিয়া আব্দুল জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া" প্রতিযোগিতায় এবছরে ফুটবল খেলায় জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রসংশায় ভাসছেন আশুলিয়ার গাজিরচট আকবর মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার প্রতি মনোনিবেশ হতে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে ভিন্নধর্মী খেলাধুলার আয়োজন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটি। তাদের খেলাধুলার মধ্যে ফুটবল খেলা হচ্ছে অন্যতম। খেলাধুলার ধারাবাহিকতায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি "৫২ তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া-২০২৫" প্রতিযোগিতায় ফুটবল বালক জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এই গৌরব অর্জনে পুরো উপজেলায় প্রশংসায় ভাসছেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির বালকরা ৫০তম আন্ত গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয়ে জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হন। পরে অঞ্চল পর্যায়ে রানার্সআপ অর্জণ করেন। ২০২৩ সালের আয়োজিত খেলায় উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয়ে জেলা চ্যাম্পিয়ন এবং এরপরে বিভাগী পর্যায়ে রানার্সআপ হন।পরবর্তীতে ২০২৫ সালে ৫২তম আন্ত গ্রীষ্মকালীন ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা এবং পরে বিভাগী পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপরে ময়মনসিংহ বিভাগের সাথে উপ-অঞ্চল চ্যাম্পিয়ন হয়ে পদ্মা অঞ্চলকে ৭-০ গোলে এবং চাপা অঞ্চলকে ২-০ গোলে রাজশাহী অঞ্চল তাদের কাছে পরাজিত হয়। শেষে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে হাড্ডি- হাড্ডি লড়াই হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বালকরা। গ্রীষ্মকালীণ আন্ত স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি ফুটবল চ্যাম্পিয়ন পদ্মা অঞ্চল জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদেরকে। এবং আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন সাধারন শিক্ষার্থী। কোচ ও ক্রিড়া শিক্ষক।সাধারন শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দেশজুড়ে যে সুনাম বয়ে এনেছেন তাতে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আর এই প্রতিষ্ঠানে মনোরম পরিবেশে লেখাপড়া করতে পেরে আমাদের আরও ভালো লাগছে। সামনের দিনে খেলোয়াড়রা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে পারে আমরা এই কামনা করছি।প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও টিমের অধিনায়ক মো: সায়েম মল্লিক বলেন, আমি ক্যাপ্টেন সি হয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি এবং আমাদের টিমের খেলোয়াড়রা যেভাবে সহযোগীতা করেছেন এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সামনে যাতে করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে পারি এজন্য আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাগুরু সহ সকলের দোয়া ও প্রার্থনা কামনা করছি।প্রতিষ্ঠানের ক্রিড়া শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫৩ সাল থেকে এই অর্জন আমাদের ছিলো না। এরআগে আমরা অঞ্চল পর্যায়ে সুযোগ পেয়ে বিভাগ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এটাই এই প্রথম প্রতিষ্ঠানের অর্জন। এই ধারা যাতে করে ধরে রাখতে পারি, এই জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই প্রতিষ্ঠানের টিমটি সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবেন বলে এমনটাই আশাবাদ ব্যাক্ত করেন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: মোকলেছুর রহমান ইলিয়াচ শাহী।প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল মো: মোজাফফর হোসাইন বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করি, যারা খেলার কোটায় ভর্তি হয়, তাদেরকে অত্র প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে লেখা-পড়ার সুযোগ করে দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতাও করা হয়। এছাড়াও তাদেরকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধািও দেওয়া হয়ে থাকে।আগামীতে যেসকল খেলোয়াড় থাকবে, তাদেরকে পূর্ব থেকেই অনুশীলন দিয়ে এমনভাবে প্রস্তুত করবো, যাতে করে তারা আরও সুনাম বয়ে আনতে পারে। এছাড়া লেখাপড়া ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাভার অঞ্চলের মধ্যে একটি আধুনিক ও মডেল প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষেই নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন বলে আরও জানান তিনি।এদিকে, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, গাজিরচট আকবর মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ফুটবল খেলায় এবছর, যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তা সাভার বাসীর জন্যে গর্বের এবং আনন্দের বিষয়। তাদের এই ধারা যাতে করে অব্যাহত থাকে, এক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন তাদের সাথে থাকবে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা তো থাকবেই, খেলাধুলার জন্য যদি কোন অনুশীলন করার দরকার হয়, তা আমরা সরবরাহ করবো বলেও এই আশ্বাস দেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ