সংকটের সময়ে সুদক্ষ নেতৃত্বের আহ্বান
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট, ডলারের অস্থিরতা ও এলডিসি উত্তরণ-উত্তর বাণিজ্য বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাক শিল্প নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ঠিক এই পটভূমিতে আগামী ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত হয় সম্মিলিত পরিষদের মিট দ্য প্রেস।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, প্যানেল লিডার ও চৈতী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্ণধার মুস্তাজিরুল শোভন ইসলাম।
সম্মিলিত পরিষদের বক্তারা বলেন, এই পরিষদ কেবল ভোটের সময় দৃশ্যমান হয় না বরং গত দুই দশকে যখনই বিজিএমইএর দরকার পড়েছে, সংকট কিংবা সম্ভাবনার সময়, তখনই সংগঠনের পাশে থেকেছেন তারা। তারা বলেন, ‘আমরা শুধু ইশতেহার দিই না, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করি।’
প্যানেল লিডার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চরম প্রতিযোগিতার এই সময়ে প্রয়োজন অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও গভীর বোঝাপড়ার। আমরা বিজিএমইএকে এমন এক আধুনিক ও সেবাকেন্দ্রিক সংগঠনে রূপ দিতে চাই, যেখানে সদস্যদের প্রয়োজনই হবে নীতিনির্ধারণের মূল ভিত্তি।’
তিনি আরও জানান, ২১ মে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। মোহাম্মদ আবুল কালাম আরও বলেন, ‘আমরা গত দুই দশক ধরে বিজিএমইএর সদস্যদের স্বার্থে মাঠে থেকেছি। এবারও আমাদের পরিকল্পনায় থাকবে প্রযুক্তিনির্ভর বিজিএমইএ, স্মার্ট সার্ভিস, নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, এসএমই কারখানার উন্নয়ন, সোলার এনার্জির বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করা।’
সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অতীতে যেভাবে সংকটে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দিয়েছি, ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এই সংগঠন কেবল পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, এটি দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই এর নেতৃত্বে দায়িত্ববান, পরীক্ষিত ও কার্যকর লোকের প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ করেছি সংকটে আমরা সামনে থাকি। আমরা কথা নয়, কাজ দিয়ে নেতৃত্ব দিই। এই পরিষদ গত ২০ বছর ধরে বিজিএমইএর আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পরিষদের নেতারা বলেন, ‘আমরা কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করি না। আমাদের দায়িত্ব দায়িত্বশীলভাবে সদস্যদের পাশে থাকা, তাদের দাবিকে শক্ত কণ্ঠে সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা।’
তারা আরও বলেন, বিজিএমইএ নির্বাচনে যারা এবার প্রথম ভোট দেবেন, সেই তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ভবিষ্যতের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে চাই।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শোভন ইসলাম তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এই নির্বাচন কেবল নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ নয় বরং এটি এমন এক সময়, যখন সঠিক মানুষকে দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা বিজিএমইএকে নতুন যুগে প্রবেশ করাতে পারি।’
সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে সব সদস্যকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের এবং ভবিষ্যতের গতিশীল নেতৃত্ব গঠনে মতামত জানানোর আহ্বান জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট, ডলারের অস্থিরতা ও এলডিসি উত্তরণ-উত্তর বাণিজ্য বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাক শিল্প নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ঠিক এই পটভূমিতে আগামী ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত হয় সম্মিলিত পরিষদের মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, প্যানেল লিডার ও চৈতী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্ণধার মুস্তাজিরুল শোভন ইসলাম। সম্মিলিত পরিষদের বক্তারা বলেন, এই পরিষদ কেবল ভোটের সময় দৃশ্যমান হয় না বরং গত দুই দশকে যখনই বিজিএমইএর দরকার পড়েছে, সংকট কিংবা সম্ভাবনার সময়, তখনই সংগঠনের পাশে থেকেছেন তারা। তারা বলেন, ‘আমরা শুধু ইশতেহার দিই না, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করি।’ প্যানেল লিডার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চরম প্রতিযোগিতার এই সময়ে প্রয়োজন অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও গভীর বোঝাপড়ার। আমরা বিজিএমইএকে এমন এক আধুনিক ও সেবাকেন্দ্রিক সংগঠনে রূপ দিতে চাই, যেখানে সদস্যদের প্রয়োজনই হবে নীতিনির্ধারণের মূল ভিত্তি।’ তিনি আরও জানান, ২১ মে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। মোহাম্মদ আবুল কালাম আরও বলেন, ‘আমরা গত দুই দশক ধরে বিজিএমইএর সদস্যদের স্বার্থে মাঠে থেকেছি। এবারও আমাদের পরিকল্পনায় থাকবে প্রযুক্তিনির্ভর বিজিএমইএ, স্মার্ট সার্ভিস, নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, এসএমই কারখানার উন্নয়ন, সোলার এনার্জির বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করা।’ সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অতীতে যেভাবে সংকটে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দিয়েছি, ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এই সংগঠন কেবল পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, এটি দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই এর নেতৃত্বে দায়িত্ববান, পরীক্ষিত ও কার্যকর লোকের প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ করেছি সংকটে আমরা সামনে থাকি। আমরা কথা নয়, কাজ দিয়ে নেতৃত্ব দিই। এই পরিষদ গত ২০ বছর ধরে বিজিএমইএর আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।’অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পরিষদের নেতারা বলেন, ‘আমরা কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করি না। আমাদের দায়িত্ব দায়িত্বশীলভাবে সদস্যদের পাশে থাকা, তাদের দাবিকে শক্ত কণ্ঠে সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা।’ তারা আরও বলেন, বিজিএমইএ নির্বাচনে যারা এবার প্রথম ভোট দেবেন, সেই তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ভবিষ্যতের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে চাই। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শোভন ইসলাম তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এই নির্বাচন কেবল নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ নয় বরং এটি এমন এক সময়, যখন সঠিক মানুষকে দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা বিজিএমইএকে নতুন যুগে প্রবেশ করাতে পারি।’ সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে সব সদস্যকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের এবং ভবিষ্যতের গতিশীল নেতৃত্ব গঠনে মতামত জানানোর আহ্বান জানানো হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার সুফল মিলেছে। দ্বিতীয় দিনেও টাকার বিপরীতে মার্কিন মুদ্রাটির দাম স্থিতিশীল ছিল। ফলে ডলারের দাম নিয়ে যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল আপাতত তা কেটে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বৃহস্পতিবার অধিকাংশ ব্যাংক আমদানি ঋণপত্র খুলেছে ১২২ টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন ডলারের বিনিময় হারের যে গড় প্রকাশ করে সেখানেও ১২২ টাকায় দাম স্থিতিশীল দেখা গেছে। তবে দুইটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে প্রবাসীদের থেকে ডলার কিনেছে। তারা জানিয়েছে, লাভের বিষয়টি বিবেচনা না করে গ্রাহকের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খোলা বাজারেও একই অবস্থা। আগের মতোই গতকাল প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকা ২০ পয়সায়। মানি চেঞ্জারগুলো প্রতি ডলার কিনেছে ১২৫ টাকা ১০ পয়সায়। গতকাল ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি প্রধানদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে ডলারের দাম অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এর একদিন আগেই বুধবার ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ওইদিন সকালে সকল ব্যাংকের প্রধানদের বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ডেকে ডলারের দাম না বাড়াতে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এমনটা জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি। একই দিনে ৯টি ব্যাংকে বিশেষ পরিদর্শন শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এসব ব্যাংকে ডলারের দাম নিয়ে কারসাজি হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে। পাশাপাশি ডলারের বাজারে হস্তক্ষেপ করতে ৫০ কোটি ডলারের বিশেষ তহবিল গঠনের কথাও বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন গভর্নর। ব্যাংকারদের ভাষ্য, ঈদ সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, ফলে ডলারের সরবরাহও যথেষ্ট রয়েছে। এ কারণে বাজারে কোনও অস্বাভাবিকতা বা ডলার সংকট দেখা যায়নি। এসব কারণে বাজারভিত্তিক করার পর দুই দিনেও ডলারের বিনিময় হার অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের শর্ত পালন করতে গিয়ে গত ১৪ মে ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে দর-দাম আলোচনা করে ডলার লেনদেন করতে পারবে। তবে বাজারভিত্তিক হার চালু হলেও এখনও একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বিনিময় হার বজায় রাখতে হবে, এমন একটি অঘোষিত সীমা ঠিক করে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে যাতে ডলারের দাম বেড়ে গিয়ে জনজীবনে অস্বস্তি বয়ে না আনে। গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাংকগুলো ১২২ থেকে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার লেনদেন করে আসছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পরও আপাতত সেই দামেই লেনদেন হচ্ছে। ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় ঊর্ধ্বমুখী থাকায় এবং বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের দাম কমার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ এখন গ্রহণযোগ্য। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, এই ‘বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা’ যেন অশুভ চক্রের খেলার মাঠে পরিণত না হয়। কেউ যাতে কৃত্রিমভাবে বাজারকে অস্থির করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকও জানিয়েছে, তারা সার্বক্ষণিক বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রতিদিন দুইবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রিপোর্টিং করতে হচ্ছে ডলার কেনা-বেচাকারী ব্যাংকগুলোকে। পাশাপাশি ১ লাখ ডলারের বেশি লেনদেন হলে সাথে সাথেই রিপোর্ট করতে হচ্ছে। ১৪ তারিখ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে রিপোটিংয়ের এই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ। ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দর-কষাকষি চলছিল। মূলত সে কারণে আইএমএফ ঋণের কিস্তি আটকে ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার দৈনিক ভোরের আকাশে সংবাদ প্রকাশিত হয়, বিনিময় হারে নমনীয় করতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারে ঋণের দুটি কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার আগামী জুনে একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয় আইএমএফ। এরপর বুধবার গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সংবাদ সম্মেলন ডেকে জানান, ডলারের বিনিময় হার এখন থেকে ‘বাজার’ ঠিক করবে। ওইদিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইএমএফের মধ্যে কর্মকর্তা পর্যায়ের চুক্তি হয় ঋণের কিস্তি পাওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করায় হঠাৎ রেট অনেক বেড়ে যাবে না, সংবাদ সম্মেলনে এমন আশ্বাস দিয়ে গভর্নর বলেন, ডলার রেট অনেক দিন এক জায়গায় অর্থাৎ ১২২ টাকায় আছে। এখনো এটি আশপাশেই থাকবে। বাংলাদেশের ডলারের রেট বাংলাদেশের মাটিতেই ঠিক হবে, অন্য কোনও দেশে ঠিক হবে না বলেও ওইদিন দৃঢ় বক্তব্য দেন আইমএফের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর। এদিকে ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ডলারের বাজার এখন স্থিতিশীল। বাজারভিত্তিক ব্যবস্থার দিকে যাওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে এখন সবাইকে নিজেদের জায়গা থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে। কেউ যদি সুযোগ নিয়ে ডলারের বাজারে কৃত্রিম চাপ তৈরির চেষ্টা করে, সেটা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে। আমরা আশাবাদী বাজার স্থিতিশীল থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা ভোরের আকাশ’কে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে ‘ক্রলিং পেগ’ নামে একটি নতুন বিনিময় হার পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারণ করে। এটিও চালু হয়েছিল আইএমএফের পরামর্শে। এই পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রা বেচা-কেনায় এতদিন আড়াই শতাংশ হারে বাড়ানো বা কমানো যেত। ক্রলিং পেগে বর্তমানে প্রতি ডলারের মধ্যবর্তী দর ১১৯ টাকা। এর সঙ্গে বিদ্যমান আড়াই শতাংশের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ করিডোর (সীমা) দেওয়া হতে পারে। এতে করে যদি বাড়ে তাহলে সর্বোচ্চ এক থেকে ২ টাকা বাড়বে। তবে বর্তমান বিশ্ব বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করলে বাড়ার সম্ভাবনা কম। আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ সর্বশেষ বৈঠকে এই করিডোর ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার জন্য চাপ দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে এটি ৫ শতাংশের বেশি করতে স্পষ্ট ও কঠোর নারাজি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তেই সম্মতি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দেওয়ার পর ওইদিন সন্ধ্যায় ঋণ ছাড়ের বিষয়ে একটি স্টাফ-লেভেল চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে বলে আইএমএফ তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে। এই অর্থ ছাড় হলে ইসিএফ, ইএএফ ও আরএসএফ মিলিয়ে আইএমএফ-এর মোট ঋণ সহায়তা দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদনের পর এই অর্থ ছাড় হবে জুনে। এদিকে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান বলেছেন, সংস্কারের বিষয়ে বাংলাদেশের যে সদিচ্ছা আছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সেই বার্তা দিতেই ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ’ (এমএমআই) শীর্ষক অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কাক্সিক্ষত মাত্রার চেয়ে ডলারের দাম বেশি বেড়ে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার পর বুধবার টাকার বিনিময় হার কিছুটা ওঠানামা করলেও সেভাবে অবমূল্যায়ন হয়নি। অর্থাৎ অবমূল্যায়নের চাপ দেখা যায়নি। আরও দুয়েক দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তখন বোঝা যাবে, কী হতে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সুন্দর ভারসাম্য তৈরি হয়েছে। ফলে টাকার বিনিময় হারের অনাকাক্সিক্ষত অবমূল্যায়ন বা চাপ আসবে না বলে মনে করছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মনে করে, কাক্সিক্ষত মাত্রার চেয়ে টাকার বেশি অবমূল্যায়ন হয়েছে, তাহলে হস্তক্ষেপ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সেই হাতিয়ার আছে বলে জানান ড. হাবিব।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশের স্বর্ণ বাজারে আবারও বড় পরিবর্তন এসেছে। ভরিতে ৩ হাজার ৪৫২ টাকা কমিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৪ টাকা। আগামীকাল শুক্রবার (১৬ মে) থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে।বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে বাজুস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমার কারণে দেশের বাজারেও দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী:২২ ক্যারেট স্বর্ণ (প্রতি ভরি): ১,৬৫,৭৩৪ টাকা২১ ক্যারেট স্বর্ণ (প্রতি ভরি): ১,৬১,৫০০ টাকা১৮ ক্যারেট স্বর্ণ (প্রতি ভরি): ১,৩৮,৪২৮ টাকাসনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ (প্রতি ভরি): ১,১৪,৪৩৬ টাকাবাজুস আরও জানিয়েছে, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ৫% সরকার নির্ধারিত ভ্যাট এবং ৬% বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।এর আগে ১৩ মে স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৬ টাকা। সেই দামের তুলনায় এবার তা কমানো হলো ৩,৪৫২ টাকা।চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে মোট ৩৪ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ বার দাম বেড়েছে, আর ১২ বার কমেছে। ২০২৪ সালে মোট ৬২ বার দাম সমন্বয় হয়েছিল, যার মধ্যে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয় এবং ২৭ বার কমানো হয়।এদিকে, রুপার দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বর্তমানে রুপার দাম নিম্নরূপ:২২ ক্যারেট রুপা (প্রতি ভরি): ২,৮১১ টাকা২১ ক্যারেট রুপা (প্রতি ভরি): ২,৬৮৩ টাকা১৮ ক্যারেট রুপা (প্রতি ভরি): ২,২৯৮ টাকাসনাতন পদ্ধতির রুপা (প্রতি ভরি): ১,৭২৬ টাকাভোরের আকাশ//হ.র
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় স্কয়ার ফার্মার উৎপাদন ব্যবস্থা দেখে প্রশংসা করলেন জাম্বিয়ার ব্যবসা, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব ক্রুসিভিয়া সি. হিচিকুম্বা।বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানা পরিদর্শন করেন তিনি।কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানা ও উৎপাদন ব্যবস্থা পরিদর্শনে জাম্বিয়ার কমার্স, ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রি (ব্যবসা, বাণিজ্য ও শিল্প) মন্ত্রণালয়ের ১৪ জনের একটি প্রতিনিধি দল। পার্মানেন্ট সেক্রেটারি ক্রুসিভিয়া সি. হিচিকুম্বার (CRUSIVIA C. HICHIKUMBA) ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান স্কয়ার ফার্মার নির্বাহী পরিচালক, টেকনিক্যাল অপারেশনস নওয়াবুর রহমান, মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সুরজিৎ মুখার্জী ও ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন। জাম্বিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত শাহ আহমেদ শফি, জাম্বিয়ার শিল্প মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুসোকুতোওয়ানে সিচিজুয়ে (MUSOKOTOWANE SICHIZUWE) সহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘুরে ঘুরে প্রতিনিধিদলকে পুরো কারখানার উৎপাদন ও কারিগরি কার্যক্রম দেখান।স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এসএফআরএল অ্যামেনিটি ভবনের সভাকক্ষে কোম্পানির সামগ্রিক বিষয়ে জাম্বিয়ার শিল্প মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি ও তাঁর সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদলকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানান স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক টেকনিক্যাল অপারেশনস নওয়াবুর রহমান।পরে নওয়াবুর রহমান বলেন, জাম্বিয়ার প্রতিনিধি দলের স্কয়ার ফার্মা পরিদর্শন বাংলাদেশকে বিদেশে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা বড় সুযোগ। এভাবে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানির একটি বড় ক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে। ভোরের আকাশ/এসআই