বাংলাদেশে চীনের আধিপত্য বাড়ছে
গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের বাণিজ্যিক প্রভাব অভূতপূর্ব হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো খাতে চীনের সম্পৃক্ততাকে অর্থনৈতিক আধিপত্য হিসেবে দেখাতে চাইছেন কেউ কেউ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে চীনের রপ্তানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যে আধিপত্য এখন চীনা পণ্যের। দেশের মোট আমদানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসছে পূর্ব এশিয়ার দেশটি থেকে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মোট আমদানির ৩০ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। একই সময়ে ভারত থেকে আমদানি হার ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিবেশি দেশটির প্রায় দ্বিগুণ পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করছে চীন।
দেখা গেছে, টেক্সটাইলের কাঁচামাল, ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও ভারী যন্ত্রপাতিতে চীনের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
বিবিএসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে বাংলাদেশের আমদানি বাজারে চীনের আধিপত্য গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর সময়ে বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ এসেছে চীন থেকে, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় সারে ৫ শতাংশ বেশি।
এর আগে, নভেম্বরে ২৮ দশমিক ১২ শতাংশ পণ্য এসেছে চীন থেকে। আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার সারে ৫ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে ২৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ পণ্য দেশটি থেকে এসেছে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সারে ৭ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বাজারে দিন দিন চীনা পণ্যের আধিপত্য বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে রয়েছে শিল্প খাতের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য দেশটির ওপর নির্ভরতা এবং চীনের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও বাণিজ্যিক কৌশল। বাংলাদেশের শিল্প মালিকরা যেকোন দেশের চেয়ে কম দামে চীন থেকে কাঁচামাল ও শিল্প যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে পারছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজার ধরতে চীন নানা ধরনের বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। চীনের পর ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক অংশীদার। এর আগে ভারতই বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ছিল।
গত ডিসেম্বরে ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ দেশের মোট আমদানির ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় যা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের তৃতীয় অংশীদার ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানির ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় ১ শতাংশ কম। বাংলাদেশে চীনের রপ্তানি বাড়ার পেছনে তিনটি কারণ জানা গেছে। চীনের পণ্য অন্যান্য দেশের তুলনায় সাশ্রয়ী। পাশাপাশি বিলম্বিত পেমেন্ট সুবিধা রয়েছে দেশটিতে। শিল্পযন্ত্রপাতি ক্রয়ে সুবিধা পায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এছাড়া চীনে বর্তমানে ডিফ্লেশন বা স্ফীতিহ্রাস চলছে। অর্থাৎ এখানে সব পণ্যের দাম পূর্বের তুলনায় কমে গেছে। যে কারণে দেশটির রপ্তানিকারকরা কম দামে বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে পারছেন।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতি বিশ্লেষক মো. মাজেদুল হক বলেন, চীনে বর্তমানে ডিফ্লেশন চলছে, যার কারণে তাদের রপ্তানি পণ্যের দাম কমেছে। এ সুযোগ নিয়ে তারা বাংলাদেশের বাজারে আধিপত্য দেখাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ হিসেবে সামনে এসেছে। বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগও বাড়ছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এছাড়া দেশটি থেকে বাংলাদেশের নেওয়া ঋণের পরিমাণ সারে ৭ বিলিয়ন ডলারের মতো।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্য যেমন সুযোগ এনেছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। এখন সময় এসেছে এই সম্পর্ককে কিভাবে আরও সমতাভিত্তিক ও টেকসই করা যায় সে বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো কলমবিরতি পালন করছেন কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কর অঞ্চল, ভ্যাট ও কাস্টমস অফিসে একযোগে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।আজ সকাল ১০টায় অফিস যথারীতি শুরু হলেও সব ধরনের কার্যক্রম আসলে বন্ধ রয়েছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলেই অফিস উপস্থিত রয়েছেন।রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজ, কমলাপুরের আইসিটিতে অ্যাসেসমেন্ট বন্ধ রয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম এবং এনবিআরের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতা বহির্ভূত রয়েছে। আগামী ১৭ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্তও একইভাবে কলমবিরতি কর্মসূচি চলবে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়।প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এর পরিবর্তে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই এনবিআর কর্মকর্তারা কর্মসূচি পালন করছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিশ্বের সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত পরিবেশবান্ধব শিল্প কারখানা এখন বাংলাদেশে। গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত তাসনিয়া ফেব্রিক্স লিমিটেডের অ্যাডমিন ভবন অর্জন করেছে লিড সনদপ্রাপ্ত ভবনের মর্যাদা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল প্রদত্ত এই সনদ অনুযায়ী ভবনটির রেটিং পয়েন্ট ১০৭, যা এখনও পর্যন্ত বিশ্বে সর্বোচ্চ।এর আগে বাংলাদেশেরই আরেকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান এস. এম সোরসিং ১০৬ পয়েন্ট পেয়ে বিশে^ শীর্ষে ছিল। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন দিগন্তে পৌঁছেছে তাসনিয়া ফেব্রিক্স। সম্প্রতি আরও দুটি কারখানা লিড সার্টিফায়েড তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তাসনিয়া ফেব্রিক্সের নিজস্ব আরএমজি বিল্ডিং (১০৬ পয়েন্ট) এবং টাঙ্গাইলের গরইয়ে অবস্থিত কমফিট গোল্ডেন লিফ (৮০ পয়েন্ট)। এগুলোও প্লাটিনাম স্তরের সনদ পেয়েছে।এর ফলে দেশে লিড সার্টিফায়েড পোশাক কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪৩টিতে। এর মধ্যে ১০১টি প্লাটিনাম এবং ১২৮টি গোল্ড সার্টিফায়েড। শুধু তাই নয়, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ সবুজ কারখানার মধ্যে ৬৮টিই এখন বাংলাদেশের। এটি দেশের পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের এক অনন্য মাইলফলক।বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনায় বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক রোল মডেল। একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে তোলা ও সর্বোচ্চ মান রক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে পরিবেশবান্ধব রূপান্তরের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।শিল্প উদ্যোক্তারা জানান, পরিবেশবান্ধব কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের গায়ে ‘গ্রিন ট্যাগ’ যুক্ত থাকে, যা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাড়তি আস্থা তৈরি করে। ফলে এসব পণ্য দরকষাকষিতে সুবিধা পায় এবং দেশের ব্র্যান্ড ইমেজও সমৃদ্ধ হয়। মূলত, বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল-ইউএসজিবিসি। তারা ‘লিড’ নামে পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। লিড হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন।জানা গেছে, সাধারণ কারখানা বা স্থাপনার তুলনায় পরিবেশবান্ধব স্থাপনায় গড়ে ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি ব্যয় হয়। এছাড়া লিড সনদ পেতে একটি ভবনকে নির্মাণের প্রতিটি স্তরে অন্তত ৯টি কঠোর পরিবেশগত শর্ত পূরণ করতে হয়। এ ধরনের সনদ শুধু নতুন ভবনের ক্ষেত্রেই নয়, পুরনো ভবন সংস্কারের পরও অর্জন করা যায়। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসজিবিসি বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত একটি প্রতিষ্ঠান, যারা নির্মাণকাজে পরিবেশ ও জ্বালানির টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করে ‘সবুজ ভবনের’ মান নির্ধারণ করে। তাদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ, কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণ পর্যায়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করলেই এই সনদ মেলে।গার্মেন্টস খাতের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, বাংলাদেশে গ্রিন ফ্যাক্টরির স্বীকৃতি বাড়ার কারণে প্রচলিত বাজার তথা ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে নতুন বাজারগুলো থেকে বাড়তি অর্ডার আসছে। এতে সার্বিকভাবে রপ্তানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। আর এই পোশাক রপ্তানির ওপর ভর করে দেশের অর্থনীতিও জোর কদমে এগিয়ে চলেছে।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গার্মেন্ট খাতে বহুমুখী সমস্যা থাকার পরও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের সামগ্রিক রপ্তানি খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ইপিবির তথ্য বলছে, জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ (১৭ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার) এবং ওভেন পোশাক বেড়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ (১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার)। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ঈর্ষণীয়।ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.২৫ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৪৪ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতের ধারাবাহিক শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি।সংস্থাটির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩৭.১৯ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৩৩.৬১ বিলিয়নের তুলনায় ১০.৬৩ শতাংশ বেশি। এই ৯ মাসে তৈরি পোশাক খাত এককভাবে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি। মার্চ মাসেই খাতটি ১২.৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, এতে আয় হয়েছে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের মার্চে এর পরিমাণ ছিল ৩.০৭ বিলিয়ন ডলার।জানা গেছে, সবুজ কারখানায় বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। ২০২১ সালে সবুজায়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএসজিবিসির পক্ষ থেকে ‘লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে বিজিএমইএ। বৈশ্বিক পোশাক শিল্পে এ ধরনের স্বীকৃতি এটাই প্রথম এবং বিজিএমইএ-ই একমাত্র সংগঠন, যারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমন সম্মান পেয়েছে।বাংলাদেশে সবুজ কারখানার পথচলা শুরু হয় ২০১২ সালের মে মাসে পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে। সে বছরই উদ্যোক্তা সাজ্জাদুর রহমান মৃধার প্রতিষ্ঠিত ‘ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও’ বিশ্বের প্রথম এলইইডি প্লাটিনাম সার্টিফায়েড পোশাক কারখানার স্বীকৃতি পায়। এই কারখানাকে ঘিরেই দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনার নতুন ধারা সূচিত হয়। তবে পরিবেশবান্ধক কারখানা গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব পায় ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৪ জন শ্রমিক নিহত ও কয়েক হাজার আহত হওয়ার পর। এই ভয়াভহ দুর্ঘটনার পর শিল্পে নিরাপত্তা ও পরিবেশ সচেতনতা লক্ষ্যণীয়ভাবে বাড়ে। সে সময় থেকে উদ্যোক্তারা নিরাপদ, কর্মবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তুলতে ব্যাপক বিনিয়োগ শুরু করেন।এক বছরের মধ্যেই ২০১৪ সালে দেশে লিড সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানা দাঁড়ায় ৩টিতে। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১টিতে। এরপর ধারাবাহিকভাবে ২০১৬ সালে ১৬টি, ২০১৭ সালে ১৮টি, ২০১৮ সালে ২৪টি, ২০১৯ সালে ২৮টি, ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রতি বছর ২৪টি করে মোট ৪৮টি কারখানা গড়ে তোলা হয়। এই ধারাবাহিক অগ্রগতির ফলে ২০২৫ সালের শুরুতে দেশে এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ পোশাক কারখানার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪৩টিতে।সবুজ কারখানা নির্মাণে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অ্যাডিশনাল এমডি মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক অর্জন, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পরিবেশবান্ধব রূপান্তরের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি কেবল টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ দেখায় না, বরং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করে এবং নতুন বাজার ও মূল্য সংযোজনের সুযোগ তৈরি করে। বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা যে উদ্ভাবন ও দূরদর্শিতার পথে এগিয়ে চলেছেন, এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তারই বাস্তব প্রতিফলন, উল্লেখ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি কেবল একটি রেটিং বা সনদ নয়, বরং সবুজ শিল্পায়নের পথে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, তার একটি শক্তিশালী দিকনির্দেশনা ও প্রতিশ্রুতি। একসময় অনেকে ভাবতেন এত খরচ করে লিড সার্টিফিকেট নেওয়ার প্রয়োজন কী। এখন সবাই বুঝতে পারছেন, সাসটেইনেবল হতে গেলে এর কোনও বিকল্প নেই। সারা বিশ্ব যখন টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকে মনোযোগী, তখন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাত পরিবেশবান্ধব রূপান্তরের মাধ্যমে শুধু নিজেকে নয়, গোটা শিল্প খাতকেই বিশ্বদরবারে একটি আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যায় এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় সবুজ কারখানার গর্বিত রোল মডেল।’ভোরের আকাশ/এসএইচ
ডলারের বিনিময় হারে ‘অদৃশ্য’ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে বাজারমুখী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার পাওয়ার শর্ত পূরণ করতে গিয়ে ডলারের বিনিময় হার বাজারমুখী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে আইএমএফের ঋণ সহ প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে, যা আগামী জুনের মধ্যেই পাবে বাংলাদেশ। এই সুখবর জানাতে গতকাল বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন গভর্নর।দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে গভর্নর জানান, গতকালই আইএমএফের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগামী মাসের শেষে ঋণের কিস্তি ছাড়করণের প্রস্তাব আইএমএফের পর্ষদ সভায় উঠছে।সংবাদ সম্মেলনের আগে গতকাল সকালে দেশের সকল ব্যাংকের (এডি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ডেকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে ডলারের বিনিময় হার বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান গভর্নর।তবে গতকাল দিনের লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ডলারের বিনিময় হারে দৃশ্যমান কোনও পরিবর্তন আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গতকালের বিনিময় হার ১২২ টাকাই দেখা গেছে। এর আগের দিনেও একই হারে ডলার কেনা-বেচা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বিনিময় হার নির্ধারণের নতুন এই পদ্ধতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে স্বাধীনভাবে ডলার লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট ঊর্ধ্ব ও নিম্ন সীমা বজায় রাখবে, যা বাজার পর্যবেক্ষণ কৌশলের অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হবে না। পাশাপাশি বাজারে হস্তক্ষেপ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি তহবিল ব্যবহার করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনিময় হার নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করার উপক্রম হলে ওই তহবিল থেকে ডলার বিক্রি করে বাজারে হস্তক্ষেপ করবে।বৈদেশিক মুদ্রার বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কত ডলারের তহবিল করা হয়েছে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, আমরা ৫০ কোটি ডলারে ফান্ড তৈরি করেছি। যদি প্রয়োজন হয় তখন এই তহবিল ব্যবহার করে আমরা বাজারে হস্তক্ষেপ করবো যাতে কেউ ডলারের দাম নিয়ে খেলতে না পারে। সিন্ডিকেটদের সতর্ক করে দিয়ে গভর্নর বলেন, ডলারের বাজারে সিন্ডিকেশন করতে আসবেন না। তাহলে কিন্তু হাত পুড়ে যাবে।আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা ডলার বাজারমুখী করেছি এর অর্থ এই নয় যে ডলার যেকোনো দামে বিক্রি করা যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, আমরা আশা করি বাজারে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থাকায় বিনিময় হার বর্তমান হারের কাছাকাছি থাকবে। আশা করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে না, তবে প্রয়োজনে তা করবে।তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে অংশগ্রহণকারীর মতো ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান জানান, আইএমএফের ১.৩ বিলিয়ন ডলার তহবিলের পাশাপাশি জুনের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির মতো বিভিন্ন উন্নয়ন অংশীদার থেকে মোট প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার পাবে।এদিকে গতকাল ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে ১৪০ কোটি মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা পাচ্ছে সরকার। আগামী জুনের মধ্যে এসব বাজেট সহায়তার ঋণ চুক্তি সই হবে। ইতোমধ্যে সংস্থা দুটি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আন্তজাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে এসব বাজেট সহায়তা কার্যক্রমও এতদিন আটকে ছিল। আইএমএফর কাছে থেকে জুনে দুই কিস্তি ছাড়ের আশ্বাস পেয়ে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাজেট সহায়তা আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে।ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের কাছ থেকে সবুজ সংকেট পেয়েই বাজেট সতায়তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি শুরু করেছে ইআরডি। এর অংশ হিসেবে গতকাল ‘রেজিলিয়েন্স আন্ড রিকভারি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট-২’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ৫০ কোটি ডলার সহায়তা নিয়ে আলোচনা সভা ইআরডিতে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইআরডি, অর্থ বিভাগ এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এর আগে মঙ্গলবার আলাদা দুটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এডিবির সঙ্গে। এর মধ্যে ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্মস সাবপ্রোগ্রাম-১ কর্মসূচির আওতায় ৫০ কোটি ডলার এবং ক্লাইমেট রিসপন্সিভ ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম- সাবপ্রোগ্রাম-২ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা নিশ্চিয়তা পাওয়া গেছে।জানা গেছে, ডলারের বিনিময় হার নিয়েই আইএমএফের তহবিল পাওয়ার বিষয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশে আইএমএফ মিশন ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। অন্যদিকে এই সুপারিশের বিরোধিতা করছিল এই যুক্তিতে যে, এটি বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।আইএমএফের পরামর্শ অনুসরণ করে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ক্রলিং পেগ প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে একটি রেফারেন্স রেটভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করে। কয়েক দিন পর, ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও একটি নির্দেশনা জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে প্রতিটি আমেরিকান ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের সর্বোচ্চ ব্যবধান ১ টাকার মধ্যে রাখার নির্দেশ দেয়, যা আইএমএফের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ তারা মনে করে, এই নির্দেশনা ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে।গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সংবাদ সম্মেলনের পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করে ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের স্প্রেড বা তারতম্য সীমা বাতিল করে। আইএমএফ ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে মোট ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু কর্মকর্তা নিয়ে গভর্নরের বর্তমানে দুবাইতে অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুটো লক্ষ্য নিয়ে আমি দুবাইতে এসেছি। মুদ্রাবাজারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। মানি চেঞ্চারদের সাথেও আলোচনা হবে। বিভিন্ন প্রতিনিধি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের যারা বিনিয়োগকারী এবং যারা বিনিয়োগ করতে চায় তাদের সাথেও আলোচনা হবে। আমরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করার জন্য এখানে এসেছি।১৮টি ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন আটকে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, প্রথমত এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদ্যমান নীতিমালা প্রয়োগ করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নীতিমালা প্রয়োগ করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর অসুবিধা হচ্ছে। তারা সময় চেয়েছে। আমরা এক মাস সময় দিয়েছি।এখন যাদের প্রতিবেদন আটকে গেছে, তাদের মধ্যে কোন কোন ব্যাংক সামনে অবলোপনে যাবো। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন সেটা জানে। এখানে আমানতকারীদের স্বার্থে আমাদের যা করণীয় তা করবো। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার কাজ বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়। পুঁজিবাজার সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে বুঝে শুনেই বিনিয়োগ করতে হবে। এখানে স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের অপরাধের কারণে যদি প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়ে সেটার দায় তাদেরই নিতে হবে। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, তারা ওই ব্যাংকের অবস্থা জেনে শুনেই বিনয়োগ করেছেন। তবে আমি মনে করি, দিন শেষে আমাদের উদ্যোগ সবার জন্যই ভালো হবে। কিন্তু এস আলম, সাইফুজ্জামানদের মতো বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো হবে না। এখানে এরা ক্ষতির শিকার হবেই।ভোরের আকাশ/এসএইচ
মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দিয়েছেন মো. সাফায়েত আলম। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই গ্রাহক সেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।সোমবার (১২ মে) তিনি এ দায়িত্ব নেন। তিন দশক ধরে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসহ স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন মো. সাফায়েত আলম। এসব জায়গায় তিনি মূলত ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন্স, ইনফরমেশন টেকনোলোজি, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ বিভিন্ন খাতে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করেন।২০১৯ সালে বাণিজ্যিকভাবে নগদের যাত্রার আগ থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। তারপর থেকে গত সাত বছরে নগদের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতৃত্ব দেন। এখন প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন মো. সাফায়েত আলম।নগদের নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে মো. সাফায়েত আলম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিটি নিয়ম ও বিধিবিধান মেনে খুব কম সময়ে দেশের এমএফএস মার্কেটে একটি সাড়া জাগানো ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নগদ। সামনের দিনেও তাদের পরামর্শ নিয়ে গ্রাহক সেবাকে আরও ত্বরান্বিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা আমাদের থাকবে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক নির্দেশনায় দেশে ক্যাশসেল প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করতে চাই।তিনি বলেন, নগদ নানাভাবে তার উদ্ভাবন দিয়ে মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। এখন আমরা এর পরিধিকে আরও বিস্তৃত করতে চাই। ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগির চুক্তির আওতায় পরিচালিত নগদে বর্তমানে আট কোটির বেশি গ্রাহক রয়েছে। সারা দেশে তিন লাখের বেশি উদ্যোক্তা পয়েন্টের মাধ্যমে বিস্তৃত সেবা সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। শুরু থেকেই সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের খরচের বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখে প্রতিষ্ঠানটি। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাজারের সর্ব নিম্ন চার্জে ক্যাশআউট এবং ফ্রি সেন্ড মানি সেবা দিয়ে আসছে নগদ। ফলে সহজেই ডিজিটাল আর্থিক সেবার সুবিধা নেওয়ার স্বাধীনতা পেয়েছে গ্রাহক। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে দিনে দুই হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হচ্ছে নগদের মাধ্যমে।গত আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে তখন উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হন মো. সাফায়েত আলম। গত সপ্তাহে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত নগদে প্রশাসক নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেন। তারপরই প্রতিষ্ঠানটির নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ