সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী। সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। তার একটি হচ্ছে বিছনাকান্দি। সিলেটের অনেক গুলো পর্যটন স্থানের মধ্যে বিছানাকান্দি অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
বিছনাকান্দি যে কোন সময় ভ্রমণের জন্যে উপযুক্ত। তবে বর্ষাকাল বিছানাকান্দি ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহ থাকার কারণে এ সময় বিছানাকান্দির প্রকৃত সৌন্দর্য্য দেখতে পাওয়া যায়। বছরে অন্য সময় এখানে পাথর উত্তোলনের কারণে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে সিলেট বেশ জনপ্রিয়। সিলেটজুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে বিছনাকান্দি অন্যতম। চাইলে একদিনে ঘুরে আসতে পারেন বিছনাকান্দি থেকে। সেখানকার পাহাড়, ঝরনা ও পাথরের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিছনাকান্দি। জাফলং ও ভোলাগঞ্জের মতোই বিছনাকান্দি একটি পাথর কোয়ারী। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের খাসিয়া পাহাড়ের অনেকগুলো ধাপ দু’পাশ থেকে এসে বিছনাকান্দিতে মিলিত হয়েছে।

একই সঙ্গে মেঘালয় পাহাড়ের খাঁজে থাকা সুউচ্চ ঝরনা বিছনাকান্দির প্রকৃতিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। পর্যটকদের কাছে বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা স্বচ্ছ জলধারা।
আর পাহাড়ে উপরে ভেসে চলা মেঘের খেলা তো আছেই। প্রথম দেখায় আপনার মনে হবে এ যেন এক পাথরের বিছানা। বিছনাকান্দির স্বচ্ছ পানি দেখেই আপনার তাতে গা এলিয়ে দিতে ইচ্ছে হবে।
তবে বিছনাকান্দির অপরূপ সৌন্দর্য আপনি যে কোনো সময় উপভোগ করতে পারবেন না। বিছনাকান্দি ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো জুন-সেপ্টেম্বর মাস।
এ সময়ের মধ্যে চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহ থাকে। ফলে পানির মধ্যে ভেসে থাকা বড় বড় পাথর সেখানকার সৌন্দর্য বাড়ায়। আর অন্যসময় গেলে আপনি পানির দেখা পাবেন না। তাই উপযুক্ত সময়ের মধ্যেই বিছনাকান্দি ভ্রমণে যান।

বিছনাকান্দি কীভাবে যাবেন?
প্রথমেই সিলেট যেতে হবে আপনাকে। তারপর সিলেট শহরের যে কোনো স্থান থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে যান হাদার বাজার। ভাড়া নেবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।
আবার সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেক্ষেত্রে প্রতি সিএনজিতে ৪ জন করে যাওয়া যায়, ভাড়া পড়ে জনপ্রতি ৮০ টাকার মতো। সময় লাগতে পারে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
হাদার বাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছনাকান্দি পর্যন্ত। ৫০০ টাকা ভাড়ায় আসা-যাওয়ার জন্য রিজার্ভ নৌকা পেয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে দামাদামি করতে হবে। ১০০০-১৫০০ পর্যন্তও দাম চাইতে পারে মাঝিরা।
এজন্য দামাদামি করে উঠবেন। হাদার বাজার থেকে বিছনাকান্দির দুরত্ব খুব একটা বেশি না। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যেতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগবে। সেখানে পৌঁছে বিছনাকান্দি ঘুরে আবার নৌকাতে চড়েই ফিরতে হবে হাদার বাজার।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
প্রায় দুই হাজার বছর আগে লেখা রোমান লেখক পেট্রোনিয়াসের স্যাটিরিকান গ্রন্থে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত মসলিন বস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। তাঁর বর্ণনায় মসলিন ছিল যেন হাওয়ায় বোনা কাপড়। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ লিখেছিলেন, মসলিন যেন ভোরের কুয়াশা দিয়ে বোনা। কী চমৎকার সব কাব্যিক উপমা!যে কাপড়কে নিয়ে এত উপমা, সেই কাপড় আসলে কি হাওয়া বা কুয়াশা দিয়ে বোনা হতো? নিশ্চয়ই না। এ দুটির কোনোটি দিয়েই কাপড় বা বস্ত্র বয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু সে কাপড়ের মাধুর্য ও সৌন্দর্য এমনই ছিল যে তা দেখে এরূপ মনে হতো। আসলে মসলিন বোনা হতো এক বিশেষ ধরনের তুলা থেকে তৈরি করা সূক্ষ্ম বা মিহি সুতা দিয়ে। সে সুতা তৈরি হতো ফুটি কার্পাস তুলা থেকে।গাজীপুরের শ্রীপুরে বাংলাদেশ তুলা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরীক্ষামূলক খামারে ফুটে উঠেছে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী দেশি তুলা ফুটি কার্পাস। আবহাওয়ার পরিবর্তন, কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতের জনপ্রিয়তার কারণে বহু বছর ধরে হারিয়ে যেতে বসা এ দেশি তুলার পুনরুদ্ধার কৃষি গবেষণায় উদ্দীপনা তৈরি করেছে।গবেষকদের মতে, ফুটি কার্পাস ছিল বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে একসময়ের পরিচিত তুলা গাছ। তবে উচ্চ ফলনের জাত,উৎপাদন ব্যয় এবং চাষাবাদের ধরনে পরিবর্তনের কারণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ জাতটির সঙ্গে পরিচিতি হারিয়ে গেছে। দীর্ঘদিনের গবেষণা, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পর অবশেষে এ প্রজাতি পুনরুদ্ধারে সফল হয়েছে তুলা গবেষণা ইনস্টিটিউট।সংরক্ষিত বীজ থেকে পুনরায় চারা উৎপাদন বাংলাদেশ তুলা গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানান, সংগ্রহ করা সংরক্ষিত বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি প্লটে রোপণ করা হয়। এ বছর এসব গাছে স্বাভাবিকভাবেই ফুল ফুটেছে। গবেষকদের ধারণা, এ সফলতা ভবিষ্যতে দেশীয় তুলার জিনগত বৈচিত্র্য রক্ষা ও নতুন জাত উদ্ভাবনে বড় ভূমিকা রাখবে।সংগৃহীত ছবিখামারের কটন অ্যাগ্রোনমিস্ট মো. আবদুল ওয়াহাব জানান, দিনাজপুর, বাগেরহাট, গাজীপুরের কাপাসিয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করা চার জাতের চারা গত বছরের ২৯ আগস্ট রোপণ করা হয়। প্রতিটি জাতের চল্লিশটি করে গাছ এখন মানুষের দ্বিগুণ উচ্চতা ছুঁয়েছে। শক্ত বাকলযুক্ত গাছগুলোতে ইতোমধ্যে ধরেছে তুলার গুটি। কিছু গাছে দুই দফায় ফুলও ফুটছে। হালকা হলুদ রঙের ফুল দুপুরে গোলাপি হয়ে যায়—যা ফুটি কার্পাসের স্বাতন্ত্র্য। প্রায় ১৫ বছর আয়ুষ্কালের এই গাছের আঁশ ছোট হলেও অত্যন্ত সূক্ষ্ম, শক্ত ও উজ্জ্বল—যা মসলিন তৈরির আদর্শ উপাদান।তুলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা আ. ন. ম. জহির উদ্দিন বলেন, ফুটি কার্পাস সংরক্ষণ ও এর চাষ সম্প্রসারণ মসলিন পুনরুদ্ধার প্রকল্পকে আরও ত্বরান্বিত করবে। ভবিষ্যতে এ জাতের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হলে দেশীয় তুলা উৎপাদনে ব্যাপক সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে।সংগৃহীত ছবিবাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের প্রধান পরিকল্পনা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিচালক মো. আইয়ুব আলী বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় ফুটি কার্পাস তুলার জাত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পুনরুদ্ধারকৃত ফুটি কার্পাস তুলায় বীজের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং ফাইবারের পরিমাণ কম। এছাড়া গাছের উচ্চতা সাধারণত ১৩ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এসব সীমাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে বীজের পরিমাণ কমানো, ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং গাছের উচ্চতা কমানোর জন্য গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।তিনি আরও জানান, টেক্সটাইল অংশে অধিক পরিমাণে সুতা উৎপাদন, সুতার স্ট্রেংথ বৃদ্ধি, কাপড়ের উৎপাদন খরচ কমানো এবং প্রি-উইভিং প্রক্রিয়া উন্নয়নের ওপরও গবেষণা চলমান রয়েছে।বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা ও কাপড় তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মাধ্যমে সফলভাবে ফুটি কার্পাস তুলা, মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি এবং মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।আগামী মৌসুম থেকে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার চাষিদের জন্য চাষাবাদ খরচ বাবদ প্রণোদনা প্রদান করা হবে এবং উৎপাদিত তুলা সরকারিভাবে ক্রয় করে নেওয়া হবে।সংগৃহীত ছবিতিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে উৎপাদিত মসলিন কাপড়ের তুলনায় বর্তমানে উৎপাদিত মসলিন কাপড় আরও উন্নত মানের। বর্তমানে উৎপাদিত সব মসলিন কাপড় সম্পূর্ণ অর্গানিক। এসব কাপড়ে প্রাকৃতিক রঙের তুলা ব্যবহার করে নকশা করা হয়েছে এবং কোনো ধরনের কৃত্রিম ডাই ব্যবহার করা হয়নি।অদূর ভবিষ্যতে মসলিন তৈরির প্রযুক্তি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ লক্ষ্যে উদ্যোক্তা, স্পিনার ও তাঁতিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হবে।তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রায় ১৮ ফুট বা বারো হাত দৈর্ঘ্যের একটি মসলিন কাপড় তৈরিতে আনুমানিক ৪০০ গ্রাম ফুটি কার্পাস তুলার প্রয়োজন হয়।প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে একটি শাড়ির উৎপাদন খরচ হালকা ডিজাইনে তিন থেকে চার লাখ টাকা, মধ্যম ডিজাইনে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা এবং ভারী ডিজাইনে সাত থেকে আট লাখ টাকা ছিল। বর্তমানে সেই খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও কমানো যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।ভোরের আকাশ/তা.কা
বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী। সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। তার একটি হচ্ছে বিছনাকান্দি। সিলেটের অনেক গুলো পর্যটন স্থানের মধ্যে বিছানাকান্দি অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বিছনাকান্দি যে কোন সময় ভ্রমণের জন্যে উপযুক্ত। তবে বর্ষাকাল বিছানাকান্দি ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহ থাকার কারণে এ সময় বিছানাকান্দির প্রকৃত সৌন্দর্য্য দেখতে পাওয়া যায়। বছরে অন্য সময় এখানে পাথর উত্তোলনের কারণে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি হয়।সংগৃহীত ছবিবাংলাদেশের জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে সিলেট বেশ জনপ্রিয়। সিলেটজুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে বিছনাকান্দি অন্যতম। চাইলে একদিনে ঘুরে আসতে পারেন বিছনাকান্দি থেকে। সেখানকার পাহাড়, ঝরনা ও পাথরের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিছনাকান্দি। জাফলং ও ভোলাগঞ্জের মতোই বিছনাকান্দি একটি পাথর কোয়ারী। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের খাসিয়া পাহাড়ের অনেকগুলো ধাপ দু’পাশ থেকে এসে বিছনাকান্দিতে মিলিত হয়েছে।সংগৃহীত ছবিএকই সঙ্গে মেঘালয় পাহাড়ের খাঁজে থাকা সুউচ্চ ঝরনা বিছনাকান্দির প্রকৃতিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। পর্যটকদের কাছে বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা স্বচ্ছ জলধারা।আর পাহাড়ে উপরে ভেসে চলা মেঘের খেলা তো আছেই। প্রথম দেখায় আপনার মনে হবে এ যেন এক পাথরের বিছানা। বিছনাকান্দির স্বচ্ছ পানি দেখেই আপনার তাতে গা এলিয়ে দিতে ইচ্ছে হবে।তবে বিছনাকান্দির অপরূপ সৌন্দর্য আপনি যে কোনো সময় উপভোগ করতে পারবেন না। বিছনাকান্দি ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো জুন-সেপ্টেম্বর মাস।এ সময়ের মধ্যে চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহ থাকে। ফলে পানির মধ্যে ভেসে থাকা বড় বড় পাথর সেখানকার সৌন্দর্য বাড়ায়। আর অন্যসময় গেলে আপনি পানির দেখা পাবেন না। তাই উপযুক্ত সময়ের মধ্যেই বিছনাকান্দি ভ্রমণে যান।সংগৃহীত ছবিবিছনাকান্দি কীভাবে যাবেন?প্রথমেই সিলেট যেতে হবে আপনাকে। তারপর সিলেট শহরের যে কোনো স্থান থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে যান হাদার বাজার। ভাড়া নেবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।আবার সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেক্ষেত্রে প্রতি সিএনজিতে ৪ জন করে যাওয়া যায়, ভাড়া পড়ে জনপ্রতি ৮০ টাকার মতো। সময় লাগতে পারে প্রায় দেড় ঘণ্টা।হাদার বাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছনাকান্দি পর্যন্ত। ৫০০ টাকা ভাড়ায় আসা-যাওয়ার জন্য রিজার্ভ নৌকা পেয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে দামাদামি করতে হবে। ১০০০-১৫০০ পর্যন্তও দাম চাইতে পারে মাঝিরা।এজন্য দামাদামি করে উঠবেন। হাদার বাজার থেকে বিছনাকান্দির দুরত্ব খুব একটা বেশি না। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যেতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগবে। সেখানে পৌঁছে বিছনাকান্দি ঘুরে আবার নৌকাতে চড়েই ফিরতে হবে হাদার বাজার।ভোরের আকাশ/তা.কা
বরগুনার পাথরঘাটায় বিস্তীর্ণ নদী ও জঙ্গলের সীমানাজুড়ে গড়ে ওঠা রুহিতার চর এখন দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটনের নতুন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতির শান্ত-নির্জন সৌন্দর্য, চরাঞ্চলের বিস্তৃত খোলা মাঠ, লাল কাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ এবং ভোর-বিকেলের মনোরম আলো-ছায়া মিলিয়ে এই চর প্রতিদিনই ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণ করছে। নদীর ধারে দাঁড়ালে মনে হয় প্রকৃতি যেন আপনাকে আলতো করে ছুঁয়ে যাচ্ছে।ভোরবেলার হালকা কুয়াশা ভেদ করে সূর্যোদয় ওঠার মুহূর্তটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। সূর্যের আলো নদীর জলে প্রতিফলিত হয়ে পুরো চরের ওপর সোনালি আভা তৈরি করে। আবার বিকেলবেলায় সূর্য যখন লাল আভায় ধীরে ধীরে অস্ত যায়, তখন চারপাশের বনাঞ্চল, নদী ও চর সবই দৃষ্টিনন্দন রূপ নেয়। এই দুই চিত্রই রুহিতার চরের সৌন্দর্যকে অন্যরকম করে তোলে।পর্যটকেরা বলছেন, রুহিতার চর শুধু একটি ভ্রমণস্থল নয়; বরং প্রকৃতির সঙ্গে সরাসরি সংযোগের একটি নিভৃত প্রান্তর। লাল কাঁকড়ার মুক্ত দৌড়, চরাঞ্চলের নির্জনতার মাঝেও পাখির কোলাহল, নদীর ওপর দিয়ে চলা বাতাস—সব মিলিয়ে এটি যেন ‘মিনি কুয়াকাটা’। যারা একবার আসছেন, তারা ফিরে যাওয়ার আগেই আবারো আসার পরিকল্পনা করে ফেলছেন।চরের পাশেই বিহঙ্গদ্বীপ, যেখানে হরিণ, বানর, সজারু, শিয়াল, মেছো বাঘ ও উদবিড়ালসহ নানা বন্যপ্রাণীর বসবাস। পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে উড়াউড়ি দ্বীপটিকে আরও প্রাণবন্ত করে। এখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে হরিণঘাটা ইকোপার্ক। ফলে রুহিতার চরে এলে এক সফরে তিনটি ভিন্ন প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা পাওয়া সম্ভব হয়। পর্যটকদের কাছে এটাই বড় আকর্ষণ।তবে দর্শনার্থীদের কিছু অভিযোগও রয়েছে। অনেকে বলছেন, চরের ভেতরে কিছু স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল, ফলে পথ হারালে বা জরুরি অবস্থায় যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিছু পথ এখনো নিরাপদ নয় এবং পরিচ্ছন্নতার ঘাটতিও আছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ বদিউজ্জামান সাহেদ বলেন, “রুহিতার চর এমন একটি জায়গা যেখানে প্রকৃতিকে সবচেয়ে কাছ থেকে অনুভব করা যায়। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ বাড়লে এটি জাতীয় পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠবে।”ভ্রমণপিপাসু এরফান আহমেদ সোয়েন বলেন, “প্রতিবার এখানে এসে মনে হয় নতুন কিছু দেখছি। প্রকৃতির এত কাছাকাছি থাকার অনুভূতি অন্য কোথাও পাইনি।”রুহিতার চর ঘুরে আসা দর্শনার্থী ইসরাত জাহান সোনিয়া বলেন, “এখানে এসে মুগ্ধ হয়েছি। এমন বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই দৃষ্টিনন্দন। মনে হয়েছে প্রকৃতি যেন আমাকে আপন করে নিয়েছে।”স্থানীয় বাসিন্দা জাকির মুন্সি জানান, “পর্যটকদের সুবিধা, নিরাপত্তা এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে স্থানীয়ভাবে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। চরটিকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।”পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান রুহিতার চরের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, “চরটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের ক্যাম্প, চরের ভেতরে লাইটিং সুবিধা, নৌযান চলাচলের উন্নয়ন—এসব প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এসব কাজ সম্পন্ন হলে রুহিতার চর পর্যটন মানচিত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙা হবে।”দিন দিন পর্যটকের ভিড় বাড়ছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে রুহিতার চরের পরিচিতিও। অপরূপ সৌন্দর্য, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও প্রকৃতির বিশুদ্ধ উপস্থিতি—সব মিলিয়ে চরটি এখন ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এক অপরিবর্তনীয় আকর্ষণ। যারা একবার আসেন, তারা স্মৃতি আর মুগ্ধতা নিয়ে ফিরে যান।ভোরের আকাশ/মো.আ.
সীতাকুণ্ডে ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের করালগ্রাস থেকে উপকূলবাসীদের রক্ষায় আশি‘র দশকে সরকারি উদ্যোগে সমুদ্র তীরে গড়ে উঠে উপকূলীয় বনায়ন। শীত-বসন্ত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা‘সহ যে কোন মৌসুমে এ কৃত্রিম বনাঞ্চলে কয়েক যুগ ধরে অবাধে বিচরণ করে আসছে হরিণ, বানর, ডাহুক, কোকিল, কুমির, বক ও চিল‘সহ নানা প্রজাতির পশুপাখি।ছবি: ভোরের আকাশউপজেলার সমুদ্র সৈকত ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় উপকূলীয় এ বনায়নের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।উপজেলার পশ্চিম সৈয়দপুর, অলিনগর, মান্দারীটোলা, গুলিয়াখালী, ভাটেরখীল, বাঁশবাড়িয়া, নড়ালিয়া, বগাচতর ও মহানগর‘সহ অন্যান্য সমুদ্র সৈকতগুলোতে উপকূলীয় এ বনাঞ্চল রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে উপকূলীয় বন বিভাগ।৬নং বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নস্থ দক্ষিণ বাঁশবাড়ীয়া হাজীপাড়া থেকে মো. শাহজাহান জানান, অপরিকল্পিত নগরায়ন-শিল্পায়ন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের প্রকৃতিকে। এক সময় বাঁশবাড়ীয়া বেড়িবাঁধের বাইরে উপকূলীয় বনাঞ্চল থেকে সাগরের অবস্থান ছিল আরও অন্তত এক কিলোমিটার দূরে। বনাঞ্চলের বাইরের অংশে ছিল মাটির ওপর ঘাসের সবুজ-শ্যামল আস্তর। তবে জোয়ারের প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে প্রতিনিয়ত জর্জরিত হলেও বাঁশবাড়ীয়া সৈকতে সবুজের বিস্তার ও ঘনত্বে জৌলুস অব্যাহত রয়েছে উপকূলীয় এ বনাঞ্চলের।ছবি: ভোরের আকাশউপকূলীয় বন বিভাগ সূত্রে আরো জানা যায়, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে গড়ে তোলা হয় সাড়ে ১২ একরের ঝাউবাগান। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ঢেউয়ের ধাক্কায় এ সৈকতে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। জোয়ারের ধাক্কায় গোড়ালি থেকে বালু সরে ক্ষতির মূখে উপকূলীয় বনাঞ্চল।ছবি: ভোরের আকাশমুরাদপুর থেকে মো.সদরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উপজেলার সৈয়দপুর থেকে সলিমপুর প্রতিনিয়তই উপকূলীয় বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে। সংরক্ষিত উপকূলীয় বনাঞ্চল থেকে বৃক্ষ উজাড় হতে থাকলে হুমকির মুখে পড়তে পারে সৈকতের পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য। উপজেলার বেশিরভাগ শিপইয়ার্ড মূলত সমুদ্র উপকূলের বনাঞ্চল উজাড় করে গড়ে উঠেছে।ছবি: ভোরের আকাশচট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবি অ্যাডভোকেট তৌফিক উদ্দিন বলেন, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে রয়েছে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা। উপকূলবাসীদের রক্ষায় সরকার সমুদ্রের মোহনায় বিশাল এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে নানা প্রজাতির গাছে গড়ে তুলে বনাঞ্চল। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় অসংখ্য প্রজাতির গাছ গাছালিতে ভরে ওঠে এ উপকূলীয় বনাঞ্চল।ছবি: ভোরের আকাশউপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব‘সহ সাগরে তীব্র জোয়ার ও প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে সীতাকুণ্ডের সমুদ্র উপকূলের এ কৃত্রিম বনাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। মহাপ্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে উপকূলীয় বনাঞ্চল ও উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।ভোরের আকাশ/তা.কা