ছবি- সংগৃহীত
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১১৪০ জন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৪৩ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৮৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৮২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৬৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৬ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন এবং সিলেট বিভাগে ৮ জন ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত এক দিনে সারা দেশে ১ হাজার ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪৪৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৬৩ জনের।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে এক হাজার ৪১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২০৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৩০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৪০ জন, খুলনা বিভাগে বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৯ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) নয়জন রয়েছেন।গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৯৯০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবৎ মোট ৬৪ হাজার ৪০৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৭ হাজার ৪৬৪ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক নয় শতাংশ পুরুষ ও ৩৮ দশমিক এক শতাংশ নারী রয়েছেন।গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এ যাবৎ ডেঙ্গুতে মোট ২৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১১৪০ জন। রোববার (২৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৪৩ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৮৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৮২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৬৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৬ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন এবং সিলেট বিভাগে ৮ জন ভর্তি হয়েছেন।এদিকে, গত এক দিনে সারা দেশে ১ হাজার ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪৪৪ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৬৩ জনের।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশজুড়ে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। শুধু নগর নয়, এখন গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা, ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রতিবেদনে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে (শনিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে ১৬ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে ৫ হাজার ৩৫৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।গত সাত দিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,১৮ অক্টোবর: মৃত্যু ১, ভর্তি ৬১৯ জন১৯ অক্টোবর: মৃত্যু ১, ভর্তি ৯৫০ জন২০ অক্টোবর: মৃত্যু ৪, ভর্তি ৯৪২ জন২১ অক্টোবর: মৃত্যু ৪, ভর্তি ৮১৪ জন২২ অক্টোবর: মৃত্যু ২, ভর্তি ৭৬২ জন২৩ অক্টোবর: মৃত্যু ৪, ভর্তি ৮০৩ জন২৪ অক্টোবর: মৃত্যু নেই, ভর্তি ৪৬৮ জনচলতি অক্টোবর মাসে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আর প্রাণ হারিয়েছেন ৬১ জন।অন্যদিকে, বছরের শুরু থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬৩ হাজার ৬৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬০ হাজার ৭৩৭ জন। এ সময়ের মধ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৫৯ জনের।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর মৌসুমি রোগ হিসেবে সীমাবদ্ধ নেই; সারা বছরই এর সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান বলেন, “বৃষ্টি শুরু হলেই ডেঙ্গু বাড়ছে। তাই মশা নিধনে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি।”কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরীর মতে, “শুধু জেল-জরিমানা বা প্রচারণা নয়, সঠিক জরিপ ও দক্ষ জনবল দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মশানিধন কার্যক্রম চালাতে হবে।”উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং রেকর্ড ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।ভোরের আকাশ // হ.র
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষিত ও অনুমোদিত টাইফয়েড রোগের টিকা নিয়ে দেশব্যাপী চলছে নানাধরণের ‘গুজব’। সারাদেশের অনুর্ধ্ব ১৫ বছরের শিশুদের জন্য টাইফয়েড টিকা প্রদান কর্মসূচীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে শুরু করে শহর ও গ্রামের পারিবারিক আড্ডা কিংবা আলোচনায় নানা গুজব চলছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। আর এসব গুজবের কারণে অনেক অভিভাবক এখন তাদের শিশুদের এই টিকা দেওয়ার মতো গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে বেশ চিন্তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। এছাড়া টিকা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করাতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। টিকা নিলে সন্তান হবে না, ক্যানসার হবে, তাই এ টিকা নেওয়া যাবে না, এমন অনেক গুজবও রয়েছে অভিভাবকদেও মধ্যে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উদ্যোগে সারা দেশে অনুর্ধ্ব ১৫ বছরের শিশুদের দেওয়া হচ্ছে টাইফয়েডের টিকা। ইপিআইর তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর দেশে প্রায় ৪২ লাখ শিশুকে বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রায় ১ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। ১৯৭৯ সালে শুরু হওয়া ইপিআই কার্যক্রমে এখন ১১টি টিকা দেওয়া হয়। টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় টিকাদান শেষে ২০২৬ সাল থেকে ইপিআইতে নিয়মিত টিকা হিসেবে টাইফয়েড ‘কনজুগেট ভ্যাকসিন’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জানা গেছে, চলতি টাইফয়েড টিকা প্রদান কর্মসূচীতে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর টিকা নেওয়ার জন্য শিশুদের নিবন্ধন কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।সূত্র জানায়, ১৮ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ২ কোটির বেশি শিশু নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। আর ইতিমধ্যে ১ কোটি ৪ লাখের বেশি শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হয়েছে। আগামি ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশব্যপী চলবে এ টাইফয়েড টিকা প্রদান কর্মসূচী।জানা গেছে, দেশে ২০২১ সালে ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৮ হাজার, এদের ৬৮ শতাংশ ছিল শিশু। টাইফয়েড টিকা নিয়ে সারাদেশে শুরু হয়েছে একধরণের নেতিবাচক গুজব। এসব গুজবের মধ্যে রয়েছে- এ টিকা নিলে ‘কণ্যা শিশুরা ভবিষ্যতে মা হতে পারবে না’, ‘ছেলেশিশুরা পুরুষত্ব হারাবে’, ‘বিশ্ব বাণিজ্যের খেলায় বাংলাদেশের শিশুদের এ টিকা দেওয়া হচ্ছে’, ‘বাংলাদেশ গরিব দেশ, এজন্য শিশুদের গিনিপিগ বানানো হচ্ছে‘-এমন সব গুজবে অভিভাবকেরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন বলে জানা জানা গেছে। অবশ্য, টিকা নিয়ে গুজব বাংলাদেশে নতুন নয়, করোনার টিকা দেওয়ার সময়েও কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নানান নেতিবাচক গুজব ছড়ানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক তাহমিদ আহমেদ ভোরের আকাশ’কে বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বন্দুকের মতো যন্ত্র দিয়ে কলেরার টিকা দেওয়া হতো। সেসময়ও টিকা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে গুজব ছিল, এ টিকা নিলে মেয়েদের আর বাচ্চা হবে না। টাইঢয়েড টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্তক অনুমোদিত এবং নিরাপদ উল্লেখ করে অভিভাবককদের এসব গুজবে কান না দিয়ে এবং বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।ইপিআইএর উপপরিচালক শাহারিয়ার সাজ্জাদ জানান, ‘গণটিকা থেকে সাবধান’ এমন গুজব ছড়ানোয় এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি যাতে এমন পোস্ট ডিলিট করেন, এমন পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এসব গুজবে কান দেওয়ার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বরেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক যাচাই-বাছাই করেই কোনো টিকা কোয়ালিফাই করে। আর গুজব প্রতিরোধসহ টিকা দিতে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক প্রচারণামূলক কার্যক্রম, জাতীয় অ্যাডভোকেসি সভা, জোরালো রাজনৈতিক সমর্থন আদায়, সংবাদ সম্মেলন, বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠনসহ নানান কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি।উল্লেখ্য, ১২ অক্টোবর টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু জাফরও বলেছিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষিত ও অনুমোদিত এ টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। বাংলাদেশে এ টিকা পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। এ টিকা প্রোটিন ও শর্করা উপাদানে গঠিত, যা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে। এতে শরিয়ত নিষিদ্ধ কোনো উপকরণও নেই। টাইফয়েডের এই টিকা সৌদি হালাল সেন্টারের হালাল সনদপ্রাপ্ত জানিয়ে কোনো ধরনের ‘গুজব’ বা ‘অপপ্রচারে’ বিভ্রান্ত না হয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।জানা গেছে, জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), গ্যাভি-দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহায়তায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআাই) নেতৃত্বে দেশব্যাপী শিশুদের টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বে অষ্টম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এ ধরনের ক্যাম্পেইন চালু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ভারতের বায়োলজিক্যাল ই কোম্পানির তৈরি টিকাটি সরকার পেয়েছে গ্যাভির কাছ থেকে। এর আগে পাকিস্তান, নেপালসহ বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের এ টিকা দেওয়া হয়।মিরপুর ন্যাশনাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক জানান, টিকা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। টিকা নিলে সন্তান হবে না, ক্যানসার হবে, করোনার টিকা নেওয়ার পর অনেকের নাকি অ্যালার্জি হয়েছিল, তাই এ টিকা নেওয়া যাবে না, এমন অনেক কথা বলছেন কিছু অভিভাবক। তাই টিকা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক প্রচার আরও বাড়ানোর প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।চিকিৎসকরা জানান, প্রতিরোধযোগ্য মারাত্মক সংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে টাইফয়েড জ্বর অন্যতম। ‘সালমোনেলা টাইফি’ নামে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ হয়। দূষিত পানি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব ও খাবারের মাধ্যমে টাইফয়েড রোগ ছড়ায়।উল্লেখ্য, গত বছর জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়াকে কেন্দ্র করেও নানা গুজব ছড়িয়েছিল।ইপিআই ও আইসিডিডিআরবি’র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাজুল ইসলাম আবদুল জানান, টাইফয়েড টিকা নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে একটি মহল। এই টিকা হালাল নয়, পুরুষত্ব নষ্ট হবে এমন অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব গুজবে কান দেওয়ার কোনো দরকার নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক যাচাই বাছাই করেই কোনো টিকা কোয়ালিফাই করে। শিশুদের টাইফয়েড থেকে রক্ষা করতে হলে টিকা দেওয়া খুবই জরুরি। তবে টাইফয়েড টিকা নেওয়ার পর অন্যান্য টিকার মতোই সামান্য প্রতিক্রিয়া যেমন টিকা নেওয়ার স্থান লালচে হওয়া, সামান্য ব্যথা, মৃদু জ্বর, ক্লান্তি ভাব হতে পারে, যা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।বিশেষজ্ঞরা জানান, টাইফয়েড যেকোনো বয়সেই হতে পারে, তবে শিশু ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। টাইফয়েডে পরিপাকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া, রক্তক্ষরণ, অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ, মেরুদণ্ডে সংক্রমণ, মস্তিষ্কে প্রদাহ, প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া, পিত্তথলিতে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া এবং স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে টাইফয়েড জ্বরের উচ্চ সংক্রমণপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সীমিত সম্পদ, কার্যকর স্যানিটেশন এবং চিকিৎসাবিষয়ক সম্পদের অভাব, জলবায়ু পরিস্থিতি, মারাত্মক পানিদূষণ, জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্বকে এর কারণ হিসেবে দেখা হয়। আর এবারের টিকাদান কর্মসূচী শুরুর আগে ৯ অক্টোবর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানও বলেছিলেন, বিভিন্ন দেশে এই টিকাদান চললেও বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার নজির নেই।জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় ডায়রিয়াজনিত রোগ ও পুষ্টিবিষয়ক পঞ্চদশ এশীয় সম্মেলনেও (অ্যাসকড) টাইফয়েড টিকার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।ওষুধ প্রতিরোধী রোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গর্ডন ডোগান সম্মেলনে জানান, ঢাকা শহরে টাইফয়েডের জীবাণু ওষুধ–প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হওয়ার সমাধান পাওয়া যেতে পারে টাইফয়েড টিকার ব্যবহারের মাধ্যমে। ২০১৮ সালে টাইফয়েড ভ্যাকসিন বিষয়ক অবস্থানপত্র প্রকাশ করে। এতে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিনের ব্যবহার ও ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের বিষয়টি বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। এছাড়া চলতি বছর বিএমসি ইনফেকশাস ডিজিস জার্নালে ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড জ্বরের প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। তাতে বাংলাদেশকে টাইফয়েড জ্বরের ‘উচ্চ সংক্রমণপ্রবণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। টাইফয়েডের উচ্চঝুঁকির জন্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সীমিত সম্পদ, কার্যকর স্যানিটেশন এবং চিকিৎসাবিষয়ক সম্পদের অভাব, জলবায়ু পরিস্থিতি, মারাত্মক পানিদূষণ, জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্বকে কারণ হিসেবে দেখা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ