আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:০৯ এএম
সংগৃহীত ছবি
বাজেট নিয়ে অচলাবস্থার জেরে শাটডাউনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সিনেট বাজেটের অস্থায়ী বিল পাসে ব্যর্থ হওয়ায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।
যদিও শাটডাউন এড়াতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা চলছে। বুধবার (১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্যরাতের আগেই সরকার শাটডাউনের শঙ্কায় দাঁড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাজেটের অস্থায়ী বিল পাসে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সিনেট।
ডেমোক্র্যাটদের সমর্থিত এ প্রস্তাবে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু ৬০ ভোটের প্রয়োজন থাকলেও বিলটি ৪৭–৫৩ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
অবশ্য এখনও মধ্যরাত পর্যন্ত সময় আছে সমঝোতায় পৌঁছানোর। ডেমোক্র্যাটরা চাইছে বাজেটের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার যুক্ত করতে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা চাইছে “পরিষ্কার” একটি বাজেট বিল যেখানে কোনো নীতিগত পরিবর্তন থাকবে না।
এদিকে অচলাবস্থার দায় চাপাতে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই সরকারি মাধ্যমগুলো ব্যবহার শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের (এইচইউডি) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই দেখা যাচ্ছে একটি সতর্কবার্তা। সেখানে বলা হচ্ছে: র্যাডিকাল বামপন্থিরা সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে। যদি তারা তাদের দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের ইচ্ছাপূরণের তালিকা না পায়, তবে আমেরিকান জনগণকে ভোগান্তির মুখে ফেলবে।
বার্তায় আরও বলা হয়, জনগণ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ট্রাম্প প্রশাসন সরকার সচল রাখতে চায়।
এইচইউডি-এর মুখপাত্র কেসি লাভেট পরে জানান, এই সতর্কবার্তাই প্রশাসনের অবস্থানকে প্রতিফলিত করছে। তার ভাষায়, চরম বামপন্থিরা দেশকে জোর করে শাটডাউনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর এটি সব আমেরিকানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, এ ধরনের রাজনৈতিক বার্তা হ্যাচ অ্যাক্ট লঙ্ঘন করতে পারে। আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদের দলীয় প্রচারে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ। তবে এইচইউডি কর্তৃপক্ষ বলছে, বার্তায় কোনো নির্বাচনের প্রসঙ্গ বা ব্যক্তিগত রাজনীতিকের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, কোনও কারণে কংগ্রেস যদি ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হয় বা প্রেসিডেন্ট সেই বিলে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন, তখনই ঘটে ‘শাটডাউন’। এ অবস্থায় বেশিরভাগ ফেডারেল সংস্থা খরচ চালাতে পারে না এবং অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম থেমে যায়।
তবে জাতীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত সুরক্ষা কিংবা আকাশপথ নিয়ন্ত্রণের মতো জরুরি কার্যক্রম চালু থাকে।
এমন অচলাবস্থার পেছনের মূল কারণ সাধারণত দলীয় দ্বন্দ্বই। ২০১৮–১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসের দীর্ঘতম ৩৫ দিনের শাটডাউনের মুখে পড়েছিল। তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দে জোর দিচ্ছিলেন।
সেসময় এর প্রভাব পড়েছিল লাখো সরকারি কর্মীর ওপর। এসব কর্মীর অনেকে বেতন ছাড়াই সেসময় কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন, আবার অনেকে সাময়িক ছুটিতেও চলে গিয়েছিলেন। সরকারি সেবার সঙ্গে জড়িত ঠিকাদার ও ব্যবসাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এছাড়া পাসপোর্ট, ঋণ, অনুদান কিংবা জাতীয় উদ্যান বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনায় সাধারণ মানুষও ভোগান্তিতে পড়েন।
ভোরের আকাশ/তা.কা