কাতার ও ফিলিস্তিনের পাশে থাকার অঙ্গীকার বাংলাদেশের
কাতারে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে কাতার ও ফিলিস্তিনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দোহায় অনুষ্ঠিত আরব-মুসলিম শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ অবস্থান তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, কাতারের সার্বভৌম ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অকারণ আক্রমণ কেবল কাতারের ওপর নয়, বরং পুরো মুসলিম উম্মাহর মর্যাদার ওপর আঘাত। বাংলাদেশ এই ঘটনাকে ইসরায়েলের বেপরোয়া আগ্রাসনের অংশ হিসেবে দেখে, যা জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে বারবার অমান্য করছে।
তৌহিদ হোসেন ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলকে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে হবে এবং অবিলম্বে এই অবৈধ আগ্রাসন বন্ধের দাবি তুলতে হবে।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ওআইসির মহাসচিব হুসাইন ইব্রাহিম তাহা ও আরব লীগের মহাসচিব, যেখানে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
এ সম্মেলনে ২৪টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান সরাসরি অংশ নেন। বাকি দেশগুলোর প্রতিনিধি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। নেতারা একযোগে ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার নিন্দা জানান এবং মুসলিম দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়া নেতারা গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্ব অবসান, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। একই সঙ্গে গাজার জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য ও খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে, যাতে ইসরায়েলি নেতাদের একের পর এক মুসলিম রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনা যায়।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে দেওয়া এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আহমদ রফিক ছিলেন আমাদের ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য সাক্ষী ও সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্রতত্ত্বচর্চার দিশারী। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে আহমদ রফিকের অবদান দুই বাংলায় সমানভাবে শ্রদ্ধার আসন পেয়েছেন। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করেছে, যা তার বিদগ্ধতার অনন্য স্বীকৃতি।শোকবার্তায় ড. ইউনূস বলেন, দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার জগতে আহমদ রফিকের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন।প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বলেন, আহমদ রফিকের জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করবে।তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবার, শুভানুধ্যায়ী ও সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হামলা ও ত্রাণ বহর জব্দের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটির যুগ্মমহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েল মানবতাবিরোধী এক বর্বর শক্তি, যারা আন্তর্জাতিক কোনো আইনকানুনের তোয়াক্কা করে না এবং মানবিক উদ্যোগকেও সশস্ত্রভাবে প্রতিহত করে।বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দেওয়া ওই বিবৃতিতে তিনি জানান, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ছিল গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। এতে ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি অংশ নেন—যাদের মধ্যে ছিলেন মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরাও। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এতে অংশ নেন শহিদুল আলম। অথচ ইসরায়েল এ মানবিক বহরে আক্রমণ চালিয়ে ত্রাণসামগ্রী জব্দ করেছে, যা গোটা বিশ্বের জন্য এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা বলেই মন্তব্য করেন তিনি।তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলকে যদি এখনই আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিহত করা না যায়, তবে একদিন তারা ইউরোপকেও চাপে ফেলবে। এখন ইউরোপীয় সরকারগুলোর জন্য পরীক্ষা—তারা কি তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, নাকি ইসরায়েলের বর্বরতার সামনে নীরব থাকবে।”বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশের নাগরিক শহিদুল আলমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক মানবিক উদ্যোগে ইসরায়েলের এই হামলার বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে আরও জোরালো কণ্ঠ তুলতে হবে।ঘোষণায় তিনি জানান, শুক্রবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। এ কর্মসূচিতে ইসরায়েলের আগ্রাসী আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে।ভোরের আকাশ//হ.র
ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক ও খ্যাতিমান রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।আহমদ রফিকের মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন তাঁর বিশেষ সহকারী মো. রাসেল ও গাড়িচালক মো. কালাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে তিনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হন।শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার বিকেলেই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল। বারডেম হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে চলছিল চিকিৎসা। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি, পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার ‘মাইল্ড স্ট্রোক’-এরও শিকার হন।গত ১১ সেপ্টেম্বর ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাঁকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধার অভাবে গত রবিবার তাঁকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আহমদ রফিক। ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারানোর পর তিনি নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। নিঃসন্তান এই ভাষাসৈনিক জীবদ্দশায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন।বাংলা ভাষা ও রবীন্দ্রচর্চায় তাঁর অবদান অনন্য। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।জানা গেছে, মৃত্যুর আগে নিজের দেহ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজে দান করার অঙ্গীকার করে গেছেন তিনি।ভোরের আকাশ//হ.র
বিদেশি বিনিয়োগকারী ও কর্মীদের জন্য নিরাপত্তা ছাড়পত্রের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল হলো। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানিয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে এই সেবা চালু হয়েছে। এখন থেকে বিদেশিরা সরাসরি বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।বিধি অনুযায়ী, কর্মানুমতি পাওয়া প্রত্যেক বিদেশি বিনিয়োগকারী ও কর্মীর জন্য নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। আবেদন জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থা তা যাচাই করবে। কোনো আপত্তি না থাকলে ২১ কার্যদিবসের মধ্যেই ছাড়পত্র অনুমোদিত হয়েছে বলে ধরা হবে। তবে কর্মানুমতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন জমা না পড়লে সেই অনুমতি বাতিল হয়ে যাবে।বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “নিরাপত্তা ছাড়পত্রের ডিজিটাল প্রক্রিয়া বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করবে। এ উদ্যোগের ফলে স্বচ্ছতা ও গতি দুটোই বাড়বে।” এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি জানান, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদার হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভিসা ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত সেবা আরও সহজে পাবেন।গত ২ সেপ্টেম্বর বিডা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃসংস্থা বৈঠকে অনলাইনে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সেই সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিনিয়োগ সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।এছাড়া ভিসা নবায়ন, ফি পরিশোধ, ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ ফি প্রদানের অনলাইন ব্যবস্থা এবং আন্তঃসংস্থাগত তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজও চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এসব কার্যক্রম শেষ হওয়ার আশা করছে বিডা।ভোরের আকাশ // হ.র