শহীদ মিনারে পল্লী বিদ্যুতের মহাসমাবেশে যোগ দিলেন হাজারো কর্মী
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করছেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাড়ো হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সরেজমিন শহীদ মিনার এলাকায় দেখা যায়, কয়েক হাজার কর্মী সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন। এসময় তারা ‘ন্যায্য দাবি মেনে নাও, নিতে হবে’, ‘চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই’,‘চাকরি মোদের স্থায়ী চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা বলছেন, দাবি আদায়ে সোমবার ১৩তম দিনের মতো শহীদ মিনারে তারা অবস্থান করছেন। সরকার তাদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করায় তারা আজ মহাসমাবেশ করছেন। আজকের সমাবেশে ১৩টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত রোববার কর্মসূচির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছিলেন, সরকার দাবি মেনে না নেওয়ায় সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মহাসমাবেশে শুধু বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো চালু রেখে সব কর্মকর্তা কর্মচারী শহীদ মিনারে হাজির হবেন।
তাদের উত্থাপিত ৭ দফা দাবিগুলো হলো-
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২. ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ’ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন।
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণসহ দুই দফা দাবিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামেন সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে দেশের কয়েকটি জেলার নিম্নাঞ্চলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের নিচু এলাকাগুলোতে বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এসব অঞ্চলের নদ-নদীর পানি সতর্কসীমা ছুঁয়ে যেতে পারে বলে জানায় পূর্বাভাস কেন্দ্র।বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা, গোমতী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী দুই দিনে এসব নদীর অববাহিকায় ভারী থেকে অতি ভারী এবং পরবর্তী দিনে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার উদয় রায়হান বলেন, “সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। মৌসুমি বায়ুও সক্রিয় রয়েছে। এর ফলে নদীর পানি বাড়ছে এবং ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ কিছু অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”তিনি আরও জানান, টানা বৃষ্টি, নদীর পানি বৃদ্ধি ও নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় অস্থায়ী বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।এদিকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীর পানির স্তরও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। কংস নদীর পানি বাড়ছে, যাদুকাটা নদী স্থিতিশীল রয়েছে এবং সারিগোয়াইন ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও তা এখনও বিপৎসীমার নিচেই রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সারিগোয়াইন, যাদুকাটা ও সোমেশ্বরী নদীর পানি সতর্কসীমা ছুঁতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে এবং আগামী তিন দিন পর্যন্ত এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, যদিও তা এখনও বিপৎসীমার নিচেই থাকবে।তিস্তা নদীর পানি কমলেও দুই দিন তা স্থিতিশীল থাকবে এবং তৃতীয় দিনে কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানিও হ্রাস পাচ্ছে এবং তা দুই দিন স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী তিন দিনে কিছুটা বাড়তে পারে। একইভাবে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ বর্তমানে ভারতের স্থলভাগে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ এবং নদী তীরবর্তী এলাকায় ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৈঠকে শাপলা হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং এই ঘটানা যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়।হেফাজত ইসলামের সমাবেশে হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে অনুসন্ধান করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।এছাড়াও ফ্যাসিবাদি শাসনামলে হেফাজতের নেতাকর্মী ও আলেম উলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।বৈঠকে মাওলানা খুলিল আহমেদ কুরাইশী, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাও. আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি বশির উল্লাহ এবং মুফতি কেফয়তুল্লাহ আজহারী উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। ভোরের আকাশ/হ.র
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সতর্ক করে বলেছেন, কিছু পরাজিত গোষ্ঠী নানাভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপচেষ্টা প্রতিরোধে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।তিনি বলেন, “যখনই নির্বাচন আয়োজনের দিক এগোচ্ছি, তখনই নানা ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা গণ্ডগোল বাধিয়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চায়। কিন্তু গণতান্ত্রিক ঐক্য এমন এক শক্তি, যাকে ছিন্ন করা যাবে না। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট।”ড. ইউনূস আরও বলেন, “সমাজের সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এর জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”সভায় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় গণফ্রন্টের আমিনুল হক টিপু বিশ্বাস, ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, নেজামে ইসলাম পার্টির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাসদের ড. মুশতাক হোসেন, ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের ববি হাজ্জাজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মাসুদ রানা এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।বৈঠকের শুরুতে দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ভোরের আকাশ/হ.র
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহতদের দেখতে শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।রাত ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি ইনস্টিটিউটে পৌঁছান এবং সেখানে দগ্ধ রোগীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাত ১০টা ২৬ মিনিটে তিনি যমুনায় নিজের সরকারি বাসভবনে ফিরে যান।বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, ড. ইউনূস রোগীদের চিকিৎসা সেবার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন এবং প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।ভোরের আকাশ/হ.র