নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:১৮ পিএম
সংগৃহীত ছবি
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। নিউইয়র্কের হোটেল স্যুইটে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি প্রভাবশালী নেতা ও কূটনীতিক। সাক্ষাৎকালে তারা সমর্থন জানান।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর), নিউইয়র্কের হোটেল স্যুইটে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে নেতারা বাংলাদেশকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করতে দক্ষতা ও সহযোগিতা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন লাটভিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভায়রা ভেই-ফ্রেইবারগা। তিনি বর্তমানে নিজামি গাঞ্জভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের (NGIC) সহ-সভাপতি। উপস্থিত ছিলেন, স্লোভেনিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোর, সার্বিয়ার বরিস তাদি, লাটভিয়ার ইগিলস লেভিটস, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এমেরিটাস ও বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপানড্রেউ, বুলগেরিয়ার রোজেন প্লেভনেলিভ ও পেটার স্টোয়ানভ, ক্রোয়েশিয়ার আইভো জোসিপোভিচ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ম্লাডেন ইভানিচ , মরিশাসের আমিনা গুরিব-ফাকিম।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, কমনওয়েলথের প্রাক্তন মহাসচিব, জর্জিয়ার প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চারজন প্রাক্তন সভাপতি, বিশ্ব ব্যাংকের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসমাইল সেরাগেলদিন (NGIC সহ-সভাপতি), কেরি কেনেডি, জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, কেনেডি হিউম্যান রাইটস, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির প্রতিনিধিরা।
বিশ্বনেতারা ড. ইউনূসের নেতৃত্ব, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এক নেতা বলেন, আমরা আপনাদের ও বাংলাদেশের মানুষকে সমর্থন করতে এসেছি। আমরা পুরোপুরি আপনার পেছনে আছি।
আরেক নেতা বলেন, আমরা প্রস্তুত আপনার যেকোনো পরামর্শ বা প্রয়োজন হলে জানাবেন। সামনে অনেক কাজ বাকি।
তাঁরা দুর্নীতি, শোষণ ও স্বৈরতন্ত্রের ১৬ বছরের দুঃশাসন শেষে বাংলাদেশের সামনে থাকা গুরুতর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
কেরি কেনেডি, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন, দেশের মানবাধিকার অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, আপনার নেতৃত্বে মানবাধিকার অগ্রগতি অসাধারণ।
জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক মেলান ভারভার ঘোষণা করেন, শিগগিরই ইনস্টিটিউট জুলাই বিপ্লবের আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করবে।
NGIC সহ-সভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন বলেন, যদি আমাদের প্রয়োজন হয়, আমরা প্রস্তুত। আপনার পাশে আছি।
ড. ইউনূস বিশ্বনেতাদের অপ্রত্যাশিত সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বলেন, এটা পুরোপুরি অভাবনীয়। আপনাদের এমনভাবে একত্রিত হতে দেখে আমি অভিভূত। এটি আমাদের জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে তিনি একটি ১৫ বছরব্যাপী ভূমিকম্পের সাথে তুলনা করে বলেন, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৯।
তিনি জানান, মানুষ অলৌকিক কিছু প্রত্যাশা করছে। তবে আমাদের তরুণদের স্বপ্নও পূরণ করতে হবে তারা চায় নতুন বাংলাদেশ।
ড. ইউনূস উপস্থিত নেতাদের জানান, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পথনির্দেশনা চাই। আপনাদের পরামর্শ, সমর্থন এবং নৈতিক শক্তি আমাদের জন্য অমূল্য হবে।
ভোরের আকাশ/তা.কা