ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান মার্কিন সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারেক এম. আরিফুল ইসলাম।
প্রথম বৈঠকটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকারের সঙ্গে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের পাশাপাশি আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়।
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে আন্ডার সেক্রেটারি হুকার বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। এর জবাবে ড. খলিলুর রহমান সম্প্রতি জাতিসংঘ আয়োজিত আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা ঘোষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পরে প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক ও ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। সেখানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিস্তৃত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গেও বৈঠক করেন। আলোচনায় সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনা-সংক্রান্ত অগ্রগতি এবং পরবর্তী পদক্ষেপের দিকগুলো তুলে ধরা হয়। ড. রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ঘাটতি আরও হ্রাস পেলে শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান। জবাবে ব্রেন্ডান লিঞ্চ বলেন, শুল্ক চুক্তি কার্যকর হলে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমতে থাকলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
ভোরের আকাশ//হর
সংশ্লিষ্ট
দেশের কৃষি খাতে আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় যন্ত্রের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আবহমানকালের প্রাচীন পদ্ধতির পরিবর্তে কৃষকরা দিন দিন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। আবার কৃষি খাতে শ্রমিকের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। বিশেষ করে শহর ও নগরকেন্দ্রিক গার্মেন্টসহ অন্যান্য শিল্পের প্রসার এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি হওয়ার প্রবণতায় ক্রমান্বয়ে কমছে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা। তবে ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটাতে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে, কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে এবং বৃদ্ধি করতে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানোর বিকল্প নেই। কারণ, একদিকে দেশে প্রতি বছর কৃষিজমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে কৃষিকাজে আগ্রহী শ্রমিকের সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। তবে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়তে থাকায় কৃষকরা লাভবান হলেও কর্মহীন হয়ে পড়ছেন সনাতন পদ্ধতিতে শ্রম বিক্রি করা শ্রমিকরা। আধুনিক প্রযুক্তি ও আধুনিক যন্ত্রের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ছে সাধারন খেটে খাওয়া কৃষকেরা। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে কর্মহীনতা এবং হতাশা। পাশাপাশি তাদের আয়-উপার্জনও হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় তারা বিকল্প কর্মসংস্থানের দিকে ঝুকছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষিকাজে শ্রমিকের সংখ্যা কমতে থাকলেও দেশে ক্রমান্বয়ে খাদ্যের উৎপাদন কিন্তু বাড়ছে। আর এটি সম্ভব হচ্ছে কৃষি খাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে। বর্তমানে কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে- ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, রিপার ও কম্বাইন হারভেস্টারের মতো বড় বড় কৃষি যন্ত্রপাতি।এদিকে, বর্তমানে যে পরিমাণ কৃষিযন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরও অনেক বাড়বে। আর কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় এবং তাদের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে কৃষিযন্ত্র। এ ধারা চলমান থাকলে এক সময় সব ক্ষেত্রে কৃষি পুরোপুরি যান্ত্রিকীকরণ হবে বলে মনে করেন তারা।অন্যদিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের এক গবেষণায় জানা গেছে-চাষ, সেচ, নিড়ানি, কীটনাশক প্রয়োগে ৮০-৯৫ শতাংশ যান্ত্রিকীকরণ হয়েছে। যদিও ফসল রোপণ, সার দেওয়া, কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার এখনও বেশ কম।কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ফসলের উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষকরা এখন আধুনিক যন্ত্রের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে দেশের হাওর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জমির মালিক তাদের ফসল কাটাচ্ছেন হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে। ফলে সেখানে শ্রমিকদের দিয়ে ফসল কাটানো সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম।কৃষিজমির মালিকরা জানান, হারভেষ্টার দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে লাগছে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ২৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। মেশিনে ধান কেটে বস্তায় ভরে গাড়িতে করে একবারে মালিকের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে তারা। প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধার কথা উল্লেখ করে তারা জানান, আধুনিক যান্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের ধান কাটা, মাড়াই করা, এর পর তা মাথায় বহন করা এসবের আর এখন প্রয়োজন হচ্ছে না।সনাতন পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনের কথা তুলে ধরে জমির মালিকরা জানান, এক বিঘা জমি চাষোপযোগী করতে এবং ধান কাটতে প্রচুর সময় লাগে, ফসল কাটার পরে আবার তা বহন ও মারাই করা, এর পর তা বস্তায় সংরক্ষণ করার মতো কাজ করতে হয়। আর এই কাজ করার জন্য ৬ থেকে ৭ জন শ্রমিকের সারা দিন লেগে যায়। এই কাজের জন্য মজুরি দিতে হতো ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। চাষাবাদে এখন যান্ত্রিক ব্যবহারে সময় আর অর্থ দুটোতেই সাশ্রয় হচ্ছে।জানা গেছে, বর্তমানে দেশে যেসব আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি করা হচ্ছে, সেগুলো হচ্ছে- ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, পাওয়ার রাইস রিপার, কম্বাইন হারভেস্টার, মাড়াইকল, আলু উত্তোলন যন্ত্র, ভুট্টা মাড়াইকল, ওয়াটার পাম্প, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার, বিভিন্ন সাইজের ট্রলি, পাওয়ার জুট রিবনার, সিডার, বেড প্লান্টার, প্যাডেল থ্রেশার, পাওয়ার স্পেয়ার, আদ্রতা মাপক যন্ত্র, ধান শুকানোর যন্ত্র।কৃষিযন্ত্রের বাজার সম্প্রসারণ : এদিকে, কৃষি খাতে ক্রমান্বয়ে যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে কৃষিযন্ত্রের বাজারও দিন দিন সম্প্রসারণ হচ্ছে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সার্বিক কৃষি যন্ত্রাংশের বাজার দাড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায়।এর মধ্যে শুধু ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর বড় যন্ত্রাংশের বাজার প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। এই বাজার দিন দিন আরও সমপ্রসারণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা। তবে কৃষিযন্ত্রাংশের বিশাল বাজার তৈরি হলেও তাতে কৃষিযন্ত্র উৎপাদনকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান এক-তৃতীয়াংশেরও কম।দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ছোট ছোট যন্ত্রাংশের ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার বাজার দখল করেছে। বাকিগুলো আমদানিনির্ভর- ভারত, জাপান, কোরিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ার কৃষিযন্ত্র বাজারজাত করছে আধা ডজন কোম্পানি। যাদের দখলে আমদানির ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বাজার। কয়েকটি বিদেশি কোম্পানিও দেশে কৃষিযন্ত্র তৈরির কারখানা চালু করেছে। এছাড়া বড় বড় কৃষিযন্ত্রের বেশিরভাগই আমদানিনির্ভর বলে জানা গেছে।দেশের বাজারে ছোট-বড় কৃষি যন্ত্রাংশের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এসিআই। কৃষির উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে এসেছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি। এসিআই মোটরস লিমিটেড ২০১৮ সালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছে এসিআই অ্যাগ্রি মেশিনারি ফ্যাক্টরি। এই কারখানায় জাপানের ডিজেল ইঞ্জিন, ভারী যন্ত্রপাতি ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইয়ানমারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে এসিআই।এ ব্যাপারে এসিআই অ্যাগ্রি বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এফ এইচ আনসারি ভোরের আকাশকে জানান, দেশে যে পরিমাণ কৃষিযন্ত্র বিক্রি হচ্ছে তারমধ্যে ট্র্যাক্টর বিক্রিতে ৫০ শতাংশ, কম্বাইন হারভেস্টারের ৪৩ শতাংশ, পাওয়ার টিলারের ৩৪ শতাংশ এবং যন্ত্রাংশের ১০ শতাংশ বাজার শেয়ার এসিআইয়ের।এদিকে অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের তথ্যমতে, বেসরকারি পর্যায়ে ছোট-বড় মিলে দেশে প্রায় ৮০টি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে কৃষিযন্ত্র তৈরি ও সংযোজনের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে মাঝারি ও বড় কারখানা ১৪টি। এছাড়া ছোট-বড় আরও হাজারখানেক হালকা প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান এক বা একাধিক কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি করে।এদিকে, কৃষিযন্ত্রপাতি বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কৃষিযন্ত্রের মধ্যে এখনো ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারেরই চাহিদা বেশি। দেশে বছওে প্রায় ২৫ হাজার পাওয়ার টিলার বিক্রি হচ্ছে। আর ট্রাক্টর বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার। এছাড়া ফসল মাড়াইয়ের কাজে বিভিন্ন ধরনের থ্রেশারের ব্যবহার বাড়ছে। বছরে প্রায় ৫০০ থ্রেশার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ধান কাটার যন্ত্র ‘রিপার’- এর বিক্রির পরিমাণ বর্তমানে প্রায় তিন হাজার। জানা গেছে , দেশে ২০১৬-১৭ সাল থেকে অধিক হারে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া ও বস্তাবন্দি করার জন্য ব্যবহার করা হয় কম্বাইন হারভেস্টার এর ব্যৗবহার শুরু হয়। বর্তমানে বছরে প্রায় ২০০ কম্বাইন হারভেস্টার বিক্রি হচ্ছে। ধান রোপণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার। তবে এ যন্ত্রের ব্যবহার এখনো বাড়েনি। বছওে গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার মেশিন বিক্রি হচ্ছে।উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষিযন্ত্রের ব্যবহারের বিকল্প নেই: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক তথ্যে দেখা গেছে, কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ফসল লাগানোর আগে জমি তৈরির ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ব্যবহার হচ্ছে ৯০-৯৫ শতাংশ জমিতে। এছাড়া বালাইনাশক ব্যবহারে ৯০ শতাংশ এবং ফসল মাড়াইয়ে ৭৫ শতাংশ যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে। তবে শুধু শস্য রোপণে যন্ত্রের ব্যবহার এখনো কম। কারণ এ যন্ত্রটি দামি ও ভারী।অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ’র সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী ভোরের আকাশ’কে জানান, দেশে যন্ত্রাংশের উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হলে কৃষকরা কম দামে এসব যন্ত্রপাতি কিনতে পারবেন। তিনি বলেন, আর বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পুরণে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে দেশে কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানোর বিকল্প নেই। কারণ প্রতি বছর কৃষিজমি কমছে। এছাড়া কৃষিকাজে শ্রমিকরাও দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছেন। অবস্থা এখন এমন দাড়িয়েছে যে, দেশের ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া এ সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাজার থেকে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা নতুন কোনো ঘটনা নয়। নিষিদ্ধ হওয়ার গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে পলিথিন নিয়ে লুকোচুরি খেলা প্রত্যক্ষ করে আসছে দেশবাসী। পরিবেশবিদরা বলছেন, ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারও পলিথিন নিষিদ্ধে বেশ সোচ্চার দেখাচ্ছে। পলিথিন পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে- এমন হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে রেখেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ২০২৪ সালের অক্টোবরে সুপারশপ এবং নভেম্বর থেকে বাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু নতুন এই ঘোষণার এক বছর পরও সফলতার চিত্র দৃশ্যমান হয়নি। মাসে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালিত হলেও কারখানা চালু থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্রই অব্যাহত রয়েছে পলিথিনের ছড়াছড়ি।পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, ২০০২ সালে ১ মার্চ আইন করে বিষাক্ত পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। তবে দেশে পলিথিনের ব্যবহার কমেনি; বরং গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়তে দেখা গেছে। এরপর সরকার ২০১০ সালে আরেকটি আইন করে। কিন্তু এই আইনও বাস্তবে কোনো কাজ দেয়নি।সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা সম্পর্কে অবগত নন ব্যবহারকারীরা। বিষয়টি নিয়ে ভাবেন না দোকানীরা। মাছ, মাংস, শাক-সবজিসহ এমন মুদি দোকান পাওয়া যাবে না, যেখানে পলিথিন ব্যবহার হয় না। রাজধানীর কারওয়ান বাজার রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে মাছের আড়ত ও খুচরাবাজার।গত শুক্রবার এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, মাছের বাজারটির বিভিন্ন পয়েন্টে খুচরা পলিথিনের ভাসমান দোকান। দোকানে রয়েছে বিভিন্ন সাইজের পলিথিন। পাশেই অনেক মানুষ টাকার বিনিময়ে মাছ কাটার পসরা সাজিয়ে রেখেছে।খুচরা পলিথিন বিক্রেতা পলি বেগম ভোরের আকাশকে জানান, ‘মাছ কেনার আগে ও পরে অনেক ক্রেতা পলিথিন কিনে নেন। আমরা কেজিতে পলিথিন বিক্রি করি না। ১০ টাকায় বড় সাইজের দুটি এবং ছোট সাইজের চারটি পলিথি পাওয়া যায়।’পলিথিন নিষিদ্ধের জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘বাজার থেকে পলিথিন উঠিয়ে দেওয়া সম্ভব না। সরকার বহুবার এমন ঘোষণা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কোনো কাজে দেয়নি।’মাছ বিক্রেতা মো. তাহের ভোরের আকাশকে বলেন, ‘বিকল্প বের না হলে পলিথিন বন্ধ করা যাবে না। সরকারও বিষয়টি ভালো করে জানে। সরকারের পলিথিন নিষিদ্ধের খেলা নতুন কিছু না।’কারওয়ান বাজারের শাক-সবজির দোকানেও পলিথিনের ছড়াছড়ি। প্রতিটি পণ্যের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন। আবার পণ্যভর্তি একাধিক পলিথিন আবার একটি বড় পলিথিনে ভরিয়ে বিক্রেতারা তুলে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে। পাঁচটি পণ্য কিনেছেন মো. সফিক। তিনি ব্যবহার করেছেন মোট ছয়টি পলিথিন।তিনি ভোরের আকাশকে বলেন, একটি পলিথিনে একাধিক পণ্য একসঙ্গে ভরালে পণ্যের মান নষ্ট হয়। তাই প্রতিটি পণ্যের জন্য পৃথক পৃথক পলিথিন ব্যবহার করেছি।’একই চিত্র দেখা গেছে মগবাজার দিলুরোডের ফাহিন স্টেশনারি দোকানে। বিক্রেতা মো. জয়নাল ভোরের আকাশকে বলেন,‘ শুধু কাঁচাবাজার নয়, মাছ, মাংস, শাক-সবজিসহ অধিকাংশ পণ্যের বাজারে পলিথিন থাকতেই হবে। পলিথিন ছাড়া যেন বাজার চলে না। তাছাড়া অধিকাংশ ক্রেতাই প্রস্তুতি নিয়ে অন্য ব্যাগ নিয়ে বাজারে যান না। সারাদিনের অফিস শেষে অনেকেই বাজার করে বাসায় ঢুকেন। এক্ষেত্রে পলিথিন লাগবেই।’শুধু মুদি দোকান বা কাঁচাবাজার নয়, খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্টেও পলিথিনের খোঁজ পাওয়া গেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মগবাজার মসজিদ রোডের সাত তারা রেস্টুরেন্টের হোটেল বয় জুবায়ের ভোরের আকাশকে জানান, ‘প্রতিদিন অনেক খাবার পার্সেল যায়। ভাত-তরকারি পার্সেল করাতে পলিথিন ব্যবহার করা হয়। পলিথিনে ভর্তি করানোর পর অন্য কোনো ব্যাগে রাখা যায়।’পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ক্ষতি বিবেচনায়, ২০০২ সালে আইন করে পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাতকরণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। সে সময় বাংলাদেশ ছিল এমন পদক্ষেপ নেয়া বিশ্বের প্রথম দেশ। যদিও পশ্চিমা বিশ্বের বিবেচনায় বাংলাদেশে পলিথিন ব্যবহারের শুরুটা অনেক পরের দিকে শুরু হয়েছিল। আইন করে নিষিদ্ধ করাটা কাজেও এসেছিল। ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোটামুটি পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার সেভাবে দেখা যায়নি। এরপর ধীরে ধীরে নজরদারির অভাবে বাজারে জায়গা ফিরে পায় পলিথিন। এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের সংস্থার একটি হিসেবে প্রতিদিন ঢাকা শহরেই সাড়ে চার কোটি পলিথিন ব্যাগ বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেয়া হয়। তাদের গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী যারা প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেন তাদের উপরই বিষাক্ত রাসায়নিকের স্বাস্থ্যগত প্রভাব বেশি পড়ে।এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড. শাহরিয়ার হোসেন মনে করেন, যেটি আগে থেকেই নিষিদ্ধ সেটি আইনের প্রয়োগ না থাকার কারণেই বিস্তার হয়েছে এবং বর্তমানে আইনের প্রয়োগে বাধা সৃষ্টিটাও রাজনৈতিকভাবে সরকারকে অপ্রস্তুত করতে করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে তো চ্যালেঞ্জ আসবেই, কিছু সুবিধাবাদী লোকজন তো এটা করতেই চাইবে। তারপরও ক্ষতির দিক বিবেচনায় আইনের প্রয়োগ করতে হবে।’পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারে ২০১০ সালে আরেকটি আইন করা হয়। যদিও আইন প্রয়োগের অভাব এবং বিকল্প ব্যবস্থার সংকটে পলিথিনের ব্যবহার রোধ করা যায়নি। তবে পলিথিন বন্ধের ব্যাপারে সরকারি তোড়জোড়ের কথা যতটা শোনা গেছে, বাস্তবে বাজারে বা যেসব স্থানে পলিথিন বিক্রি করা হয়, সেসব স্থানে অভিযান তেমন দেখা যাচ্ছে না। ফলে সুপারশপ গুলোয় পলিথিন ব্যবহার বন্ধ হলেও খোলা বাজারে এখনো প্রকাশ্যেই পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার হচ্ছে।বিকল্প সংকট?পলিথিন নিষিদ্ধের ব্যাপারে একটা প্রশ্ন অনেক সময়েই ঘুরে ফিরে আসে, সেটি হচ্ছে এর বিকল্প কী? ২০২৪ মালের নভেম্বর মাসেই যখন বাজারে পলিথিন নিষিদ্ধ থাকার কথা, তখনও দেদার পলিথিনের ব্যবহার দেখা গেছে। যারা ক্রেতা তাদের বড় অংশই সরকারের পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও সহজলভ্য কোনো বিকল্প না থাকার কথা উল্লেখ করেন। বিক্রেতারাও জানান বিকল্পের ঘাটতির কথা।পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এক্ষেত্রে উল্লেখ করেন, ১৯৯৫-৯৬ সালের আগে পলিথিন না থাকার কথা। সেসময় বাড়ি থেকে চট বা পাটের ব্যাগ নিয়ে মানুষ বাজারে যেতেন যেটা ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা হতো। সমস্যা হচ্ছে এতটা কম খরচে সহজ বিকল্প এখনও নেই। মাঝে পাট থেকে তৈরি সোনালী ব্যাগ নিয়ে আশার জায়গা তৈরি হলেও, বাজারে সেসব ব্যাগ কখনও সেভাবে দেখা যায়নি।’তবে এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যখন কড়াকড়ি ছিল তখন বিকল্প উপায়েই বহন করা হতো। তখন মাছ-মাংস থেকে পানি ঝরিয়ে কাগজে বা পাতায় মুড়ে এরপর প্যাকেটে বা ব্যাগে দেওয়া হতো। চাহিদা যখন তৈরি হবে তখন এগুলো চলে আসবে। আমরা যদি চাহিদা তৈরি না করেই বলি বিকল্প নেই সেটা ঠিক হবে না।’স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ : যেকোনো ধরনের প্লাস্টিক পণ্য পরিবেশে মিশে যায় না বলে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্যে সমস্যা তৈরি করে। পরিবেশে মিশে না গেলেও প্লাস্টিকের কণা পরিবেশে ঠিকই ছড়িয়ে যায় যেগুলো খাদ্যের সাথে মিশে একরকম বিষাক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে।এসডোর গবেষণা অনুযায়ী খাবার, পানি ও বাতাস, প্রায় সবদিকেই প্লাস্টিকের কণা ছড়িয়ে পড়ে মানবদেহের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁঁকি সৃষ্টি করে। দূরবর্তী পর্যায়ে বিবেচনা করলে চিকিৎসা বা ওষুধপত্রের খরচটাও কম হয় না যেটা হয়তো বিবেচনা করা হয় না। বেশি মাত্রায় প্লাস্টিক থেকে নিঃসৃত রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসলে মেদ, হাঁপানি, হৃদরোগ, পাকস্থলি, ফুসফুস অথবা দৃষ্টিশক্তি সমস্যা, চর্মরোগ, আরও নানাবিধ রোগের কারণ হয় বলে উল্লেখ করা হয় এসডোর প্রতিবেদনে।ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রভাবে ঢাকায় ঔষধ ও চিকিৎসাবাবদ মাসে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়। প্লাস্টিক পণ্যে সেসব রাসায়নিক উপাদান ভরপূর থাকে এবং ক্রমাগত সেসব বিষাক্ততার সংস্পর্শ মানুষের জন্য দূরবর্তী এমন প্রভাব তৈরি করতে পারে। এছাড়া মাটির সাথে সাথে মাছ-মাংস, এমনকি খাবার পানিতেও প্লাস্টিকের কণার দূষণ দেখা যাচ্ছে যেটা সরাসরি মানুষের দেহে প্রবেশ করে ঝুঁঁকি সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করছেন ড. হোসেন।এর বাইরে বিভিন্ন জায়গায় পলিথিনের কারণে পানি জমে যাওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি করছে যা থেকে মশার বিস্তার এবং ডেঙ্গুর মতো রোগের কারণ হচ্ছে বলে জানান তিনি।সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ প্রচলনে সরকার ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগ সফল করতে ভোক্তাদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। এরপরও নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করা হবে।’তিনি বলেন, ‘পলিথিনের বহুল ব্যবহার মাটি, পানি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি তৈরি করছে। বিপরীতে পাটের তৈরি ব্যাগ টেকসই, পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে গৃহীত এ প্রকল্পের আওতায় টিসিবির ডিলার এবং বাজারের বণিক সমিতির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ বিক্রি করা হবে।’ভোরের আকাশ/এসএইচ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান মার্কিন সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারেক এম. আরিফুল ইসলাম।প্রথম বৈঠকটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকারের সঙ্গে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের পাশাপাশি আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়।রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে আন্ডার সেক্রেটারি হুকার বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। এর জবাবে ড. খলিলুর রহমান সম্প্রতি জাতিসংঘ আয়োজিত আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা ঘোষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।পরে প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক ও ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। সেখানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিস্তৃত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়।এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গেও বৈঠক করেন। আলোচনায় সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনা-সংক্রান্ত অগ্রগতি এবং পরবর্তী পদক্ষেপের দিকগুলো তুলে ধরা হয়। ড. রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ঘাটতি আরও হ্রাস পেলে শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান। জবাবে ব্রেন্ডান লিঞ্চ বলেন, শুল্ক চুক্তি কার্যকর হলে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমতে থাকলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।ভোরের আকাশ//হর
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দেওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমসহ অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা শহিদুল আলম ও গাজার মানুষের পাশে আছি, থাকবও।”শনিবার (৪ অক্টোবর) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।ড. ইউনূস বলেন, “২০১৮ সালে হাসিনা সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কারণে শহিদুল আলমকে টানা ১০৭ দিন কারাবরণ করতে হয়েছিল। তখন যেমন সাহস, দৃঢ়তা ও অবিচল মানসিকতা তিনি দেখিয়েছিলেন, গাজার উদ্দেশে এই অভিযানে অংশ নিয়েও সেই একই অদম্য মনোবল প্রকাশ করেছেন। আজ তিনি বাংলাদেশের সংগ্রামী চেতনার প্রতীক।”জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া নিজের বক্তব্যের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “মানবজাতির দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত অগ্রগতি আজ ধ্বংসের মুখে। গাজায় যা ঘটছে, তার চেয়ে ভয়াবহ উদাহরণ আর কোথাও নেই।”তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গাজায় ক্ষুধার্ত শিশুরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে নিরীহ মানুষদের। হাসপাতাল, স্কুল, এমনকি সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকা পর্যন্ত মুছে দেওয়া হচ্ছে মানচিত্র থেকে।”ভোরের আকাশ//হর