শিগগিরই হচ্ছে নতুন দুই বিভাগ ও দুটি উপজেলা
সরকার ফরিদপুর ও কুমিল্লা নামে নতুন দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠনের পথে রয়েছে। সেই সঙ্গে কুমিল্লার মুরাদনগর ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ভেঙে নতুন দুটি উপজেলা গঠনের প্রস্তাবও প্রায় চূড়ান্ত। বিষয়টি আগামী মাসে নিকার বৈঠকে চূড়ান্ত হতে পারে।
প্রি-নিকার বৈঠকে ফরিদপুর ও কুমিল্লার নামেই নতুন দুটি বিভাগ এবং নতুন দুটি উপজেলার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন বিভাগের প্রস্তাবিত জেলা:
ফরিদপুর বিভাগ: ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর।
কুমিল্লা বিভাগ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী।
বর্তমানে দেশে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে—ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ময়মনসিংহকে বিভাগ হিসেবে উন্নীত করা হয়েছিল।
নতুন উপজেলা প্রস্তাব:
বাঙ্গরা উপজেলা: মুরাদনগরের বাঙ্গরা থানার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হবে।
ফটিকছড়ি উত্তর: ফটিকছড়ি উপজেলা ভেঙে নতুন এই উপজেলা গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ‘পদ্মা বিভাগ’ ও ‘মেঘনা বিভাগ’ প্রস্তাব উঠে আসলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তা স্থগিত হয়েছিল।
সাবেক এক সচিব জানান, নতুন বিভাগ গঠিত হলে কিছু প্রশাসনিক পদ সৃষ্টি হবে, কিন্তু জনগণের খরচও বাড়বে। অন্যদিকে স্থানীয় রাজনীতিকরা নতুন প্রকল্পের সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক ঘণ্টার নোটিশে ৬৪ জেলার ডিসিদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করতে পারে। এই সময়ে নতুন বিভাগ বাড়ানো অযৌক্তিক।”
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সর্বাত্মক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। নির্ধারিত মাসে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে- অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির মন্তব্যে এমন শঙ্কাও প্রকাশ পাচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ ইতোমধ্যে চলতি মাসে দু’বার স্পষ্টভাবে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের দায়িত্বশীল নেতারাও একই সুরে ঝুঁকির কথা বলছেন।এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরাজ করছে পারস্পরিক টানাপোড়েন। কঠিন শর্তজুড়ে দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয়টি দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘনিয়ে আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। পাল্টে যাচ্ছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের অভিন্ন ঐক্য ভুলে দলীয় স্বার্থ রক্ষায় বেশি ঝুঁকছে দলগুলো। শুধু জুলাই সনদে নয়, বিভিন্ন কর্মসূচিতে পরস্পরের প্রতি দলগুলোর মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে আক্রমণাত্মক আচরণ ও মনোভাব ফুটে উঠছে। দাবি পূরণ না হলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার হুমকিও নানাভাবে দিয়ে যাচ্ছে অনেক রাজনৈতিক দল। টেবিলে আলোচনা রেখেই ইতোমধ্যে রাজপথে কর্মসূচি শুরু করেছে জামায়াতসহ সাতটি রাজনৈতিক দল। দলগুলোর মাঝে সৃষ্ট এমন গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতি ‘নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ’কে পুনর্বাসিত হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে পারে- এমন আতঙ্কও করছেন বিশ্লেষকরা।ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিদিনই ঘোষিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে যাচ্ছেন। কোনো শক্তিই নির্বাচন ব্যাহত করতে পারবে না বলেও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছেন তারা। নির্বাচন আয়োজনে সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও জুলাই সনদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যে স্বস্তিবোধ করছেন না সাধারণ মানুষ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনের দিনগুলোতে বিপদের অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন তারা।জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির শঙ্কানির্ধারিত মাসে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে- অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির মন্তব্যে এমন শঙ্কাও প্রকাশ পাচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ ইতোমধ্যে চলতি মাসে দু’বার স্পষ্টভাবে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনো অনিশ্চয়তা দেখি না। আমি যেটা মনে করি, ফেব্রুয়ারিতে অবশ্যই নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচন না হলে দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে, সে রকম পরিস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটা একধরনের হুমকি তৈরি করতে পারে। একধরনের বিপদ তৈরি করতে পারে। এটা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে। সবাইকেই একসঙ্গে আসতে হবে। সরকারকে কঠোর অবস্থান নিয়ে, রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্র করে, সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনটা যেন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হয়।’এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ‘নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার পথ’ শিরোনামের গোলটেবিল বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে বাংলাদেশে কেবল অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে, তা নয়; জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। আমি তা-ই মনে করি। সেই কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রয়োজন এ জিনিসটা মোকাবিলা করা।’গত ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, এটি কনটিনিউ প্রসেস। বিচারেও টাইম লিমিট করা যায় না, তাতে অবিচার হবে। সেটা (বিচার) চলবে, যে সরকারই আসুক। কিন্তু নির্বাচনকে কন্ডিশনাল করা যাবে না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে রিজিওনাল সিকিউরিটির জন্য থ্রেড হতে পারে।’তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠান যেন না হতে পারে, যেন একটি অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়, ফ্যাসিবাদী শক্তি সেই চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি সুযোগ পেলে, আস্কারা পেলে জাতীয় জীবনের জন্য, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। আমি বলছি, এটি রিজিওনাল সিকিউরিটির জন্য থ্রেড হতে পারে। প্রতিবেশী শক্তিধর দেশগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখানে দুটি রিজিওনাল শক্তি। আমরা বাংলাদেশকে সেখানে নিতে চাই না। নির্ধারিত টাইম লাইনে নির্বাচন হতেই হবে।’সম্প্রতি এক টেলিভিশন টক শোতে চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ বলেছেন, দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিরাপদে দায়িত্ব থেকে সরে আসতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচন না হলে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর উত্থানের সুযোগ করে দেবে এবং গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে এতদূর এগিয়ে আসার পর যদি নির্বাচন না হয়, তবে তা একটি অস্বাভাবিক অবস্থা হবে, যা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’তিনি আরও বলেন,‘এই ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী সুযোগ নেবে। এই পরিস্থিতি সরকার বনাম কোনো রাজনৈতিক দল বা দলগুলোর মধ্যে সংঘাতের জন্ম দেবে, যা কেবল ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। গৃহযুদ্ধ হলে তা গৃহের ভেতরে সীমিত থাকবে না, বরং গৃহে গৃহে ছড়িয়ে পড়বে। এতে মধ্যবর্তী স্থান আর নিরাপদ থাকবে না।’সম্প্রতি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘দলীয় এজেন্ডার কারণে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে গেলে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। দেশের বিদ্যমান নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সে রকম পরিস্থিতিতে আম-ছালা দুটোই চলে যেতে পারে।’অনিশ্চয়তা কাটেনি জুলাই সনদের চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় মাসের জন্য কাজ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম দফার আনুষ্ঠানিক আলোচনা গত ৩১ জুলাই শেষ হয়েছে। পূর্বঘোষিত জুলাইয়ের মধ্যে সনদ ঘোষণা করতে পারেনি কমিশন। তারপর আগস্টের প্রথমার্ধেও সনদ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল কমিশন। দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকায় কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই মেয়াদেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত তৃতীয় দফা মেয়াদ বেড়েছে ঐকমত্য কমিশনের। কিন্ত দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের তুলনায় অনৈক্যের তীব্রতাই যেন বেড়েছে।অস্থিরতার শঙ্কা বাড়ছে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুসারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর পাঁচ মাস বাকি। কিন্ত বিষয়টি নিয়ে জনমনে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে- ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। কিন্ত দলগুলোর মতবিরোধ এবং জটিল জটিল শর্তজুড়ে দেওয়ার মধ্যে দেশে সম্ভাব্য অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘দাবিগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক পক্ষগুলো একে অপরকে ছাড় দিতে হবে। অন্যথায় দেশের জন্য সমূহ সংকট তৈরি করবে। আর সেই সংকট সবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে সবকিছু চিন্তা-ভাবনা করেই সব করা উচিত।’গত ১৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদসহ সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়গুলোতে সমঝোতা না হলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে।’রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘দেশে যখন একটা সংকট হয়, তখন সব রাজনৈতিক শক্তি একত্র হয়ে সেই সংকট থেকে উত্তরণের চেষ্টা করে। নেপালে যে ঘটনা ঘটল, আমরা জানলাম, সেখানে দ্রুত একজনকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং তিন-চারজনের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে। সে দেশের জনগণ এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। কিন্ত আমাদের এখানে তেমনটা হয়নি। আমাদের রাজনৈতিক শক্তিগুলো কোনো বিষয়েই তো একমত হতে পারছে না। তারা যদি একমত না হয় তাহলে নির্বাচন ঝুলে যাবে এবং দেশে ভয়ানক অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চারদিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। আজ রোববার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ পূজা উৎসব। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২ অক্টোবর পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের শেষ হবে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চারদিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে থাকছে টানা ১২ দিনের ছুটি।জনপ্রশাসর মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগামী ১ অক্টোবর নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী উপলক্ষে একদিন ছুটি থাকবে। এরপর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চারদিন ছুটি উপভোগ করতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।এদিকে, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে টানা ১২ দিনের ছুটি থাকছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এই ছুটি শুরু হয়ে চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত। দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক তথা স্কুল-কলেজগুলো এ ছুটির আওতায় পড়বে। এছাড়া দুর্গাপূজা, বিজয়া দশমী, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে ১২ দিনের ছুটি থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। আজ রোববার থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত (মোট ১২ দিন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং অধিভুক্ত কলেজের পূর্বেনির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। আর ছুটির জন্য স্থগিত পরীক্ষাগুলোর নতুন সময়সূচি পরে জানানো হবে।শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পূজার ছুটি সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গত সপ্তাহেই জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায়, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত হাইস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পরীক্ষার তারিখ না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই ১২ দিনের মধ্যে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা, লক্ষ্মী পূজার ছুটিও পড়েছে।মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা জারি করা আদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আদেশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বছরের ছুটির তালিকা প্রণয়ন করা হয়। তালিকায় দুর্গাপূজা, বিজয়া দশমী, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিন অবকাশকালীন ছুটি অনুমোদন করা হয়। যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যেও সঙ্গে এসব উৎসব উদযাপনের জন্য আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো পরীক্ষার দিন ধার্য না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। পঞ্জিকা অনুসারে এ বছর মহাষষ্ঠী ২৮ সেপ্টেম্বর, ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর মহাদশমী হবে। উল্লেখ্য, দুর্গাপূজা উপলক্ষে দশমীর দিন সরকারি ছুটি থাকে। আর মহাষষ্ঠীর দিন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজার ছুটি শুরু হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক স্কুলের ছুটির তালিকা ও বর্ষপঞ্জি অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া আট দিন বন্ধ থাকবে স্কুলগুলো। এরপর ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ক্লাস। সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষাপঞ্জি ও ছুটির তালিকা অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানের ছুটিও শুরু হচ্ছে ২৮ সেপ্টেম্বর। ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ১০ দিন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোও বন্ধ থাকবে। ১০ ও ১১ অক্টোবর শুক্র ও গতকাল শনিবার হওয়ায় কলেজগুলোতে ক্লাস শুরু হবে ১২ অক্টোবর। অবশ্য, সরকারি চাকরিজীবীরা বাড়তি ছুটি পেলেও বিভিন্ন উৎসবে দেশের বেসরকারি খাতের কর্মচারীরা সরকার ঘোষিত ছুটি পান না। বিষয়টি দেশের চাকরিজীবীদের মধ্যে একধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করে, যা দেশের সংবিধান ও মানবতাবিরোধী বলে মনে করেন তারা বিশ্লেষকরা।এছাড়া একদেশে দুই ধরনের ‘ছুটিনীতি’ বেসরকারি কর্মচারীদের মধ্যে একধরনের হীনমন্ন্যতাও সৃষ্টি করে। এজন্য দেশের সুষম উন্নয়নে এবং বৈষম্য রোধকল্পে সকল সরকারি ছুটি সরকারি-বেসরকারি খাতে কর্মরতদের একই হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।এদিকে, শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে অনেকটা উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। টানা চার দিনের সরকারি ছুটি উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।জানা গেছে, এ বছর সারাদেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৮৯৪টি বেশি মণ্ডপে দুর্গোৎসব পালন করা হবে।সারাদেশের পুজামণ্ডপগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা : এদিকে, পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারা দেশে বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় ও রাখা হচ্ছে বিশেষ টহলের ব্যবস্থা।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উপলক্ষে সীমান্তবর্তী এলাকা এবং রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের দুই হাজার ৮৫৭টি পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি), মোতায়েন করা হয়েছে ৪৩০ প্লাটুন সদস্য।এছাড়াও সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল চালানো হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবির ২৪টি বেইজ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। উৎসব চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করছে তারা।জানা গেছে, বিজিবির নিরাপত্তাধীন মোট দুই হাজার ৮৫৭টি পূজামণ্ডপের মধ্যে সীমান্তবর্তী (সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের মধ্যে এবং পার্বত্য এলাকার ১৫টি পূজামণ্ডপসহ) এলাকায় এক হাজার ৪১১টি এবং সীমান্তবর্তী এলাকার বাইরে রয়েছে এক হাজার ৪৪৬টি পূজামণ্ডপ। পূজা উপলক্ষে যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধে বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারি শক্তিশালী করার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল চালানো হচ্ছে। দেশের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারে সে জন্য বিজিবি সারা দেশে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সরকার ফরিদপুর ও কুমিল্লা নামে নতুন দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠনের পথে রয়েছে। সেই সঙ্গে কুমিল্লার মুরাদনগর ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ভেঙে নতুন দুটি উপজেলা গঠনের প্রস্তাবও প্রায় চূড়ান্ত। বিষয়টি আগামী মাসে নিকার বৈঠকে চূড়ান্ত হতে পারে।প্রি-নিকার বৈঠকে ফরিদপুর ও কুমিল্লার নামেই নতুন দুটি বিভাগ এবং নতুন দুটি উপজেলার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।নতুন বিভাগের প্রস্তাবিত জেলা:ফরিদপুর বিভাগ: ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর।কুমিল্লা বিভাগ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী।বর্তমানে দেশে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে—ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ময়মনসিংহকে বিভাগ হিসেবে উন্নীত করা হয়েছিল।নতুন উপজেলা প্রস্তাব:বাঙ্গরা উপজেলা: মুরাদনগরের বাঙ্গরা থানার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হবে।ফটিকছড়ি উত্তর: ফটিকছড়ি উপজেলা ভেঙে নতুন এই উপজেলা গঠন করা হবে।উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ‘পদ্মা বিভাগ’ ও ‘মেঘনা বিভাগ’ প্রস্তাব উঠে আসলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তা স্থগিত হয়েছিল।সাবেক এক সচিব জানান, নতুন বিভাগ গঠিত হলে কিছু প্রশাসনিক পদ সৃষ্টি হবে, কিন্তু জনগণের খরচও বাড়বে। অন্যদিকে স্থানীয় রাজনীতিকরা নতুন প্রকল্পের সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক ঘণ্টার নোটিশে ৬৪ জেলার ডিসিদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করতে পারে। এই সময়ে নতুন বিভাগ বাড়ানো অযৌক্তিক।” ভোরের আকাশ/হ.র
৭৩ পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর তালিকা প্রকাশ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদনগুলো যথাযথভাবে যাচাই বাছাইঅন্তে এ সংক্রান্ত নীতিমালার ৪.৪ (ক) অনুচ্ছেদের আলোকে নিম্নেবর্ণিত ৭৩টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারো কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের (২০ অক্টোবর ২০২৫) মধ্যে সিনিয়র সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখপূর্বক ছয় সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে। আপত্তির শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকা দেখুন-ভোরের আকাশ/এসএইচ