ফজলুর রহমানের মন্তব্য সরকারের অবস্থান নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বা নীতির প্রতিফলন ঘটায় না।
শুক্রবার (২ মে) এক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট করতে চায় যে, মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যে মন্তব্য করেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত মতামত। এ মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বা নীতির প্রতিফলন নয়। তাই সরকার কোনোভাবেই এ ধরনের মন্তব্য অনুমোদন কিংবা সমর্থন করে না।
সরকারসংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমানের ব্যক্তিগত মন্তব্যকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক সম্মান এবং সব দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দাবি করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভোরের আকাশ/এসআই
সংশ্লিষ্ট
বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বারসিকের গবেষণায় বলা হয়েছে শব্দ দূষণের কারণে দেশের কম করে দেড় কোটি মানুষ বধির হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ ভয়াবহ ঝুঁকি থেকে রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে সংস্থাটি। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৭ মে) মিরপুর ২ নম্বরের শেরে-বাংলানগর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভিআইপি গেটে ঢাকা শহরের শব্দ দূষণ রোধে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে সংস্থাটি। মানববন্ধনে মিরপুর এলাকার আপামর জনসাধারণসহ প্রায় ৫৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।এতে সভাপতিত্ব করেন মিরপুর ‘ট’ ব্লকের বাসিন্দা মোসাম্মাদ সোনিয়া বেগম এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করে বারসিকের সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম। মানববন্ধনের ধারণাপত্র পাঠ করে বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা হেনা আক্তার রুপা।বারসিক সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সকলেই জানি শব্দ দূষণ দিন দিন আমাদের জীবনকে অচল করে দিচ্ছে। যানবাহনের হর্ন বন্ধ করলে নগরের তিনভাগে দুইভাগ শব্দ দূষণ বন্ধ হয়ে যাবে। হাইড্রোলিক হর্ন একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া দরকার এবং যারা অকারণে শব্দ দূষণ করে তাদেরকে আইন অনুযায়ী জরিমানা অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা জানি উচ্চশব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয়, এবং মাংসপেশির সংকোচন করে।এছাড়া শ্রবণশক্তি কমে আসে বা বধির হওয়ার মতো অবস্থা হয়। আমরা দেখি, প্রতি বছর নববর্ষ পালনের নামে অগনিত বাজি ফুটিয়ে, ফানুস উড়িয়ে বড় বড় শহরকে আলোকিত এবং শব্দে নগরীতে পরিণত করা হয়। ফল হিসেবে দেখা যায় শহরের অগনিত পাখির মৃত্যুঘটে শুধু মব্দের কারণে। এই হোলি খোলা বন্ধ করতে হবে। সকল যানবাহনকে আইনের মধ্যে থেকে তাদের যানবাহন পরিচালনা করতে বাধ্য করতে হবে। না হয়ে নগরের অধিকাংশ মানুষ বধির হয়ে যেতে পারে।মানববন্ধনের ধারণাপত্রে বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা হেনা আক্তার রুপা বলেন, শব্দদূষণ এই শহরে আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। ভোর থেকে শুরু হওয়া শব্দের অত্যাচার চলে গভীর রাত অবধি। সিগন্যাল ছাড়তে না ছাড়তেই; কে কার চেয়ে বেশি জোরে হর্ন বাজাবেনÑ চলতে থাকে সেই প্রতিযোগিতা। মানুষের নিরাপদ শব্দসীমা ৪০-৬০ ডেসিবেল হলেও বাস্তবতা হচ্ছে নীরব এলাকাতেই দূষণের মাত্রা ৮৫ ডেসিবেলের বেশি। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের শব্দ দূষণে ২০৪৫ সালের মধ্যে শ্রবণশক্তি হারাতে পারেন দেশের দেড় কোটি মানুষ। ভয়াবহ এই দশা থেকে বেরিয়ে আসতে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোসহ শব্দের মাত্রা কমিয়ে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনএপি) ‘ফ্রন্টিয়ারস ২০২২ : নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস [ঋৎড়হঃরবৎং ২০২২: ঘড়রংব, ইষধুবং ধহফ গরংসধঃপযবং]’ শীর্ষক সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী শব্দ দূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের দুটি শহর। একটি আমাদের প্রাণের শহর ঢাকা এবং অন্যটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী রাজশাহী।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকার জন্য অনুমতিযোগ্য শব্দের মাত্রা ৫৫ ডিবি (ডেসিবেল) এবং বাণিজ্যিক এলাকার জন্য ৭০ ডিবি। সেখানে ঢাকায় শব্দের মাত্রা ১১৯ ডেসিবল এবং রাজশাহীতে ১০৩ ডেসিবল পাওয়া গেছে।গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েক বছর ধরে ঢাকা শহরের প্রায সব ব্যস্ত এলাকাতেই শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলা শহরের শব্দ দূষণের উৎসগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে। বায়ু দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর মতে ঢাকা শহরের ১২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খবয় (এলইকিউ) মান ছিল ৮০ ডেসিবেলের বেশি।এছাড়াও মিরপুর ১ বাস স্ট্যান্ড, আজিমপুর মোড়, জিপিও মোড়, মালিবাগ রেলগেট, উত্তর বাড্ডা মোড়, আবুল হোটেল মোড়, ফার্মগেট মোড়ে শব্দের মানমাত্রা ৯০ ডেসিবলের ওপরে পাওয়া গিয়েছে। যদিও শব্দ দূষণ রোধে দেশে আইন আছে। সেই আইনে জেল-জরিমানার বিধানও আছে। তবে তার প্রয়োগ হয় কতটা, তা নিয়ে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউনিসেফ ও বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, বাংলাদেশে প্রায় ৩০টি জটিল রোগের অন্যতম প্রধান উৎস শব্দ দূষণ। ক্রমাগত বাড়তে থাকা শব্দের মাত্রা আগামীতে অসুস্থ প্রজন্ম জন্ম দিবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আকস্মিক উচ্চশব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশির সংকোচন করে এবং পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়।এ ছাড়া শ্রবণশক্তি কমে আসে বা বধির হওয়ার মতো অবস্থা হয়। মাথাব্যথা, বদহজম, অনিদ্রা, মনোযোগ কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, অযথা বিরক্তিবোধ এমনকি নানাবিধ মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। অন্যদিকে উচ্চশব্দ শিশু, গর্ভবতী মা, হৃদরোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শব্দ দূষণের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, আকস্মিক উচ্চশব্দ মানবদেহের রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশির সংকোচন করে, পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়, শিরা ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রচণ্ড চাপ দেয়।সম্মিলিত উদ্যোগই শব্দ দূষণের মতো একটি সামাজিক সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে। এজন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশসমূহ মধ্যে-বিধিমালা সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত জোনসমূহে (নীরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও মিশ্র) সাইনবোর্ড স্থাপন করে তা মান্যতার ব্যাপারে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। যেসব এলাকায় শব্দ দূষণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি সেসব এলাকাতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে ঢাকা শহরের আবাসিক এলাকাসমূহে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকরণ হচ্ছে যা ফলে শব্দ দূষণের পরিমাণ বাড়ছে। এক্ষেত্রে আবাসিক এলাকা সমূহকে বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তরিত না করা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হতে পারে।পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের সমন্বয় সাধন করতে হবে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬-এর শতভাগ বাস্তবায়ন, যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি বন্ধ করা, হর্ন বাজানোর শাস্তি বৃদ্ধি ও চালকদের শব্দ সচেতনতা যাচাই করে লাইসেন্স প্রদান করা শব্দ দূষণ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।বিশেষ করে হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন না বাজানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতায় পরিবেশ ক্যাডার ও পরিবেশ পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে। যানবাহনের চাপ কামানোর জন্য, গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।এর মাধ্যমে আমাদের এই মরণব্যধি শব্দদূষণ থেকে আমাদের কিছুটা রেহাই দিতে পারে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বারসিক প্রতিনিধি এশা আক্তার লাবন্য, কারিতাস প্রতিনিধি জসীম উদিন, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি দুলাল কর, ব্যবসায়ী মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আগামীর রাজনৈতিক নীতি প্রণয়ণে পরিবেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিকল্প নেই। কোটি মানুষের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চলগুলো তথা গোটা বাংলাদেশের মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের স্বার্থে পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনরা। শনিবার (১৭ মে) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলিনায়তনে ‘পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব দাবি জানানো হয়।বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও তাদের পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পল্যুশন স্টাডিস-ক্যাপস), পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’, সামাজিক আন্দোলন ‘নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ-নাবিক’ এবং সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-সিজিডি যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাবিকের সহ-সভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সাল।এ সময় ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দূষণের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ প্রায়শই প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। একটি পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তাদের সদিচ্ছাই পারে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে।বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। বিল, ডোবা, পুকুরসহ সব জলাশয় দূষণমুক্ত রাখতে হবে এবং খেলার মাঠগুলো উদ্ধার করতে হবে। দেশের ২০ কোটি মানুষ যদি দুটি করেও গাছ লাগায়, তাহলে ৪০ কোটি নতুন গাছ লাগানো সম্ভব। নেতাদের নিজেদের গাছ লাগাতে হবে এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরণ, পরিবেশবান্ধব কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর ওপর জোর দেন, যাতে সমাজের সব স্তরের মানুষ তা ব্যবহারে আগ্রহী হয়।তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি শহর পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে, অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে।গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, নীতিমালা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি। বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে, ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং বাড়ি নির্মাণে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এখনও পায়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। মতামত কখন জানানো হবে, সেটিও স্পষ্ট করে বলতে পারছে না আইন মন্ত্রণালয়।গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২০২০ সালের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের দায়ের করা নির্বাচনি মামলার রায় ও নির্বাচন কমিশনের আপিল দায়ের না করা বিষয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না, জানতে চেয়ে আইন ও বিচার বিভাগে চিঠি পাঠায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়, ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ধারা ৬ অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না, সেটি জানতে চাওয়া হয় ওই চিঠিতে।স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিনের সই করা ‘মতামত প্রদানসংক্রান্ত’ শিরোনামে চিঠিটিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে নির্বাচন কমিশনকে বিবাদী করে মামলা হলেও তাতে কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। মামলায় একতরফা রায় হয়েছে। আবার মামলার আরজি সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টের রায় আমলে না নিয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে রায় হয়। এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন হয়েছে। অথচ বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরাজিত মেয়র প্রার্থীর একই ধরনের আবেদন নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে খারিজ হয়েছে। আবার সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে প্রার্থীদের মেয়াদকাল সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে আইনগত বাধা রয়েছে কি না, সে বিষয়েও মতামত চেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।গতকাল শনিবার এ বিষয়ে যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইন ও বিচার বিভাগের মতামত এখন পর্যন্তও তাদের কাছে পৌঁছায়নি। স্থানীয় সরকার বিভাগ এই মতামতের পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। গতকাল বিকেলে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠির জবাব এখনো আসেনি।এর আগে আইন ও বিচার বিভাগের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিষয়টি অনেক দিক থেকেই জটিল। ইশরাককে এখন মেয়র নিয়োগ করা হলে তার মেয়াদ কতদিন হবে। তার কি নিয়োগ পাওয়ার সময় আছে কি না এবং নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর আইন মন্ত্রণালয়ের আর মতামত দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, সেটিও এখন পর্যালোচনা করতে হচ্ছে। ২০২০ সালে ১ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস ৪ লাখ ২৪ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট। ওই নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপির অভিযোগও ছিল বিস্তর। এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে শপথ নেন তিনি। আর মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০২০ সালের ১৬ মে।চলতি বছরের গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের ফল বাতিল করে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করে সরকারের গেজেট বাতিল করেন আদালত।এরপর ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে গত ২২ এপ্রিল চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন(ইসি)। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত আসার আগেই ইশরাককে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করেন ইসি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারত স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, এখন থেকে শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করেই পোশাক আমদানি করা যাবে।এছাড়া ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) ও ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্লাস্টিক পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী শুল্কস্টেশনেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।তবে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের আশঙ্কা, এ সিদ্ধান্ত দেশের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতকে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার বড় একটি অংশ তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য। এছাড়া প্লাস্টিক সামগ্রী ও আসবাব রপ্তানিও হয় ভারতীয় বাজারে।তবে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও ভাঙা পাথর।প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (মার্কেটিং) কামরুজ্জামান কামাল জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রায় সব স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতের বাজারে কনফেকশনারি, পানীয় ও প্লাস্টিক সামগ্রী রপ্তানি করি। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে আমাদের রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের বাধা আসবে।’এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এর ফলে কলকাতা ও নবসেবা বন্দর এবং কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুযোগ আর থাকছে না।বাংলাদেশও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল।এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং ভারতের সঙ্গে আলোচনা করব।’তিনি আরও জানান, রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিয়ে আলাদা বৈঠকও করতে পারেন।ভোরের আকাশ//হ.র