ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

ভোরের আকাশ ডেস্ক

প্রকাশ : ৩ ঘন্টা আগে

আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন। গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিনও কাটাচ্ছেন অনেকে। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি।

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে সাধের অনেক খাবারই জীবন থেকে বর্জন করতে হয়। সাধের মুসুর ডাল তো বটেই, জমিয়ে মাংস খাওয়াও বাদ হয়ের যায় জীবন থেকে। ওষুধ খেতেই হয় নিয়মমতো, না খেলেই অনিবার্য গাঁটের ব্যথা। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন। গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিনও কাটাচ্ছেন অনেকে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনিও বিকল হতে শুরু করবে।


ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে খারাপ। তার জন্য চিকিৎসা আছে, আছে কিছু সঠিক নিয়ম মানার বাধ্যবাধকতা। তবে বেশিরভাগই হয়তো মানেন না, আর মানলেও সঠিক জিনিসটা বাদ দিয়ে যেগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেন সেটা হয়তো ততটা কার্যকর নয়। আবার এটাও মনে করা ভুল যে ওষুধ খেয়ে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। কারণ, ওষুধ সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিন্তু পরিমিত জীবনযাপন করলেই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অন্যদিকে ইউরিক অ্যাসিডে আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ রোগীই অ্যাসিম্পটোম্যাটিক হাইপার-ইউরেসেমিয়াতে ভোগেন।

মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে বা ওজন বাড়লে কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড শরীরের অস্থিসন্ধি ও মূত্রনালিতে জমা হতে থাকে। তখন প্রস্রাবের সমস্যা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা শুরু হয়। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে কিডনিতে পাথরও জমতে পারে।

শরীরে এই রোগ ধরা পড়লে খেয়াল রাখতে হবে, এমন খাবার খাওয়া চলবে না, যাতে ওজন বেড়ে যায়।, সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত জল তো খেতেই হয়। আর নিয়ম করে ওষুধ খেয়ে যেতে হয়।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যদি নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা করা হয়, তা হলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। আর সেই সঙ্গেই খেতে হবে কিছু ‘ডিটক্স’ পানীয়। আয়ুর্বেদে এমন কিছু ডিটক্স পানীয়ের নিদান আছে, যা নিয়মমতো খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারবে না।

কোন কোন ভেষজ পানীয় ইউরিক অ্যাসিড কমাতে পারে?

গুলঞ্চের চা: বাড়িতে গুলঞ্চ গাছ থাকলে তার পাতা এবং কিছু ডাল কেটে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন সকালে এগুলি গুঁড়িয়ে নিন। এক গ্লাস মতো জলে এক থেকে দু’চামচ গুলঞ্চের গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটতে দিন ৫-৭ মিনিট। জলের পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেলে ছেঁকে নিয়ে পান করুন।

ত্রিফলা চা: ত্রিফলা হল আমলকি, হরিতকি, এবং বহেরা এই তিনটি ফলের মিশ্রণ। ত্রিফলা খেলে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ত্রিফলার আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে পেটের সমস্যা দূর করে। শরীরে জমে থাকা টক্সিন পদার্থ বার করে দিতেও আমলকি বেশ উপকারী। অন্য দিকে, হরিতকিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বহেরা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ত্রিফলা চূর্ণ করে নিয়ে, এক চামচ মতো ত্রিফলার গুঁড়ো এক কাপ জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে সেই জল খেতে পারেন। না হলে এক কাপ জলে এক চামচ ত্রিফলা গুঁড়ো মিশিয়ে তা ৫ মিনিট ধরে ফোটান। তার পর ছেঁকে সেই জল খেতে হবে। রাতে শোয়ার আগে এই জল খেলে ঘুম ভাল হবে এবং শরীরে টক্সিন জমতে পারবে না।

নিম-তুলসীর রস: নিম ও তুলসী দুইই শরীরকে ‘ডিটক্স’ করতে পারে। শরীরে প্রদাহ কমায়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং লিভার ও কিডনির স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। এক মুঠো নিমপাতা ও তুলসীপাতা ভাল করে ধুয়ে এক কাপ জলে ৫-৭ মিনিট ধরে ফোটান। এর পর ঠান্ডা করে ছেঁকে সেই জল খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমবে।

ধনে ভেজানো পানি: ধনে ভেজানো জল খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়, ওজন কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, কিডনির সমস্যা সারে। এক চা চামচ ধনের বীজ এক গ্লাস জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে সেই জল ছেঁকে খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমবে। ধনে ভেজানো জল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত হয়। ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।  

উপযুক্ত খাবার বাছাই করার কিছু পরামর্শ:

১. কম পিউরিনযুক্ত প্রোটিন: দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডাল, শাকসবজি।

২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমতে না দেওয়ার জন্য হাইড্রেট থাকা জরুরি।

৩. অ্যালকোহল ও মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলুন: এগুলো ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে।

যেসব খাবারে বেশি পিউরিন থাকে এবং এড়িয়ে চলা উচিত:

১. লাল মাংস (গরু, খাসি), অর্গান মিটস (যেমন লিভার, কিডনি),

২. কিছু সামুদ্রিক খাবার (যেমন সারডিন, অ্যাঙ্কোভি, মাশেলস, স্ক্যালপস),

৩. মিষ্টি পানীয় ও সোডা (বিশেষ করে যেগুলোতে ফ্রুক্টোজ থাকে),

৪. প্রসেসড খাবার অ্যালকোহল (বিশেষ করে বিয়ার ও হুইস্কি)

সব ধরনের প্রোটিন ইউরিক অ্যাসিড বাড়ায় না। সঠিকভাবে খাদ্য নির্বাচন ও পরিমিত গ্রহণই স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মূল চাবিকাঠি। তবে যাদের ইউরিক অ্যাসিড বেশি, তাদের জন্য একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া সব সময়ই ভালো।

ভোরের আকাশ/এসআই

  • শেয়ার করুন-

সংশ্লিষ্ট

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বিকল হতে পারে কিডনি

ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে

ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে

সকালে নাস্তা না করলে যে শরীরে ক্ষতি হয়

সকালে নাস্তা না করলে যে শরীরে ক্ষতি হয়

ডেঙ্গুর ভয়াবহতার শঙ্কা

ডেঙ্গুর ভয়াবহতার শঙ্কা

মন্তব্য করুন