লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ০১:১৪ পিএম
চুলের যত্নে কাঠের চিরুনি
সাজগোজের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ চিরুনি। চুলের সৌন্দর্য বিন্যাসে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিনের ব্যবহৃত এ পণ্যটি হওয়া চাই চুলবান্ধব। অন্যথায় তা হতে পারে শখের চুলের ক্ষতির কারণ। বর্তমানে অনেকে প্লাস্টিকের সাধারণ চিরুনি ব্যবহার করেন। তবে শত শত বছর আগে থেকেই কাঠের চিরুনির ব্যবহার হচ্ছে। আর কাঠের চিরুনি ব্যবহারের বিভিন্ন উপকারীতাও রয়েছে। কাঠের চিরুনির ইতিহাস অনেক পুরনো। মিসর, চীন, জাপান, ভারতীয় উপমহাদেশেসহ বেশ কিছু প্রাচীন সভ্যতায় কাঠের চিরুনি ব্যবহার ছিল। আসলেই কি কাঠের চিরুনি চুলের জন্য উপকারী সে বিষয় অনেকেই জানেন না। অস্ট্রেলিয়া হেয়ার অ্যান্ড স্ক্যাল্প ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে কাঠের চিরুনির বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।
চলুন, জেনে নিই চুলের যত্নে কাঠের চিরুনির উপকারিতা-
আয়নের সমতা করে: আমাদের চুল মূলত কার্বনের যৌগ, এটি আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের মতো কার্বন দিয়ে গঠিত। প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনিতে সাধারণত ধনাত্মক আয়ন থাকে, যখন চুল আচড়ানোর সময় স্ক্যাল্পে ফ্রিকশন হয় তখন এই ধনাত্নক আয়নগুলো আমাদের চুলকে ফ্রিজি ও ড্রাই করে দেয়। কিন্তু কাঠের চিরুনিতে এই ঝামেলা নেই, কারণ কাঠ নিজেই তো ফাইবার যেটা কিনা কার্বন দিয়ে তৈরি। তাই কাঠের চিরুনি দিয়ে আচড়ানোর সময় চুলে আয়ন কাউন্ট নিউট্রাল থাকে এবং ফ্রিজিনেস কন্ট্রোল হয়।
গ্রিজিনেস কমায়: কাঠের চিরুনির গঠনের জন্য এটি পুরো স্ক্যাল্পে সমানভাবে প্রেশার ডিস্ট্রিবিউট করে দেয়, ফলে সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোলে থাকে। সেবাম হলো আমাদের ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তেল, যেটাকে আমরা ন্যাচারাল অয়েল বলি। সমান প্রেশার ও জেন্টল ম্যাসাজের কারণে এই সেবাম শুধুমাত্র স্ক্যাল্প নয় বরং চুলের আগা পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ডিস্ট্রিবিউশন হয়, এর জন্য স্ক্যাল্পে খুব বেশি গ্রিজিনেস ফিল হয় না।
রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়: কাঠের চিরুনির দাঁতগুলো সাধারণত রাউন্ড হয়ে থাকে। আমাদের স্ক্যাল্পে বেশ কিছু আকুপ্রেশার পয়েন্ট আছে। যখনই আমরা কাঠের চিরুনি দিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করি তখন এই পয়েন্টগুলোতে প্রেশার পড়ে এবং স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়।
মোলায়েম চুল: আমাদের ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেল তৈরি হয় সেটা ঠিকঠাক ছড়িয়ে দিতে পারে কাঠের চিরুনি। ফলে চুল থাকে মোলায়েম ও মসৃণ। অন্যদিকে প্লাস্টিকের সাধারণ চিরুনিতে চুলের সব তেল মাথার উপরের অংশে জমা হয় যার ফলে প্রায় প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে হয়।
চুলের বৃদ্ধি: কাঠের চিরুনি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে হেয়ার ফলিকলগুলো স্টিমুলেট হয়। যখন স্ক্যাল্প পর্যাপ্ত ব্লাড সাপ্লাই পায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের নিউট্রিয়েন্টের উপকারিতা পাওয়া যায়। আর পুষ্টি পেলে চুল তো দ্রুত বেড়ে উঠবেই।
চুল পড়া কমায়: জট পড়া চুলে চিরুনি চালালে চুল ছিঁড়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। বিশেষ করে প্লাস্টিক বা ধাতুর চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে যে স্থিরতড়িৎ উৎপন্ন হয়, তাতে চুল ছিঁড়ে ঝরে পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু, কাঠের চিরুনি ব্যবহার করলে এমন সমস্যা হয় না।
খুশকি কমায়: যখন আমরা প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনি ব্যবহার করি, তখন স্ক্যাল্পে তুলনামূলক বেশি ফ্রিকশন হয়। এতে স্ক্যাল্পে ইরিটেশন হতে পারে। আর এই ইরিটেশন থেকে শুরু হতে পারে খুশকি। কিন্তু যখন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা হয় তখন ইরিটেশন অনেকটাই কমে আসে।
প্রাকৃতিক তেলের সুষম বণ্টন: আমাদের মাথার ত্বক থেকে প্রাকৃতিকভাবেই একধরনের তেল (সিরাম) নিঃসৃত হয়। কাঠের চিরুনি সিরামকে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এতে চুল উজ্জ্বল দেখায় এবং অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব কমে যায়।
কাঠের চিরুনি প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হওয়ায় এটি পরিবেশের জন্যও ভালো।
ভোরের আকাশ/এসআই
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ ঘন্টা আগে
আপডেট : ১৮ ঘন্টা আগে
চুলের যত্নে কাঠের চিরুনি
সাজগোজের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ চিরুনি। চুলের সৌন্দর্য বিন্যাসে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিনের ব্যবহৃত এ পণ্যটি হওয়া চাই চুলবান্ধব। অন্যথায় তা হতে পারে শখের চুলের ক্ষতির কারণ। বর্তমানে অনেকে প্লাস্টিকের সাধারণ চিরুনি ব্যবহার করেন। তবে শত শত বছর আগে থেকেই কাঠের চিরুনির ব্যবহার হচ্ছে। আর কাঠের চিরুনি ব্যবহারের বিভিন্ন উপকারীতাও রয়েছে। কাঠের চিরুনির ইতিহাস অনেক পুরনো। মিসর, চীন, জাপান, ভারতীয় উপমহাদেশেসহ বেশ কিছু প্রাচীন সভ্যতায় কাঠের চিরুনি ব্যবহার ছিল। আসলেই কি কাঠের চিরুনি চুলের জন্য উপকারী সে বিষয় অনেকেই জানেন না। অস্ট্রেলিয়া হেয়ার অ্যান্ড স্ক্যাল্প ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে কাঠের চিরুনির বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।
চলুন, জেনে নিই চুলের যত্নে কাঠের চিরুনির উপকারিতা-
আয়নের সমতা করে: আমাদের চুল মূলত কার্বনের যৌগ, এটি আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের মতো কার্বন দিয়ে গঠিত। প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনিতে সাধারণত ধনাত্মক আয়ন থাকে, যখন চুল আচড়ানোর সময় স্ক্যাল্পে ফ্রিকশন হয় তখন এই ধনাত্নক আয়নগুলো আমাদের চুলকে ফ্রিজি ও ড্রাই করে দেয়। কিন্তু কাঠের চিরুনিতে এই ঝামেলা নেই, কারণ কাঠ নিজেই তো ফাইবার যেটা কিনা কার্বন দিয়ে তৈরি। তাই কাঠের চিরুনি দিয়ে আচড়ানোর সময় চুলে আয়ন কাউন্ট নিউট্রাল থাকে এবং ফ্রিজিনেস কন্ট্রোল হয়।
গ্রিজিনেস কমায়: কাঠের চিরুনির গঠনের জন্য এটি পুরো স্ক্যাল্পে সমানভাবে প্রেশার ডিস্ট্রিবিউট করে দেয়, ফলে সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোলে থাকে। সেবাম হলো আমাদের ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তেল, যেটাকে আমরা ন্যাচারাল অয়েল বলি। সমান প্রেশার ও জেন্টল ম্যাসাজের কারণে এই সেবাম শুধুমাত্র স্ক্যাল্প নয় বরং চুলের আগা পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ডিস্ট্রিবিউশন হয়, এর জন্য স্ক্যাল্পে খুব বেশি গ্রিজিনেস ফিল হয় না।
রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়: কাঠের চিরুনির দাঁতগুলো সাধারণত রাউন্ড হয়ে থাকে। আমাদের স্ক্যাল্পে বেশ কিছু আকুপ্রেশার পয়েন্ট আছে। যখনই আমরা কাঠের চিরুনি দিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করি তখন এই পয়েন্টগুলোতে প্রেশার পড়ে এবং স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়।
মোলায়েম চুল: আমাদের ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেল তৈরি হয় সেটা ঠিকঠাক ছড়িয়ে দিতে পারে কাঠের চিরুনি। ফলে চুল থাকে মোলায়েম ও মসৃণ। অন্যদিকে প্লাস্টিকের সাধারণ চিরুনিতে চুলের সব তেল মাথার উপরের অংশে জমা হয় যার ফলে প্রায় প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে হয়।
চুলের বৃদ্ধি: কাঠের চিরুনি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে হেয়ার ফলিকলগুলো স্টিমুলেট হয়। যখন স্ক্যাল্প পর্যাপ্ত ব্লাড সাপ্লাই পায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের নিউট্রিয়েন্টের উপকারিতা পাওয়া যায়। আর পুষ্টি পেলে চুল তো দ্রুত বেড়ে উঠবেই।
চুল পড়া কমায়: জট পড়া চুলে চিরুনি চালালে চুল ছিঁড়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। বিশেষ করে প্লাস্টিক বা ধাতুর চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে যে স্থিরতড়িৎ উৎপন্ন হয়, তাতে চুল ছিঁড়ে ঝরে পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু, কাঠের চিরুনি ব্যবহার করলে এমন সমস্যা হয় না।
খুশকি কমায়: যখন আমরা প্লাস্টিক বা মেটালের চিরুনি ব্যবহার করি, তখন স্ক্যাল্পে তুলনামূলক বেশি ফ্রিকশন হয়। এতে স্ক্যাল্পে ইরিটেশন হতে পারে। আর এই ইরিটেশন থেকে শুরু হতে পারে খুশকি। কিন্তু যখন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা হয় তখন ইরিটেশন অনেকটাই কমে আসে।
প্রাকৃতিক তেলের সুষম বণ্টন: আমাদের মাথার ত্বক থেকে প্রাকৃতিকভাবেই একধরনের তেল (সিরাম) নিঃসৃত হয়। কাঠের চিরুনি সিরামকে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এতে চুল উজ্জ্বল দেখায় এবং অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব কমে যায়।
কাঠের চিরুনি প্লাস্টিকের তুলনায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হওয়ায় এটি পরিবেশের জন্যও ভালো।
ভোরের আকাশ/এসআই