লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৩৮ এএম
আতঙ্কের নাম মিষ্টি খাবার!
স্বাস্থ্যকর খাবার প্রসঙ্গে প্রথমে যে কথাটি আসে, তা হলো, চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টিজাতীয় খাবার। বর্তমান সময়ে চিনি যেন আমাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। একে হোয়াইট পয়জন বলা হয়। মিষ্টির নেশা কাটিয়ে ওঠা অনেকের জন্য কঠিন। চিনিযুক্ত যেকোনো খাবার খাওয়ার পর আরও খাবার খাওয়ার একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। কারণ, আমিষ বা চর্বি ছাড়া শুধু কার্বোহাইড্রেট খেলে দ্রুত আবার খিদে পায়। তবে মিষ্টির প্রতি এই ঝোঁক এখন অনেকেই কমাতে চান।
রিডার্স ডাইজেস্টের এক প্রতিবেদন বলছে, যে খাবার রক্তে যত দ্রুত সুগার ছাড়ে, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তত বেশি। এ ক্ষেত্রে চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সর্বোচ্চ। চিনি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে মিশে যায়। রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করে এবং বাকি গ্লুকোজ চর্বি হিসেবে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। এর ফলে আমরা আবারও খুব দ্রুত ক্ষুধা অনুভব করি এবং আবার খাবার খাই। এভাবে বারবার খাওয়ার মাধ্যমে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি। ফল হিসেবে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়, রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড, ফ্যাটি লিভারসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়ে। এ কারণে চিনির স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্য খাবারের চেয়ে বেশি।
গত কয়েক দশকে বিজ্ঞানী আর ডাক্তারদের ক্রমাগত সতর্কবার্তার ফলে এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নানান শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের এসব মিষ্টি খাবারের প্রতি খুব বেশি আকর্ষণ রয়েছে তাদের বদভ্যাস ত্যাগের উপায় বলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
১ .বেশি বেশি পানি খেলে মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। এমনিতেই পর্যাপ্ত পানি খাওয়া অতি জরুরি। এ ছাড়া মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হলেই আপনি পানি খাবেন বেশি করে। এতে আর মিষ্টি খেতে মন চাইবে না।
২. ফলেও চিনি থাকে। তবে প্রক্রিয়াজাত চিনির চেয়ে এই প্রাকৃতিক চিনিতে ক্ষতি কম। ক্যালরিও কম। ফলের খাদ্য-আঁশ বা ফাইবার খাবার হজমেও সহায়তা করবে।
৩. মিষ্টি খাবারের কথা মাথায় এলেই একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এটি গ্লুকোজের বিপাক বৃদ্ধি করে, মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে আনে।
৪. মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। অনেকেরই এই প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে আবার মিষ্টি খাবার খাওয়ার চাহিদা কমে যায়। পাশাপাশি আগে কিছু খেয়ে থাকলে এই সময়ের ব্যবধানে খাবারটাও একটু হজম হয়ে যায়।
৫. মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে চা বা কফি খান। এতে আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত নির্দেশনা পায় যে খাবার খাওয়া শেষ, এবার টেবিল থেকে উঠে পড়তে হবে।
৬. রাতে দাঁত ব্রাশ করা মানে আজকের দিনের খাবারের পাট চুকল। পুদিনা বা মিন্ট স্বাদের টুথপেস্ট অনেক সময়ই মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমাতে পারে। এ কারণে মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে দাঁত ব্রাশ করে ফেলুন। এতে উপকার পাবেন।
৭. যাঁরা মিষ্টি খাবার খেতে ভালোবাসেন, তাঁরা শুরুতেই একবারে ছেড়ে দিতে পারবেন না। তাই স্বাদ ও ক্যালরি দুটোই ভাগ করে নিন। যদি মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা দমন করতে না পারেন, তাহলে আরেকজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিন। মিষ্টি খাওয়াও হলো, কিন্তু ক্ষতি হবে কম।
৮. অনেক সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারের স্বাদ, চেহারা, স্থায়িত্ব বাড়াতে কৃত্রিম রং ও প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্যালরি থাকে বেশি। এসবের পরিবর্তে শুরুতে ঘরে তৈরি মিষ্টি বা ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত খাবার খান।
৯. মেডিটেশন এ কাজটি দেহ-মনের জন্যে খুবই ভালো। এমনকি চিনির প্রতি অতি আগ্রহ থেকেও বাঁচাতে পারে আপনাকে। নিউরোবিজ্ঞানীদের মতে, মেডিটেশন স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে চিনির নেশা গ্রাস করে না আপনাকে।
ভোরের আকাশ/এসআই
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ : ১ দিন আগে
আপডেট : ১ দিন আগে
আতঙ্কের নাম মিষ্টি খাবার!
স্বাস্থ্যকর খাবার প্রসঙ্গে প্রথমে যে কথাটি আসে, তা হলো, চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টিজাতীয় খাবার। বর্তমান সময়ে চিনি যেন আমাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। একে হোয়াইট পয়জন বলা হয়। মিষ্টির নেশা কাটিয়ে ওঠা অনেকের জন্য কঠিন। চিনিযুক্ত যেকোনো খাবার খাওয়ার পর আরও খাবার খাওয়ার একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। কারণ, আমিষ বা চর্বি ছাড়া শুধু কার্বোহাইড্রেট খেলে দ্রুত আবার খিদে পায়। তবে মিষ্টির প্রতি এই ঝোঁক এখন অনেকেই কমাতে চান।
রিডার্স ডাইজেস্টের এক প্রতিবেদন বলছে, যে খাবার রক্তে যত দ্রুত সুগার ছাড়ে, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তত বেশি। এ ক্ষেত্রে চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সর্বোচ্চ। চিনি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে মিশে যায়। রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করে এবং বাকি গ্লুকোজ চর্বি হিসেবে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। এর ফলে আমরা আবারও খুব দ্রুত ক্ষুধা অনুভব করি এবং আবার খাবার খাই। এভাবে বারবার খাওয়ার মাধ্যমে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি। ফল হিসেবে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়, রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড, ফ্যাটি লিভারসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়ে। এ কারণে চিনির স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্য খাবারের চেয়ে বেশি।
গত কয়েক দশকে বিজ্ঞানী আর ডাক্তারদের ক্রমাগত সতর্কবার্তার ফলে এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নানান শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের এসব মিষ্টি খাবারের প্রতি খুব বেশি আকর্ষণ রয়েছে তাদের বদভ্যাস ত্যাগের উপায় বলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
১ .বেশি বেশি পানি খেলে মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। এমনিতেই পর্যাপ্ত পানি খাওয়া অতি জরুরি। এ ছাড়া মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হলেই আপনি পানি খাবেন বেশি করে। এতে আর মিষ্টি খেতে মন চাইবে না।
২. ফলেও চিনি থাকে। তবে প্রক্রিয়াজাত চিনির চেয়ে এই প্রাকৃতিক চিনিতে ক্ষতি কম। ক্যালরিও কম। ফলের খাদ্য-আঁশ বা ফাইবার খাবার হজমেও সহায়তা করবে।
৩. মিষ্টি খাবারের কথা মাথায় এলেই একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এটি গ্লুকোজের বিপাক বৃদ্ধি করে, মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে আনে।
৪. মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। অনেকেরই এই প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে আবার মিষ্টি খাবার খাওয়ার চাহিদা কমে যায়। পাশাপাশি আগে কিছু খেয়ে থাকলে এই সময়ের ব্যবধানে খাবারটাও একটু হজম হয়ে যায়।
৫. মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে চা বা কফি খান। এতে আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত নির্দেশনা পায় যে খাবার খাওয়া শেষ, এবার টেবিল থেকে উঠে পড়তে হবে।
৬. রাতে দাঁত ব্রাশ করা মানে আজকের দিনের খাবারের পাট চুকল। পুদিনা বা মিন্ট স্বাদের টুথপেস্ট অনেক সময়ই মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমাতে পারে। এ কারণে মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করলে দাঁত ব্রাশ করে ফেলুন। এতে উপকার পাবেন।
৭. যাঁরা মিষ্টি খাবার খেতে ভালোবাসেন, তাঁরা শুরুতেই একবারে ছেড়ে দিতে পারবেন না। তাই স্বাদ ও ক্যালরি দুটোই ভাগ করে নিন। যদি মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা দমন করতে না পারেন, তাহলে আরেকজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিন। মিষ্টি খাওয়াও হলো, কিন্তু ক্ষতি হবে কম।
৮. অনেক সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারের স্বাদ, চেহারা, স্থায়িত্ব বাড়াতে কৃত্রিম রং ও প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্যালরি থাকে বেশি। এসবের পরিবর্তে শুরুতে ঘরে তৈরি মিষ্টি বা ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত খাবার খান।
৯. মেডিটেশন এ কাজটি দেহ-মনের জন্যে খুবই ভালো। এমনকি চিনির প্রতি অতি আগ্রহ থেকেও বাঁচাতে পারে আপনাকে। নিউরোবিজ্ঞানীদের মতে, মেডিটেশন স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে চিনির নেশা গ্রাস করে না আপনাকে।
ভোরের আকাশ/এসআই