ফ্লোটিলার নৌযান আটক
ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:৪৯ পিএম
সংগৃহীত ছবি
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ফিলিস্তিনিদের সহায়তার জন্য স্পেন থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌযানবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ১৩টি নৌযান ইসরায়েলি নৌবাহিনর হাতে আটকের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো।
সেই সঙ্গে কলম্বিয়ার ইসরায়েলি দূতাবাসে কর্মরত সব ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও স্থগিত করেছেন।
যে ১৩টি নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলের নৌবাহিনী, সেসব নৌযানে ক্রু এবং যাত্রী ছিলেন ২ শতাধিক। তাদের মধ্যে ম্যানুয়েল বেদোয়া এবং লুনা বারেতো নামের দুই কলম্বীয় নাগরিকও আছেন। আটকদের সবাইকে ইসরায়েলের বন্দরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে নৌবাহিনী। দুই নাগরিককে আটকের পর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন গুস্তাভো পেত্রো।
এ প্রসঙ্গে কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার জলসীমা থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা অবস্থায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযানবহরে হামলা চালিয়ে ১৩টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। এটা আন্তর্জাতিক আইন ও জেনেভা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় পেত্রো বলেন, “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযান এবং যাত্রীদের আটকের মাধ্যমে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আরও একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ করলেন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কলম্বিয়া ইসরায়েলের দূতাবাসের সব ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের আদেশ প্রদান এবং ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা—এই চার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ঐক্যমঞ্চ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে খাদ্য ও ওষুধে পূর্ণ ৪৩টি নৌযানের বহর নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা এবং তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
বুধবার ভূমধ্যসাগরের গাজা উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর। সেদিন সন্ধ্যার পর গাজা উপকূল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় নৌবহরের চারপাশ ঘিরে ধরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এবং বহরের ১৩টি নৌযান আটক করে। আটক নৌযানগুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম জানা গেছে— স্পেক্টার, অ্যালমা, সাইরাস, হুগা, মালি প্রভৃতি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ বছর ধরে গাজার সমুদ্র উপকূল অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গাজায় কোনো সমুদ্রবন্দর নেই এবং ইসরায়েলের অবরোধের কারণে আন্তর্জাতিক কোনো জাহাজ বা নৌযান গাজা উপকূলের কাছাকাছি যেতে পারে না। ফ্লোটিলার নৌবহর সেখানে পৌঁছালে তা হবে ১৮ বছর গাজার উপকূলে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক নৌবহরের নোঙ্গর করা।
ভোরের আকাশ/তা.কা