ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৪:৩৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমি শুনেছি-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বর্তমান ডিজি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলেছেন, তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না। এটি আজই আমাকে কেউ জানিয়েছেন। আমি আপনাদের সামনে কোনো বানানো কথা বলছি না। শেখ হাসিনা যেমন তার শাসনের সময় কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতেন-একে ধরো, ওর নামে মামলা দাও, আজও আমরা একই ধরনের আচরণ দেখতে পাচ্ছি। শুধু ব্যক্তি বদলেছে, কায়দা বদলায়নি। তিনি বলেন, আজকে আমরা যেখানেই যাই শুনি একটি সংগঠনের লোক তারা সেখানে বসে আছে। ডিসি কে? তারা বলছে এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। ওরা ডিসি গিরি করছে না বরং ঐখানে তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটা একদম সত্য কথা, আজকে আমাকে বলেছে। আমি আপনাদের সামনে কোন মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। এইজন্য কি আহনাফ, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? তারা নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য? শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই রাজনৈতিক চেতনার রংয়ে আমাদের প্রশাসন থাকবে? সেই পাঁতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত এত হানাহানি? শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে আমরা দেখছি অন্য চেতনা ধর্মের নামে। যে রুকন না হলে চাকুরি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন অনেকেই ভালো আছেন। তাহলে কি আবার নতুন করে নতুন আঙ্গিকে শেখ হাসিনার যে অপশাসন, দুঃশাসন এবং চুরি ,ডাকাতি, সন্ত্রাস, টাকা লুট, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য ও চাকুরি বাণিজ্যের সেটার কি আবার পুনরাবৃত্তি মানুষ দেখতে চায়? এই জন্য কি প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর, তরুণ, শ্রমিক-রিক্সাওয়ালারা জীবন দিয়েছে? এই উপলব্ধি তো সবার হওয়া উচিত।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এখনো তো নির্বাচন হয়নি, কে ক্ষমতায় যাবে, জনগণ কাকে ভোট দিবে এটা তো এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে? এগুলো কেন আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে? অনেক সরকারি দপ্তর থেকে অনেকেই আসছে তারা বলছেন আমরা কি করব ভাই আমরা যদি ওই দলের সদস্য বা রুকন না হই তাহলে আমরা তো চাকুরি করতে পারবো না। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় তারাই আবার ভর করেছে। এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।
রিজভী আরও বলেন, আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি যে গণতন্ত্রে এই দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে। এজন্যই আমাদের লড়াই। এজন্যই আমাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ। এজন্যই স্কুল, কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে। নিজেদের জীবন দিয়েছে। এখানে এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতার মধ্যে বসবে এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না। বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীরা। তাদের লোক হতে হবে। তাদের লোক ছাড়া কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এপয়েন্টমেন্ট হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেনা। কোন চাকরি হবে না। আবার সেই এক মাত্রিক একটি দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের জন্য তো দীর্ঘ ষোল বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করেনি, এজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গোটা দেশকে সংগঠিত করেননি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ