ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী রফিকুল ইসলাম মিয়া। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত ৭৬ বছর বয়সী বিএনপির এই নেতা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বারবার বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মধ্যভাগেই দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে তিনি বদ্ধপরিকর। সরকারের একাধিক উপদেষ্টাও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলছেন। সরকার ঘোষিত সময়ে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম চলছে পুরোদমে।অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মাঠে কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু সরকার কিংবা ইসি তাদের সেই কর্মসূচিকে আমলে নিচ্ছে না। ইসি বারবার বলে আসছে, বর্তমান কাঠামোয় পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সম্ভব নয়। এটি করতে হলে আইনের পরিবর্তন আনতে হবে। সেটি সংসদের মাধ্যমে আইন করে করতে হবে।এদিকে, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি দলীয় প্রতীক শাপলা পেতে মরিয়া। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাছে যতগুলো প্রতীক আছে সেগুলোর মধ্যে শাপলা নেই। শাপলা প্রতীক এনসিপিকে পেতে হলে আইনের পরিবর্তন করতে হবে এবং সেটি সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে আসতে হবে বলে ইসি জানিয়েছেন। কিন্তু এনসিপি নেতারা সেই বাস্তবতা মানতে নারাজ।তবে বাইরে পিআর কিংবা প্রতীক নিয়ে চড়া সুরে কথা বললেও রাজনৈতিক দলগুলো ভেতরে ভেতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ লক্ষ্যে নিজ নিজ দলের প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার পাশাপাশি জয়ের প্রত্যাশায় কে, কোন দলের সঙ্গে জোট করবে তাও ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলছেন বলে দলগুলোর একাধিক সূত্রে জানা গেছে।নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্ততিও করছেন নির্বাচনমুখী দলগুলো। এছাড়া জোটগত দলের মধ্য আসন সমঝোতা বিষয়টি মাথায় রেখে প্রার্থী চূড়ান্ত করছেন তারা। দলগুলোর নির্দেশনা মতে জয়ের জন্য সভা-সমাবেশ ও এলাকায় এলাকায় উঠান বৈঠক এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়াসহ নানা কৌশল নিয়ে স্ব-স্ব এলাকার ভোটের মাঠে রয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা।এছাড়া পিআর নিয়ে ভোটের মাঠের যে সংকট তৈরি হয়েছিল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেই সংকট নিরসন হচ্ছে।বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) নেই। সংবিধানেও পিআর পদ্ধতি নেই। কাজেই আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান এবং আরপিও অনুযায়ী হবে। সর্বোপরি দেশব্যাপী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনী বার্তায় দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ বিশিষ্টজনদের ভাবনা-দেশ এখন পুরোদমে নির্বাচনমুখী। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে অন্তর্বর্তী সরকার এবং ইসি। ইসি সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। পাশাপাশি নির্বাচনী সরঞ্জাম ব্যালট বাক্স, লক, ঢাকনা, গানি ব্যাগ, সিল, বিভিন্ন প্রকার ফরম, প্যাকেট পৌঁছেছে ইসি ভবনে। তফসিলের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, সীমানা নির্ধারণও চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ভোটের জন্য প্রতীকগুলোও চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ কমিশন ফেব্রুয়ারিতে ভোট অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হলে বদলাতে হবে আইন। কাজেই আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান ও আরপিও অনুযায়ী হবে।পিআর পদ্ধতির প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আন্দোলন চলছে, ফয়সালা আসুক। সম্ভব কি সম্ভব না, সেটি তারা বুঝবেন। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবে অথাৎ ভোটের দুই মাস আগে তপশিল এবং রোজার আগে নির্বাচন হবে।সিইসি জোর দিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবেÑ এ নিয়ে সন্দেহ নেই। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। আশা রাখি, এ নির্বাচনে কেউ ফাউল করতে নামবেন না।সিইসি বলেন, আমরা কারও কথায় চলছি না। আইনকানুন ও সংবিধান অনুযায়ী সরল-সোজা পথে চলছি। রাজনৈতিক দল ইসির মূল স্টেকহোল্ডার। তাদের সহযোগিতা ছাড়া সুন্দর নির্বাচন সম্ভব নয়।ভোটের মাঠে জোট : রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, স্বৈরতান্ত্রিক ও জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে সারা দেশে কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ হত্যা করার পাশাপাশি দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের ফলে ইতোমধ্যে দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কাজেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না ফ্যাসিস্ট এই আওয়ামী লীগ।একইসঙ্গে ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টিও ভোটের মাঠ থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও ভাবছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের ভাবনা, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য অনুপস্থিতিতে ভোটের মাঠে জোট গঠনের মধ্য দিয়ে ভোটে কারা বিজয়ী হবেন, এ প্রতিযোগিতায় রয়েছে দলগুলো। ভোটারদের কাছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির বিকল্প হতে চাইছে জামায়াতে ইসলামী। এমন পরিস্থিতিতে ইসলামী দলগুলো এক ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনে লড়তে চায়-এমনটাই ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশিষ্টজনরা। একদিকে, হেফাজতে ইসলাম ও দেওবন্দি ধারার কয়েকটি সংগঠনসহ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ভোটের জোটে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বিএনপির সঙ্গে। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলনসহ আরো কয়েকটি দল যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একই বৃত্তে আসার সম্ভাবনার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি নতুন দল যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বাম ধারার সব দল ও সংগঠনকে নিয়ে একটি জোট গঠনে তৎপর রয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বাম গণতান্ত্রিক জোটের ছয় দল-বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, সমাজতান্ত্রিক পার্টি ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ থাকছে বলে সূত্রে জানা গেছে।জোট গঠন বা আসন সমঝোতা নিয়েও দলগুলোর মধ্য চলছে আলোচনা। পৃথক পৃথক জোট গঠন নিয়ে বেশি তৎপর বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি। এর বাইরে বাম, ডান ও ইসলামী দলগুলো আরও পৃথক দুটি জোট গঠনে কাজ করছেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।প্রার্থী যাচাই-বাছাই : আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলটির জন্য দলীয় প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেছে বিএনপি। দলটির সূত্র জানায়, অক্টোবরের প্রথমার্ধেই প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করতে চায় দলটি।এ বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, এবার প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় দলটি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক দক্ষতা, বিগত ১৬ বছর স্বৈরাচার হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং এলাকার জনসম্পৃক্ততাসহ দলের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা, তৃণমূল নেতাদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়ারও একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির শীর্ষ নেতারা।এছাড়া উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে গোপনে জরিপ করিয়েছেন। এবার প্রার্থিতার ক্ষেত্রে জরিপ প্রতিবেদনকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নানাভাবে কাজ করছেন বলে দলটির বিম্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে। দলীয় প্রার্থী ঠিক করার পাশাপাশি সমমনা ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আসন ছাড় ও মনোনয়নের বিষয়টিও দ্রুত সুরাহা করতে চাইছেন দলটির নীতি-নির্ধারকেরা। সূত্রে আরও জানা যায়, এখন বিএনপির নীতিনির্ধারকদের লক্ষ্য দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধপূর্ণ আসন বা এলাকাগুলোর দিকে। অর্থাৎ, যেসব আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি বা প্রার্থিতা নিয়ে সাংঘাতিক বিরোধ রয়েছে, যা মিটমাট না হলে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে- এমন এলাকাগুলোর দিকে। সে জন্য দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতাকে বিভাগভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা দলের একক প্রার্থী নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীদের একসঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে ডেকে কথা বলছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশাল, কুমিল্লা, রাজশাহী অঞ্চলের বেশ কিছু আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ ও সাংগঠনিক নেতারা কথা বলেছেন।এর মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে বরিশাল ও কুমিল্লা বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিরোধপূর্ণ আসনগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকেরা তাদের সহযোগিতা করছেন।নির্বাচনপূর্ব প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, অনেক আসনের বিপরীতে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। সেসব আসনের সবাইকে ডেকে কথা বলা হচ্ছে, দল যাকেই মনোনয়ন দেবে, সবাইকে তা মেনেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তবে জোটগতভাবে শরিকদের জন্য কিছু আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। সে জন্য নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার পূর্বে এ ধরনের অনেক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থাকে, এখন সেগুলোই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।জামায়াতে ইসলামীর এক সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি এরইমধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের প্রায় সব কটিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। আসনভিত্তিক প্রাথমিক তালিকা মতে নির্বাচনী মাঠে প্রার্থীদের সক্রিয় হতে নির্দেশনাও দিয়েছে দলটির শীর্ষ ফোরাম। তবে ভোটের মাঠে জোটের শরীকদের কিছু আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও মাথায় রেখে এগুচ্ছে দলটি।মাঠ পর্যায়ের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি, জনমত এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান বিশ্লেষণ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কাছাকাছি সময়ে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। দলটির সূত্রে আরো জানা গেছে, দেশব্যাপী কর্মী সম্মেলন, সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক সফর অব্যাহত রেখেছে জামায়াত। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার পাশাপাশি সর্বসাধারণের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দিতে কাজ করছে দলটি। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলা সফর করে কর্মী সম্মেলনে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রার্থীও ঘোষণা করেছেন।অপর একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জামায়াত তিনটি পথ খোলা রেখেছে। এককভাবে, জোটগতভাবে অথবা সমঝোতার ভিত্তিতে। এই তিন পথ সামনে রেখেই দলটি তাদের নির্বাচনী কৌশল সাজাচ্ছে। জোটগতভাবে অথবা সমঝোতার অংশ হিসেবে খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোটসহ অন্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে।এর মাধ্যমে শক্তিশালী একটি ইসলামী প্ল্যাটফর্ম গঠন করে ভোটে লড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া, দাওয়াতি কার্যক্রমকে নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখছে জামায়াত। এর জন্য কোরআন শিক্ষার আসর, সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনাসভা, শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ, যুবক ও ছাত্রদের নিয়ে ওয়ার্কশপসহ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে দলটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠছে বলে দাবি করছেন দলীয় নেতারা। প্রার্থীদেরও নিজ নিজ এলাকায় মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রাখা হয়েছে। তারা জনসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।এ প্রসঙ্গে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। অতীতে সব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল। সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে।নির্বাচনী ইশতেহার : বিএনপির এক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন ইশতেহার প্রস্তুত করছে বিএনপি। পাশাপাশি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে আসার প্রস্তুতিও চলছে। দলটির একাধিক নেতা বিভিন্ন সময় সভা- সেমিনারে বলে আসছেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফিরবেন তিনি। ঠিক কবে ফিরবেন এমন দিনক্ষণ ঠিক করা না হলেও দলীয় সূত্রেগুলো বলছে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধের মধ্যে তিনি দেশে ফিরবেন।বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ইসির নির্বাচন প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেই তারেক রহমান দেশের ফেরার তারিখ নির্ধারণ করবেন।জামায়াতে ইসলামীর সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্র সংস্কারসহ কল্যাণ ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয়ে ৪১ দফায় থাকবে দলটির নির্বাচনী ইশতেহার। এ প্রসঙ্গে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কী করবে তা বর্ণনা করা হয়েছে ৪১ দফায়।এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো সংশয় নেই।তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এটি খুবই জোরালো ছিল। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের অন্তত কোনো সংশয় নেই। আমরা কনভিন্সড ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।প্রধান উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব খুশি, ইতিহাসে প্রথমবার তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারের কাজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তাদের জাতিসংঘে সঙ্গে নিয়েছেন। তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জাতির ঐক্য প্রদর্শন।জামায়াতে ইসলামী পিআর ইস্যুতে আন্দোলন চালাচ্ছে এ প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করে ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, বিএনপি নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে নয়, এমনকি উচ্চকক্ষেও এর পক্ষে আমরা কথা বলিনি। এ বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা হবে।এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা সবাই এরসঙ্গে একমত। আমরাও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু তার আগে কিছু বিষয় আছে গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলোকে সমাধান করা দরকার। যেমন- জুলাই সনদ, এটির বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।পিআর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইফ, বাট-এগুলো রাজনীতিতে নাই। আমরা আমাদের দাবি করছি। আশা করি সরকার এটি মানবে, যেহেতু এটা জনগণের দরকার। এবং আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নেব।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী রফিকুল ইসলাম মিয়া। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত ৭৬ বছর বয়সী বিএনপির এই নেতা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ‘এনআরবি কানেক্ট ডে : এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের একটি সেশনে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ সময় বাংলাদেশ বিষয়ে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো দুঃসময়ে বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করতে জানে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান তার প্রমাণ।বিএনপি মহাসচিব জানান, তার দল অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর কাজে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, আমি সবার সামনে পরিষ্কার করে বলতে চাই- বিএনপি সেই কাজই করবে, যাতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হয়।মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের তরুণ প্রজন্ম আধুনিকভাবে চিন্তা করে এবং বিএনপি তাদের আধুনিক চিন্তা-ভাবনা গ্রহণ করার মানসিকতা রাখে।’তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণ-তরুণীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।বিএনপির দীর্ঘদিনের সহযাত্রী জামায়াতের ভিন্ন অবস্থান প্রসঙ্গে নিউইয়র্কে যমুনা নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন ভোটের রাজনীতিতে জামায়াত খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না।মির্জা ফখরুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী লাইম লাইটে আসলেও জনমনে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি স্বীকার করেন, দলটি সুসংগঠিত হলেও তাদের পক্ষে ভোটে জিতে যাওয়া সম্ভব নয়।তিনি বলেন, জামায়াত যেভাবেই হোক লাইম লাইটে এসে গেছে। মিডিয়া ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের বদৌলতে একটা জায়গাতে তারা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে এবং এটা তারা করবেই। তবে জনগণের মধ্যে জামায়াতের খুব বেশি প্রভাব বেড়েছে বলে মনে করেন না মির্জা ফখরুল।তিনি আরও বলেন, আমি নিজে মাঠের রাজনীতি করি, যাতায়াত করি, বুঝতে পারি, খুব বেশি একটা নাই।জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, জামায়াতের সুবিধা হচ্ছে তারা খুবই সংগঠিত, রেডিমেন্টেড পলিটিক্যাল পার্টি। তাদের যথেষ্ট ফান্ডও আছে। এটা তাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট।তবে জনগণের কাছে গিয়ে নির্বাচনে পুরোপুরি জিতে যাওয়ার মতো সক্ষমতা জামায়াতের নেই বলে তিনি মনে করেন, ‘তবে জনগণের কাছে গিয়ে ইলেকশন পুরোপুরি জিতে যাওয়া; এমন কোনো কিছু আমার মনে হয় না।’মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও দক্ষিণপন্থি রাজনীতির উত্থানের চেষ্টা চলছে। বৈশ্বিক রাজনীতির গতিপ্রবাহ তুলে ধরে তিনি স্পষ্ট করেন যে বাংলাদেশও সেই প্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, সেই প্রচেষ্টা ভোটের মাঠে সফল হবে না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর লোগো বদলে যাচ্ছে। শিগগিরই নতুন লোগো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জামায়াত আমিরের সঙ্গে স্পেন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতের সময় নতুন লোগো দেখা যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেল, আসলে নিজেদের দলীয় লোগোতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের নতুন লোগো উন্মোচন করতে পারে দলটি।জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের লোগো পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমিরের নির্দেশনায় বেশ কয়েকটি লোগো ডিজাইন করা হয়েছে। তবে, কোন লোগোটি ব্যবহার করা হবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আজকের এই লোগো ভুলবশত ছবিতে চলে এসেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে লোগো চূড়ান্ত করা হবে।তিনি আরও জানান, লোগো নিয়ে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদে আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত হলে সেটি দলের অফিসিয়াল লোগো হিসেবে ব্যবহৃত হবে।কেন লোগো পরিবর্তন করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নে মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের আগের লোগো আমরা কখনো অফিসিয়ালি ব্যবহার করিনি। বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যবহার করতো।ভোরের আকাশ/এসএইচ