বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেষ্ট
রাজীব দাস
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৫৯ পিএম
প্রথম টেস্টে যে কারণে ভরাডুবি টাইগারদের
ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। আন্তর্জাতিক টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজ দেশের মাটিতে শুরুটা স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগারদের যে পরিণতি হলো, তা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। এক পর্যায়ে জয়ের হাতছানির পরও ম্যাচ শেষ হয়েছে হারের হতাশায়। তিন উইকেটে হেরে যাওয়া ম্যাচটি শুধু স্কোরবোর্ডে নয়, মনেও রেখে দেবে যেখানে বাংলাদেশের ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট ব্যাটে, বলে ও পরিকল্পনায়।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পেলেও বাংলাদেশ মিডল অর্ডারে এলোমেলো হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে টপ অর্ডারে শান্ত’র ব্যাটে এসেছে ৬০, জাকের আলীর ৫৮ রান, তবে অন্যরা ছিলেন কার্যত নিষ্প্রভ। বড় রানের ভিত গড়তে না পারায় শুরু থেকেই চাপে পড়ে টাইগাররা। ব্যাটারদের ধৈর্য ও শট সিলেকশনে ঘাটতির কারণে দ্বিতীয় ইনিংসেও একরকম আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ।
১৯৪ রানে ৪ উইকেট থাকা অবস্থায়, তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে দলের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছিল, তা ভেঙে পড়ে পরদিন সকালে। শান্ত বাজে শট খেলে আউট হলে জাকের আলীর সঙ্গে আর কেউ জুটি গড়তে পারেননি। শেষ দিকে তাইজুল ও মিরাজও ছিলেন অসহায়। ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন কেবল একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট শিকার করে টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। এই অর্জন যেকোনো সময়েই প্রশংসার দাবিদার। তবে দল যখন হারে, তখন ব্যক্তিগত অর্জনও ফিকে হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কেউ মিরাজকে নিয়েও কোনো প্রশ্ন তোলেনি। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল হারের কারণ, এবং অধিনায়ক শান্তর আত্মজিজ্ঞাসা। নিজেকে ব্যর্থতার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করে শান্ত বলেন, আমি আউট না হলে, ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত। আমি পুরো দায়ভার নিচ্ছি। পেস সহায়ক উইকেট তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা মাঠে কার্যকর হয়নি। হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও খালেদ আহমেদ তেমন কিছুই করতে পারেননি। পেস বোলিং ইউনিট পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডার-হৃদরোগের মতো ধস। ফিল্ডিংয়ে ছিল ঢিলেঢালা ভাব।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, জিম্বাবুয়েকে দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্যকেও যথেষ্ট মনে হচ্ছিল। মিরাজ ও তাইজুল শেষদিকে লড়াই জমিয়ে তুললেও স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না। জিম্বাবুয়ের মতো একটি দল যাদের সাম্প্রতিক সময়ে তেমন সাফল্য নেই, যাদের অনেক খেলোয়াড়ই ঘরোয়া ক্রিকেটের বাইরে আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি তাদের কাছে এমনভাবে হার সত্যিই দৃষ্টিকটু।
আর তাই প্রশ্ন উঠছে, দল নির্বাচনে কি ভুল ছিল? পেসারদের অতিরিক্ত প্রাধান্য দিয়ে কি নিজেদের সুবিধা হারিয়েছে বাংলাদেশ? কোচের পরিকল্পনায় কি ঘাটতি ছিল? সংবাদ সম্মেলনে এসব নিয়েই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন শান্ত। সবমিলিয়ে, ঘরের মাঠে সিরিজ শুরুর প্রথম ম্যাচেই এমন ভরাডুবি দলকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। পরবর্তী টেস্ট হবে চট্টগ্রামে, যেখানে উইকেট থাকবে ভিন্ন।
শান্ত জানিয়েছেন, কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে ‘ট্রু উইকেট’ তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের একটাই লক্ষ্য দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো, হার দিয়ে শুরু হলেও সিরিজ হাতছাড়া না হওয়া। তবে শুধু উইকেট নয়, পরিবর্তন দরকার মানসিকতায়, ব্যাটিংয়ের ধৈর্যে, নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে। না হলে সিলেটের মতো ভরাডুবির ছায়া টেনে নিয়ে যাবে আরও অনেক ম্যাচে। এখন দেখার, টাইগাররা কীভাবে এই ধাক্কা সামাল দেয়। দায় নিজের উপর নিলেন
টাইগার অধিনায়ক: জায়ান্ট স্ক্রিনের এক পাশে যখন টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেট পূর্ণ করা মেহেদী হাসান মিরাজের অর্জনকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে, অন্য পাশে তখন সাদা অক্ষরে লেখা তিন উইকেটে জয় জিম্বাবুয়ের। এই দুটি ছবি যেন একসঙ্গে দুই ভিন্ন গল্প বলছিল একজনের ব্যক্তিগত সাফল্যের আনন্দ আর গোটা দলের ব্যর্থতার দুঃখ। এমন পরাজয়ের দিনে ব্যক্তিগত অর্জনও হয়ে যায় নির্বিকার, নির্জীব। সে কারণেই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখে মিরাজের কীর্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। আলোচনা হয়েছে কেবল হারের কারণ নিয়ে, দলের ব্যর্থতা নিয়ে, নেতৃত্ব নিয়ে।
টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বুঝে গিয়েছিলেন, প্রশ্নের তীর সোজা এসে বিঁধবে তার দিকেই। তাই তিনি নিজেই সমস্ত দায় নিজের কাঁধে তুলে নিতে চাইলেন। শান্তর কণ্ঠে ছিল অনুশোচনার ছাপ, আমি আউট না হলে বড় রান হতে পারত। পুরো ম্যাচটা আমি একাই হারিয়ে দিয়েছি। এমন কথা সচরাচর শোনা যায় না বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মুখে। কিন্তু শান্ত বলছিলেন নির্দ্বিধায়।
কারণ তিনিই জানেন, নিজের ব্যাটে ভর করে দলকে আরও পথ এগিয়ে নিতে পারতেন। চার উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে, পাশে জাকের আলী ২১। সবাই আশা করছিল এই জুটি ম্যাচটিকে আরও বড় লিডে নিয়ে যাবে। কিন্তু চতুর্থ দিনের শুরুতেই শান্ত বাজে শট খেলে ফিরলে, সেই আশার মুকুল ঝরে পড়ে। এই টেস্টের আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হবে উদ্দেশ্য, পেসারদের কার্যকর করা।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে এই সিরিজে ভালো করার প্রত্যাশা ছিল। তবে প্রথম ম্যাচেই এমন হারে সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে দল। সিলেটের উইকেটকে দোষ না দিয়ে শান্ত বরং চাইছেন চট্টগ্রামের ট্রু উইকেটে পরবর্তী টেস্ট খেলা হোক। কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে টিম ম্যানেজমেন্ট ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে এমন উইকেট প্রস্তুতের জন্য। কারণ, শান্তর বিশ্বাস, এখানে ব্যাটাররা ধৈর্য ধরলে বড় স্কোর সম্ভব ছিল। কিন্তু সেটা কেউই করতে পারেনি। এই ম্যাচ তাই শুধু পরাজয়ের নয়, আত্মসমালোচনারও। মিরাজের ইতিহাস গড়ার দিনেও আলো চুরি করে নিয়েছে দলের ব্যর্থতা, এবং একজন অধিনায়কের নিঃসঙ্কোচ আত্মদায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেষ্ট
রাজীব দাস
প্রকাশ : ৪ ঘন্টা আগে
আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
প্রথম টেস্টে যে কারণে ভরাডুবি টাইগারদের
ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। আন্তর্জাতিক টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজ দেশের মাটিতে শুরুটা স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগারদের যে পরিণতি হলো, তা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। এক পর্যায়ে জয়ের হাতছানির পরও ম্যাচ শেষ হয়েছে হারের হতাশায়। তিন উইকেটে হেরে যাওয়া ম্যাচটি শুধু স্কোরবোর্ডে নয়, মনেও রেখে দেবে যেখানে বাংলাদেশের ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট ব্যাটে, বলে ও পরিকল্পনায়।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পেলেও বাংলাদেশ মিডল অর্ডারে এলোমেলো হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে টপ অর্ডারে শান্ত’র ব্যাটে এসেছে ৬০, জাকের আলীর ৫৮ রান, তবে অন্যরা ছিলেন কার্যত নিষ্প্রভ। বড় রানের ভিত গড়তে না পারায় শুরু থেকেই চাপে পড়ে টাইগাররা। ব্যাটারদের ধৈর্য ও শট সিলেকশনে ঘাটতির কারণে দ্বিতীয় ইনিংসেও একরকম আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ।
১৯৪ রানে ৪ উইকেট থাকা অবস্থায়, তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে দলের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছিল, তা ভেঙে পড়ে পরদিন সকালে। শান্ত বাজে শট খেলে আউট হলে জাকের আলীর সঙ্গে আর কেউ জুটি গড়তে পারেননি। শেষ দিকে তাইজুল ও মিরাজও ছিলেন অসহায়। ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন কেবল একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট শিকার করে টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। এই অর্জন যেকোনো সময়েই প্রশংসার দাবিদার। তবে দল যখন হারে, তখন ব্যক্তিগত অর্জনও ফিকে হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কেউ মিরাজকে নিয়েও কোনো প্রশ্ন তোলেনি। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল হারের কারণ, এবং অধিনায়ক শান্তর আত্মজিজ্ঞাসা। নিজেকে ব্যর্থতার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করে শান্ত বলেন, আমি আউট না হলে, ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত। আমি পুরো দায়ভার নিচ্ছি। পেস সহায়ক উইকেট তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা মাঠে কার্যকর হয়নি। হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও খালেদ আহমেদ তেমন কিছুই করতে পারেননি। পেস বোলিং ইউনিট পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডার-হৃদরোগের মতো ধস। ফিল্ডিংয়ে ছিল ঢিলেঢালা ভাব।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, জিম্বাবুয়েকে দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্যকেও যথেষ্ট মনে হচ্ছিল। মিরাজ ও তাইজুল শেষদিকে লড়াই জমিয়ে তুললেও স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না। জিম্বাবুয়ের মতো একটি দল যাদের সাম্প্রতিক সময়ে তেমন সাফল্য নেই, যাদের অনেক খেলোয়াড়ই ঘরোয়া ক্রিকেটের বাইরে আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি তাদের কাছে এমনভাবে হার সত্যিই দৃষ্টিকটু।
আর তাই প্রশ্ন উঠছে, দল নির্বাচনে কি ভুল ছিল? পেসারদের অতিরিক্ত প্রাধান্য দিয়ে কি নিজেদের সুবিধা হারিয়েছে বাংলাদেশ? কোচের পরিকল্পনায় কি ঘাটতি ছিল? সংবাদ সম্মেলনে এসব নিয়েই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন শান্ত। সবমিলিয়ে, ঘরের মাঠে সিরিজ শুরুর প্রথম ম্যাচেই এমন ভরাডুবি দলকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। পরবর্তী টেস্ট হবে চট্টগ্রামে, যেখানে উইকেট থাকবে ভিন্ন।
শান্ত জানিয়েছেন, কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে ‘ট্রু উইকেট’ তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের একটাই লক্ষ্য দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো, হার দিয়ে শুরু হলেও সিরিজ হাতছাড়া না হওয়া। তবে শুধু উইকেট নয়, পরিবর্তন দরকার মানসিকতায়, ব্যাটিংয়ের ধৈর্যে, নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে। না হলে সিলেটের মতো ভরাডুবির ছায়া টেনে নিয়ে যাবে আরও অনেক ম্যাচে। এখন দেখার, টাইগাররা কীভাবে এই ধাক্কা সামাল দেয়। দায় নিজের উপর নিলেন
টাইগার অধিনায়ক: জায়ান্ট স্ক্রিনের এক পাশে যখন টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেট পূর্ণ করা মেহেদী হাসান মিরাজের অর্জনকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে, অন্য পাশে তখন সাদা অক্ষরে লেখা তিন উইকেটে জয় জিম্বাবুয়ের। এই দুটি ছবি যেন একসঙ্গে দুই ভিন্ন গল্প বলছিল একজনের ব্যক্তিগত সাফল্যের আনন্দ আর গোটা দলের ব্যর্থতার দুঃখ। এমন পরাজয়ের দিনে ব্যক্তিগত অর্জনও হয়ে যায় নির্বিকার, নির্জীব। সে কারণেই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখে মিরাজের কীর্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। আলোচনা হয়েছে কেবল হারের কারণ নিয়ে, দলের ব্যর্থতা নিয়ে, নেতৃত্ব নিয়ে।
টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বুঝে গিয়েছিলেন, প্রশ্নের তীর সোজা এসে বিঁধবে তার দিকেই। তাই তিনি নিজেই সমস্ত দায় নিজের কাঁধে তুলে নিতে চাইলেন। শান্তর কণ্ঠে ছিল অনুশোচনার ছাপ, আমি আউট না হলে বড় রান হতে পারত। পুরো ম্যাচটা আমি একাই হারিয়ে দিয়েছি। এমন কথা সচরাচর শোনা যায় না বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মুখে। কিন্তু শান্ত বলছিলেন নির্দ্বিধায়।
কারণ তিনিই জানেন, নিজের ব্যাটে ভর করে দলকে আরও পথ এগিয়ে নিতে পারতেন। চার উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে, পাশে জাকের আলী ২১। সবাই আশা করছিল এই জুটি ম্যাচটিকে আরও বড় লিডে নিয়ে যাবে। কিন্তু চতুর্থ দিনের শুরুতেই শান্ত বাজে শট খেলে ফিরলে, সেই আশার মুকুল ঝরে পড়ে। এই টেস্টের আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হবে উদ্দেশ্য, পেসারদের কার্যকর করা।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে এই সিরিজে ভালো করার প্রত্যাশা ছিল। তবে প্রথম ম্যাচেই এমন হারে সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে দল। সিলেটের উইকেটকে দোষ না দিয়ে শান্ত বরং চাইছেন চট্টগ্রামের ট্রু উইকেটে পরবর্তী টেস্ট খেলা হোক। কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে টিম ম্যানেজমেন্ট ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে এমন উইকেট প্রস্তুতের জন্য। কারণ, শান্তর বিশ্বাস, এখানে ব্যাটাররা ধৈর্য ধরলে বড় স্কোর সম্ভব ছিল। কিন্তু সেটা কেউই করতে পারেনি। এই ম্যাচ তাই শুধু পরাজয়ের নয়, আত্মসমালোচনারও। মিরাজের ইতিহাস গড়ার দিনেও আলো চুরি করে নিয়েছে দলের ব্যর্থতা, এবং একজন অধিনায়কের নিঃসঙ্কোচ আত্মদায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ