গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৪০ এএম
গাইবান্ধায় অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত ১১; সতর্কবার্তা পোস্ট
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অসুস্থ গরু জবাইয়ের পর অন্তত ১১ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জনকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক।
এর আগে গেল শনিবার উপজেলার বেলকার কিশামত সদর গ্রামে মাহাবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, গরুটি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেটি জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। এ কাজে অংশ নেওয়া ১১ জনের শরীরে কয়েকদিন পর ফোসকা, ঘা ও পচনের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। আক্রান্তদের হাত, মুখ, চোখ ও নাকে ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পরে চিকিৎসকের মাধ্যমে তারা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
আক্রান্তদের মধ্যে মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহাবুর রহমানসহ পাঁচজন বর্তমানে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, অ্যানথ্রাক্সে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। অসুস্থ গবাদিপশু জবাই বা মাংস ব্যবহারের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। তিনি বলেন, “নিয়মিত চিকিৎসা নিলে কয়েকদিনেই রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠেন।পাশাপাশি সবাইকে অসুস্থ পশু জবাই থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফিজার রহমান জানান, গরুটি অসুস্থ থাকার পরও কয়েকজন গ্রামবাসী সেটি জবাই করেন। যারা সরাসরি কাটাকাটির কাজে যুক্ত ছিলেন তারাই বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতেই সিভিল ‘সার্জন কার্যালয়-গাইবান্ধা’ নামে অফিসিয়াল ফেসবুক আইডিতে এই সতর্কবার্তা পোস্ট দেওয়া হয়।
ওই বার্তায় বলা হয়- আক্রান্ত বা মৃত গবাদি পশুর (গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি) মাংস, রক্ত, চামড়া বা লোমের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স রোগ ছাড়ায়। এছাড়া পশুর মাংস কাঁচা বা সঠিকভাবে রান্না না করে খেলে অ্যানথ্রাক্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চামড়া বা পশুর শরীর কাটাছেঁড়া করার সময় ক্ষতস্থান দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করলে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রধান লক্ষণ: ত্বকে কালো দাগ বা ঘা (Cutaneous anthrax), জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট (Inhalation anthrax), তীব্র পেটব্যথা, বমি ও রক্তাক্ত ডায়রিয়া (Gastro-intestinal anthrax)।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান বলেন, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য রোগ। সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপই পারে আমাদের সকলকে সুরক্ষিত রাখতে।
ভোরের আকাশ//হর