ছবি : ভোরের আকাশ
ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী বণিকবাড়ি মানেই নতুন কিছু। এবার ভিন্ন ভাবে ৮ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার ৫২০ কেজি ওজনের অষ্টধাতুর দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।অষ্টধাতু দিয়ে তৈরি এটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বলে দাবি করেছেন এর কারিগরা।
তাইতো এইবার পূজায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে দেবী দুর্গা প্রতিমা।অষ্টধাতুর ওই দুর্গাকে দেখতে দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে লোকজন। বণিক বাড়ির শত বছরের পুজোর ঐতিহ্যে এ বার যেন নতুন চমক।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের বণিক পরিবার শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তাদের পারিবারিক ব্যবসা মূলত তামা, কাঁসা ও পিতল শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। সেই ধারাবাহিকতায় সুকান্ত বণিকের উদ্যোগে ২০১৭ সালে তৈরি হয় অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা। এতে ব্যবহার করা হয়েছে তামা, কাঁসা, সোনা, রুপা, পারদ, দস্তা ও রাংসহ মোট আট ধরনের ধাতু। প্রায় এক বছরের শ্রমে তৈরি এ প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুট। দেবী দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের মূর্তিও রয়েছে এতে।
প্রতিমার বিশেষত্ব আর বণিকবাড়ির নান্দনিক কারুকাজ দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে। পূজোর পাঁচ দিন সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য বণিকবাড়ি ও পূজামণ্ডপ উন্মুক্ত রাখা হয়, তাই ভিড় জমছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন।
আশুলিয়ার মাধবী চক্রবর্তী পরিবার নিয়ে এসেছিলেন এখানে। তিনি বলেন, “আমি প্রতি বছরই দুর্গাপূজায় ধামরাইয়ের বণিকবাড়িতে আসি। এখানে মূলত পূজার পাঁচ দিন সবাই প্রবেশ করতে পারে। বাড়িটিতে রয়েছে নান্দনিক কারুকাজ, নটরাজসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর কাঁসা ও পিতলের প্রতিমা। তাই এখানে এসে অনেক ভালো লাগে।”
গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা দর্শনার্থী সুমন বলেন, “ধামরাইয়ের বণিকবাড়ির প্রতিমাটি ব্যতিক্রম। এখানে দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমা অষ্টধাতুর তৈরি এবং সেগুলোতেই পূজা করা হয়। অন্য মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হলেও এখানে প্রতিমা বিসর্জন হয় না; সারাবছরই দেবী দুর্গা মণ্ডপে স্থায়ীভাবে রাখা থাকে।”
ধামরাই বণিকবাড়ির প্রধান ও ধামরাই মেটাল ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী সুকান্ত বণিক জানান, “আমাদের বণিক পরিবারের দুর্গাপূজা চলছে একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আগে পূজা হতো বাড়ির পাশের রাস্তায় প্যান্ডেল করে। এখন বাড়ির ভেতরে নিয়ে এসেছি এবং অষ্টধাতুর প্রতিমা দিয়ে পূজা করছি।
আমাদের পরিবার ২০০ বছর ধরে তামা-কাঁসার শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমরা হাতি, ঘোড়া ও বিগ্রহ তৈরি করি। আগে মাটির প্রতিমা দিয়ে পূজা হলেও লোকবল কমে যাওয়ায় তা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই অষ্টধাতুর প্রতিমা তৈরি করে পূজা শুরু করি।”
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে নোয়াখালীর উপকূলীয় সাগর এলাকা। দমকা হাওয়া ও উঁচু ঢেউয়ের কারণে ঝুঁকি এড়াতে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে জেলেরা।সরকারি ঘোষণায় ৩ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণে পদ্মা-মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে অনেক জেলে শেষ মুহূর্তে সাগরে নামলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে তারা আগেভাগেই ফিরে আসছেন।স্থানীয় জেলেরা জানান, সংসারের চাপ সামলাতে বাধ্য হয়ে ঋণ নিয়ে সাগরে নামতে হয়। কিন্তু ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউয়ের কারণে এখন মাছ ধরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত জীবন বাঁচানোই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।স্থানীয় জেলে আলমগীর হোসেন জানান, “সংসার চালাতে ঋণ করে সাগরে যাই। কিন্তু বাতাস এত তীব্র যে মাছ ধরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শেষে জীবন বাঁচাতে ঘাটেই ফিরতে হলো। এখন সবাই ঋণের চাপে কাতর।”একইভাবে ট্রলার মালিক মো. হাবিব বলেন, “নিষেধাজ্ঞার আগে কিছুটা মাছ ধরার আশায় সাগরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া এত খারাপ হয়ে গেল যে কিছুই ধরা সম্ভব হয়নি। সরকারের ঘোষিত তারিখে নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও জেলেদের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”এদিকে ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “নিষেধাজ্ঞার আগে সাধারণত জেলেরা সাগরে ঝুঁকি নেন। কিন্তু এবার আবহাওয়ার কারণে আগেভাগেই ফিরতে হচ্ছে। এতে বাজারে মাছের সংকট তৈরি হতে পারে।”জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, “বর্তমানে সাগরে অনুকূল পরিস্থিতি নেই। যেকোনো সময় প্রবল দমকা হাওয়া ও উঁচু ঢেউ তৈরি হতে পারে। ছোট নৌকা ও ট্রলার বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই আমরা সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছি।”অন্যদিকে হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণে ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে নিয়মিত প্রচারণা চলছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে টহল জোরদার করা হবে। আইন অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”ভোরের আকাশ//হ.র
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তুরাগ নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা ডুবে গেছে। এ ঘটনায় দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।নিখোঁজ শিশুদের নাম তন্ময় ও অঙ্কিতা। তারা কালিয়াকৈর উপজেলার দক্ষিণ হিজলতলী গ্রামের বাসিন্দা।প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের সময় একটি শ্যালো নৌকার সঙ্গে ধাক্কা লাগে ইঞ্জিনচালিত নৌকার। এতে নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকায় তখন প্রায় ১৮–২০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের অধিকাংশই সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে।খবর পেয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওছার আহাম্মেদ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী জানান, “নৌকাডুবির ঘটনায় দুটি শিশু নিখোঁজ রয়েছে। আমাদের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবে।”ভোরের আকাশ//হ.র
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ ও কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ হয়ে গাইবান্ধায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক দলের নেতা আব্দুল বারী মন্ডল দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন জামায়াত কার্যালয়ে সদস্য ফরম পূরণের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগ দেন।এ উপলক্ষ্যে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতের মনোহরপুর ইউনিয়ন শাখা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মনোহরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মো. আসাদ আলী।বক্তাব্য রাখেন গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) জামায়াতের একক প্রার্থী অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম (লেবু মাওলানা), বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন জেলা সেক্রেটারী আব্দুল হাসান প্রমুখ।মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, আব্দুল বারী মন্ডল প্রায় ১৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি পলাশবাড়ী উপজেলার শ্রমিক দলের যুগ্ম আহবায়ক পদে আছেন এবং বর্তমান মনোহরপুর ইউপি সদস্য। এর আগে তিনি দপ্তর সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।জামায়াতের পক্ষ থেকে যোগদানকৃতদের ফুলের মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন এবং নেতাকর্মীদের কয়েকটি বই তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়।যোগদান বিষয়ে আব্দুল বারী মন্ডল বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমি জামায়াতকে ভালোবাসি। আমি দীর্ঘদিন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ ও কাজকর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলটিতে যোগ দিয়েছি।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার আমির আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমাদের দলের আদর্শ ও কাজকর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে মো আবদুল বারী মন্ডল ও তার অনুসারী বিএনপির অঙ্গ সংগঠন থেকে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন।পলাশবাড়ী উপজেলা শ্রমিক দলের আহবায়ক মো. হযরত আলী বলেন, আব্দুল বারী মন্ডলের দল পরিবর্তনের খবর মানুষের মুখে শুনেছি। রাজনীতি ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়। কেউ চাইলে দল পরিবর্তন করতেই পারেন। কিন্তু আব্দুল বারী মন্ডল লিখিত ভাবে বিষয়টি আমাদের জানায়নি।ভোরের আকাশ/জাআ
গাজীপুরের শ্রীপুরে হিন্দু মুসলিম ঐক্যে ডাক দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে রাজাবাড়ী বাজার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিনে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।ভাওয়াল রাজাবাড়ী হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বাবু অরুণচন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং রাজাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রাকিব মোড়ল ও লিটন ঘোষের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মোতালেব, যুগ্ম আহ্বায়ক মোসলেউদ্দিন মৃধা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস. এম. মাহফুল হাসান হান্নান, রাজাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল হুদা শাহিন, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল বারীক, বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মহিদুল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক আবুল হোসেন প্রমুখ। এসময় পূজা মন্ডপ আয়োজিত কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের ডাক দেন ডা. বাচ্চু।অনুষ্ঠান শেষে পারুলী নদীতে একসাথে ২২টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।ভোরের আকাশ/জাআ