সংগৃহীত ছবি
তরুণ প্রজেন্মর (জেন জি) সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। গতকাল বুধবার দেশটির উপকূলীয় শহর আগাদিরের লাকলিয়া এলাকায় আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন দুই বিক্ষোভকারী।
এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার লাকলিয়ার একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায় একদল বিক্ষোভকারী। উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র লুটপাট। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত এবং কয়েক জন আহত হন।
বিক্ষোভকারীদের অনেকেরই হাতে ছুরি ছিল। তবে পুলিশ সমানে গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়তে থাকা তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি তারা। তবে তারা থানা এবং পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছেন।
ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের অবসান, দুর্নীতি দমন এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার মান বৃদ্ধির দাবিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে রাবাতে বিক্ষোভ শুরু করেছে তরুণ প্রজন্ম। জেনজি ২১২ নামের একটি অখ্যাত এবং কম পরিচিত সংগঠন এই বিক্ষোভের প্রধান সংঘঠক। তরুণ-তরুণীদের বিক্ষোভে নামার আহ্বান জানিয়ে গত কয়েক দিন ধরে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং গেমিং অ্যাপগুলোতে প্রচারণা চলাচ্ছে জেনজি ২১২।
এদিকে গতকাল থানায় হামলার পাশাপাশি আগাদিরের বিয়ৌগ্রা এলাকায় একটি ব্যাংক এবং কয়েকটি দোকান লুটপাট করেছে জেন জি বিক্ষোভকারীরা। আবদেস্লাম চেগ্রি নামের এক প্রত্যাক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, “আমি একটি ক্যাফেতে বসে পিএসজি বনাম রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচ দেখছিলাম। হঠাৎ দেখলাম বেশ কয়েকজন তরুণ পাশের একটি দোকানে পাথর ছুড়ছে। তারপর তাদেরকে দোকনের দরজা ভেঙে প্রবেশ করতে দেখেছি আমি।”
মরক্কোর পর্যটন শহর মারাকেশেও একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ভবন ও দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে জেন জি বিক্ষোভকারীরা।বিক্ষোভকারীরা মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখান্নৌচের পদত্যাগ দাবি করেছেন জেন জি বিক্ষোভকারীরা।
মরক্কোয় বেকারত্বের হার ১২ দশমিট ৮ শতাংশ এবং এটি ক্রমশ বাড়ছে। দেশটির তরুণদের মধ্যে ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্নাতক সম্পন্নকারীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ বর্তমানে বেকার।
শুরুর পর্যায়ে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও সময় গড়ানো সঙ্গে সঙ্গে তা সহিংস হয়ে উঠতে থাকে। তবে দেশটির অর্থনৈতিক রাজধানী ক্যাসাব্লাঙ্কা, উত্তরাঞ্চলীয় শহর ওউজদা এবং তাজায় এখনও কোনো সহিংসতা ঘটেনি।
এদিকে বিক্ষোভের গত ৪ দিনে ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটেছে জেন জি ২১২-এর। বিক্ষোভ শুরুর দিকে এই সংগঠনটির সদস্য ছিল মাত্র ৩ হাজার; বর্তমানে তা বেড়ে পৌঁছেছে ১ লাখ ৩০ হাজারে।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
চীনের গুইঝো প্রদেশে তিন বছরের নির্মাণকাজের পর হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু যানবাহনের জন্য চালু করা হয়েছে। রোববার সেতুর উদ্বোধনের খবর চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে জানা গেছে। নতুন সেতুটি একই প্রদেশের আগের সর্বোচ্চ সেতু বেইপানজিয়াং (৫৬৫ মিটার) কে ছাড়িয়ে ৬২৫ মিটার উচ্চতায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর রেকর্ড তৈরি করেছে।সেতুটি নদী ও বিশাল গিরিখাতের ওপর নির্মিত, এবং ১,৪২০ মিটার দীর্ঘ। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, নীল রঙের বিশাল সহায়ক টাওয়ার আংশিকভাবে মেঘে ঢাকা থাকা সত্ত্বেও যানবাহন সেতু পারাপার করছে।স্থানীয় প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সেতুটি নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন। গুইঝো প্রদেশের পরিবহন বিভাগের প্রধান ঝাং ইয়িন বলেন, “সেতু চালু হওয়ায় দুই পাশের মানুষের যাতায়াতের সময় দুই ঘণ্টা থেকে কমে মাত্র দুই মিনিটে নেমে এসেছে। এটি আঞ্চলিক পরিবহন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন গতি দিয়েছে।”চীন গত কয়েক দশকে অবকাঠামোতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। গুইঝো প্রদেশে হাজার হাজার সেতু রয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর অর্ধেক সেখানেই। তবে উচ্চতার দিক থেকে এখনও ফ্রান্সের মিলাও সেতু (৩৪৩ মিটার) বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু হিসেবে আছে।হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতুর উদ্বোধন চীনের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাতায়াত সহজতর করার পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনীতিকে গতি দেওয়ার দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।সূত্র: এএফপিভোরের আকাশ // হ.র
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ জম্মু কাশ্মীরে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ-সহিংসতায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন মঙ্গলবার ও বুধবার আরও তীব্র রূপ নেয়।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, তিন দিনে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। শুধু মঙ্গলবারই নিহত হয়েছেন আটজন—যার মধ্যে বাঘ জেলার ডিরকটে চারজন এবং রাজধানী মুজাফফরাবাদ ও মিরপুরে দুজন করে। এর আগের দিন রাজধানীতে আরও দুজন প্রাণ হারান। তবে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করছে, এখন পর্যন্ত একজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, বেকারত্ব, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং আজাদ কাশ্মীর পার্লামেন্টে আসনসংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে সোমবার রাজধানী মুজাফফরাবাদে হরতাল কর্মসূচি ডাকে কাশ্মীরভিত্তিক রাজনৈতিক দল জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেএজেএএসি)। এর পরদিন হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।একই দিন সরকারপন্থি রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম কনফারেন্স মুজাফফরাবাদে ‘আমান মার্চ’ নামে একটি শান্তি মিছিল বের করে। কিন্তু নিলম ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে মিছিলের সঙ্গে জেএজেএসির কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, গুলি ছোড়ার ঘটনায় মোহাম্মদ সুধির নামের এক ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়।শান্তি মিছিলে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছিল। সংঘর্ষ বাড়তে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।বিক্ষোভ ও হরতালের কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট, ব্যাংক ও বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহনও অচল হয়ে পড়েছে, ফলে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।ভোরের আকাশ // হ.র
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির লা গুয়ার্দিয়া বিমানবন্দরে ডেল্টা এয়ারলাইন্সের দুটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। বিরল এ ঘটনায় বিমানের ককপিট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।বুধবার রাতের এ ঘটনায় ডেল্টার দুটি ফ্লাইট—নম্বর ৫১৫৫ ও ৫০৪৭—সম্পৃক্ত ছিল। সিএনএনের খবরে বলা হয়, শার্লট শহর থেকে ৫৭ জন যাত্রী নিয়ে আসা ৫১৫৫ নম্বর ফ্লাইটটি অবতরণের পর রানওয়েতে অবস্থান করছিল। একই সময়ে ৫০৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি ২৮ জন যাত্রী নিয়ে ভার্জিনিয়ার রাওনোকগামী যাত্রা শুরু করার প্রস্তুতিতে ছিল।ঠিক তখনই রানওয়েতে দুই বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ৫০৪৭ নম্বর বিমানের ডানার ধাক্কায় ৫১৫৫ নম্বর বিমানের ককপিটের জানালা ভেঙে যায় এবং সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় এক ক্রু আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং আরেকজন কেবিন অ্যাটেনডেন্ট ঘাড়ে আঘাত পেয়েছেন। তবে যাত্রীদের কেউ আহত হননি।লা গুয়ার্দিয়া বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানের গতি তুলনামূলক কম থাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এমন ধরনের ঘটনা বিমানবন্দরের ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল বলেও উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ।সূত্র: সিএনএনভোরের আকাশ//হ.র
অনুপ্রবেশকারীদের কারণে হুমকির মুখে ভারত: মোদিভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের কারণে দেশটির জনসংখ্যার কাঠামোয় পরিবর্তন ঘটছে এবং এর ফলে বৈচিত্র্যের ঐক্য হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই পরিবর্তন কেবল সামাজিক সম্প্রীতি নয়, বরং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যও বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।বুধবার কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মোদির বক্তব্যে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে দেওয়া তাঁর ভাষণের প্রতিধ্বনি শোনা যায়।সেদিনও তিনি ‘অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে ভারতীয় নাগরিকদের রক্ষায় ডেমোগ্রাফিক মিশন’ চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। আরএসএসের অনুষ্ঠানে মোদি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা দেশের তরুণদের চাকরির সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে এবং নারীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদির এই বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল মূলত মুসলিম সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জনসংখ্যাগত বিতর্ক। বিশেষ করে আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তাঁর এই মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।মোদি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক স্বার্থে মমতার প্রশাসন বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের মদদ দিচ্ছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা কোনো অবস্থাতেই অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে না; বরং বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটের রাজনীতি করতে এ ধরনের ইস্যু সামনে আনছে। মমতা পাল্টা মন্তব্য করেন, সীমান্ত নিরাপত্তা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব, সেক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ হলে তার দায় কেন্দ্রেরই নিতে হবে।ভারতের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ ইস্যুটি ক্রমেই আলোচিত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বিহারেও সম্প্রতি ভোটার তালিকা নিয়ে অনুরূপ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, যা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও আধার কার্ডকে ভোটার পরিচয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেয়।আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হবে, যেখানে টানা চতুর্থবারের মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় ফেরার লড়াই করছেন। এ নির্বাচনে তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে পারে বিজেপি, যারা অনুপ্রবেশকে কেন্দ্রীয় ইস্যু বানিয়ে রাজনৈতিক মাঠ গরম করছে।সূত্র: এনডিটিভিভোরের আকাশ // হ.র