সংগৃহীত ছবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সংস্থাটির চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) তারা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় দুশোর মতো আয়কর ক্যাডার কর্মকর্তা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান কাছে ব্যাচভিত্তিক ক্ষমা চেয়েছেন। এসব ব্যাচের মধ্যে ৪০, ৩৮, ৩৩, ৩১, ৩০, ২৯, ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তা বেশি ছিল। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমা চান।
এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমি ক্ষমা করে দিয়েছি; তবে আন্দোলনের কারণে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
এর আগে গত সপ্তাহে এনবিআরের দুজন সদস্যসহ সব মিলিয়ে সংস্থাটির ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাদের অধিকাংশই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। আন্দোলন প্রত্যাহারের পরের এই পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এতে এনবিআর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকা কাস্টমস হাউস পরিদর্শন শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘এনবিআরের কর্মকর্তাদের ভয়ের কিছু নেই। যারা অনেক বড় আকারে সীমা লঙ্ঘন করেছে, সেটি ভিন্নভাবে দেখা হবে। সাধারণভাবে কারও কোনো ভয়ের কারণ নেই।’
আন্দোলন প্রত্যাহারের পর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবসর, বদলি, বরখাস্ত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আন্দোলন ওই কয়েকজনে করেনি, অনেকে করেছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন বলেছেন, আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে অনেক বাঁধা বিপত্তি আছে। অনেকেই মনে করছেন আর্থিক খাতের সংস্কার বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রস্তাবেই হচ্ছে বাস্তবে এমনটা না। সরকারের নিজস্ব উদ্যোগেও সংস্কার হচ্ছে। তবে তার ভালো পদক্ষেপ নিলে আমরা কেনো তা নেবো না।বুধবার (৯ জুলাই) হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত অডিট অ্যান্ড একাউন্টিং সামিটের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে অডিটিং-অ্যাকাউন্টিং বড় বিষয়। তবে যারা এসব কাজে জড়িত তাদের স্বচ্ছতা ও সততা সবার আগে বড় বিষয়। অনেক প্রতিষ্ঠান পেপার সাবমিট করেন, যার বেশিরভাগই মানসম্পন্ন না।এনবিআরের ক্ষেত্রে অডিট করা খুবই জরুরি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এনবিআরের মতে প্রতি ১০০ জনে ৭০ জনই শূন্য ট্যাক্স দেয়, এটা অবিশ্বাসযোগ্য। যারা ৭০ ভাগ তথ্য দিচ্ছে, তাদের হিসাব খতিয়ে দেখা উচিত। আবার ১৮ লাখ রিটার্ন জমা পড়ছে সে তথ্যেও গড়মিল থাকতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্ট গরমিল পাওয়া যায়। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক বেসড সুপারভিশন) পুরোপুরি কার্যকর হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বিশ্বাস অর্জন করতে গেলে অডিট রিপোর্টে স্বচ্ছতা ও সঠিক তথ্য দিয়ে রিপোর্ট সাবমিট করতে হবে। এটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক জয়েন্টলি কাজ করবে। পাওনা নিয়ে চার সরকারি প্রতিষ্ঠানে অডিট করতে গেলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি। যদি একাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড কোন প্রতিষ্ঠান অনুসরণ না করে তাদের ওপর শাস্তি আরোপ করা উচিত।অনুষ্ঠানে এফআরসির চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম সামান্য কমেছে, যার পেছনে মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবাহ। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গড়ে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে ১২২ টাকা ৪০ পয়সা দরে, যা আগের তুলনায় প্রায় ৬০ পয়সা কম।এর আগে ডলারের দর সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, যখন এর দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বেড়ে যাওয়ায় ডলারের সরবরাহ বাড়ে এবং ব্যাংক খাতে এর চাহিদা হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দর কিছুটা নিচের দিকে নামতে শুরু করে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার দিনের শুরুতে প্রতি ডলার ১২২ টাকা ২৫ পয়সা দরে লেনদেন শুরু হয়, যা কিছু সময়ের জন্য বেড়ে ১২২ টাকা ৫৫ পয়সায় ওঠে। তবে দিন শেষে আবার তা নেমে আসে আগের দামে। এদিন আন্তঃব্যাংক পর্যায়ে মোট ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার লেনদেন হয়।আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ডলারের দর বাজারচালিত করে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার নজরদারিতে কঠোর অবস্থান নেয়, যার ফলে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি বা কারসাজির সুযোগ হয়নি।বর্তমান সরকারের অধীনে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ বেড়েছে। রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি এখন শুধুমাত্র আমদানির দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। বকেয়া ঋণ পরিশোধের চাপ কমে আসায় ডলারের ওপর অতিরিক্ত চাহিদাও নেই।টানা দেড় সপ্তাহ ধরে ডলারের দর কমতির দিকে। ফলে টাকার মান কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে এবং টাকার অবমূল্যায়ন থেকে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক নীতির কারণে ডলারের মান গত এক মাসে প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে। ফলে বৈশ্বিক প্রভাবেও দেশের বাজারে ডলারের দর কমছে। এ ছাড়া আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকার মতো সংস্থাগুলো থেকে ঋণের অর্থ ছাড় পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কিছুটা বেড়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও স্থিতিশীল করেছে। ভোরের আকাশ/হ.র
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ধাক্কার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ৩৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার, যা কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাকশিল্প চরম ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে।এই নতুন শুল্ক নীতি কার্যকরের আগে হোয়াইট হাউস থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্র ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আগে বাংলাদেশি পণ্যে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতো। নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হলে তা দাঁড়াবে প্রায় ৫০ শতাংশে। এমনকি কিছু পোশাকপণ্যে শুল্ক হার পৌঁছাতে পারে ৫১ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, এই অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হলে রপ্তানিনির্ভর অনেক প্রতিষ্ঠান কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম শুল্ক ১০-২০ শতাংশের মধ্যে থাকবে, কিন্তু ৩৫ শতাংশ অনেক বড় ধাক্কা।”তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য। অথচ এই ইস্যুতে সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তেমন আলোচনা করেনি। শুধু বলা হয়েছে—আলোচনা চলছে, সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।”অন্যদিকে বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক তৎপরতা ও মার্কিন আমদানিকারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রয়োজন। তার ভাষায়, “এই শুল্ক কার্যকর থাকলে হাজার হাজার শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন এবং রপ্তানি শিল্পে স্থবিরতা নেমে আসবে।”বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের হিসাব বলছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৩৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। আর আমদানি করেছে ২.২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং এ লক্ষ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন।যুক্তরাষ্ট্রের অটেক্সা (অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২২২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬.৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। তবে এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ওপর নতুন শুল্ক নীতি বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।ভোরের আকাশ/হ.র
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের পরিবার এবং আহতদের সহায়তায় ২৫ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সময় সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ কোটি টাকা দেবে। এ ছাড়া পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নির্বাচিত ১১টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এক কোটি টাকা করে অর্থ প্রদান করবে এই তহবিলে।এই বিশেষ সহায়তা তহবিল ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ হস্তান্তর করা হবে। এখান থেকে নিহতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/হ.র