আম্মা সালাম জানিয়েছেন: ড. ইউনূসকে বললেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনের দ্য ডোরচেস্টার হোটেলে বৈঠক করছেন। পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকের পূর্বে প্রধান উপদেষ্টার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন তিনি এবং বেগম খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে সালাম জানিয়েছেন বলে জানান।
শুক্রবার (১৩ জুন) যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের দ্য ডোরচেস্টার হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তারেক রহমান হোটেল প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাকে স্বাগত জানান। এরপর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের রুম পর্যন্ত তারেক রহমানকে এগিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমান হাসিমুখে করমর্দন করেন। সেই মুহূর্তের একটি ভিডিওতে দেখা যায়-
প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানকে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে।’
তারেক রহমানও বলেন, ‘আমার কাছেও খুব ভালো লাগছে।
আপনার শরীর কেমন?’
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চলছে, টাইনা টুইনা চলতে হয়।’
এ সময় তারেক রহমান বলেন, ‘আম্মা (বেগম খালেদা জিয়া) আপনাকে সালাম জানিয়েছেন।’
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
মানুষ মারার পরামর্শদাতারা কীভাবে সাংবাদিক হন- এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী শাসনামলে সাংবাদিকরা তেলবাজিতে মেতেছিল, ছিল না কোনো স্বাধীনতা। তেল দিতে দিতে মারাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, তারা মানুষ মেরে ফেলার পরামর্শ দিতেও কোনো দ্বিধাবোধ করেনি, তারা কীভাবে সাংবাদিক হন। এখনো কীভাবে তারা মিডিয়াতে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র-স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ এক সঙ্গে চলে না।মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলে না। কারন তারা যতবারই রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কিছু সাংবাদিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, ব্যক্তিগত ভাগ্য উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করেছে। এ কারণে কারো কারো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শতকোটি টাকা লেনদেন হয়। আবার দেশের বাইরে অনেকে বাড়ি করেছেন।ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব বাসির জামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু, আব্দুল আওয়াল ঠাকুর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় ঐকমত্যের প্রত্যাশা নিয়ে আজ ফের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহসভাপতি আলী রিয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র যেন কখনো স্বেরাচারী না হয় সেটি নিশ্চিত করাই সংস্কারের লক্ষ্য। ৩০টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সাথে বৈঠকে অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরবেন। এ বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই জাতীয় সনদ (জুলাই সনদ) করা হবে। আগামী মাসে জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের। যেসব প্রস্তাবে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জুলাই সনদে যুক্ত হবে না বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ।তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে মাথাায় রেখেই মৌলিক বিষয়ে সবাই একমত হবে সেটাই আশা করছি। রাষ্ট্র যেন কখনো স্বৈরাচারী অবস্থায় ফিরিয়ে না আসে সেটিই চাওয়া।এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, সব বিষয়ে সবাইকে একমত হতে হবে এটা গণতান্ত্রিক চিন্তা নয়।তিনি বলেন, বাংলাদেশে তো আমরা বাকশাল করতে যাচ্ছি না। সবাইকে যে একমত হতে হবে- এটা বাকশালী চিন্তা, যেটা শেখ হাসিনার পিতা করেছিলেন। কারণ বিভিন্ন দলের বিভিন্ন দর্শন, বিভিন্ন চিন্তা থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। যেখানে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর বাইরে সংস্কার করার সুযোগ নেই। এর বাইরে কিছু করতে হলে জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়ার সরকারের হাত ধরে আসতে হবে ।জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, এবারের বৈঠকে কয়েকটি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত হতে পারে। আমরা আমাদের মত দেবো। যে সব বিষয়ে দ্বিমত আছে সেগুলো নিয়ে ফের বৈঠকের পর চূড়ান্ত হবে বলে আশা করি। আমরা চায় রাষ্ট্র আর কখনো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা নিয়ে না আসুক।জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেছেন, মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত না হওয়া গেলে রাষ্ট্রের পরিবর্তন সম্ভব না। সেটি গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার বিপরীত। যারা অন্তত মৌলিক বিষয়গুলোতে সংস্কারে একমত হবেন না তাদের উদ্দেশ্যে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী দৈনিক ভোরের আকাশকে এ বিষয়ে বলেছেন, সংস্কার এবং বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। তা না হলে আমরা ফের আগের অবস্থায় ফিরে যাব। জুলাই অভ্যুত্থানের আরেকটা আকাক্সক্ষা ছিল বিদ্যমান পচাগলা রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন। সেটি যদি না হয় তাহলে এতো জীবন আত্মত্যাগের কোনো মানে হয় না। সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়।গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই মঙ্গলবার আবার শুরু হচ্ছে।গত রোববার কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচি হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো আগের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্ত করা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব), দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া।এদিকে, এর আগের বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হবে, সে প্রশ্নে অনেকটাই কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার বিষয়েও অনেকটা ঐকমত্য হয়েছে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০ উন্নীত করা এবং নারী আসনে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য দূর হয়নি।বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে। এই বিধানে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাদের প্রস্তাব ছিল, অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্বের আলোচনায় বেশির ভাগ দল ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত ছিল। তবে অর্থবিলের সঙ্গে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল দলগুলোর। সেই আলোচনার ভিত্তিতে গতকালের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব উত্থাপন করে, তা হলো অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। কোনো কোনো দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না, এমন শর্ত যুক্ত করার কথা বলে।এদিকে, সাধারণ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন ও গণভোট এবং জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনে শক্ত আপত্তি আছে বিএনপির।বিএনপি মনে করছে, ভোটের অনুপাতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন বাধ্যতামূলক করা হলে নির্বাচিত সংসদের ক্ষমতা কমে যাবে। আবার সংবিধানের যে কোনো সংশোধনের জন্য গণভোট বাধ্যতামূলক হলে সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হবে।বিএনপির আশঙ্কা, এনসিসি গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের ক্ষমতা কমে যাবে। আবার সংসদ ভেঙে দেওয়া অবস্থায় উচ্চ ক্ষমতার এই এনসিসির জবাবদিহির কোনো কাঠামো থাকবে না। আবার নির্বাচনকালীন অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এনসিসি চাইলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করারও সুযোগ থাকবে। ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে একমত হলেও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। এছাড়া এনসিপি এ বিষয়ে অবস্থান হলো- অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে অন্য বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন এ বিষয়ে অনেকটাই ঐকমত্য হয়েছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ৫৯তম মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হাইকমিশনার টুর্কের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে তিনি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং তা উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরেন।বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি আশাবাদী যে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে অগ্রগতি হচ্ছে। আমি রাজনৈতিক সংস্কার এবং অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে অর্থবহ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।তবে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধের সুযোগ রেখে সাম্প্রতিক আইনি পরিবর্তন এবং এ–সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড নিয়ে আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এসব পদক্ষেপ সংগঠনের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারে অন্যায্য হস্তক্ষেপ করতে পারে।”প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশে ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত ব্যক্তি বা সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।এই অধ্যাদেশের আওতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালকে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।বাণিজ্য ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে হাইকমিশনার টুর্ক আরও বলেন, “সাম্প্রতিক শুল্ক বৃদ্ধি ও বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে সুনামির মতো আঘাত হানবে। এতে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশগুলো ও অন্যান্য ছোট উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের মতো রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো মারাত্মক বিপদের মুখে পড়তে পারে।”ভোরের আকাশ//হ.র
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল। সোমবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিন সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘নো পিস উইদাউট জাস্টিস’-এর সেক্রেটারি জেনারেল নিকোলো ফিগা তালামাঙ্কা, ইন্টারন্যাশনাল লইয়ার অ্যান্ড অ্যাকাউন্টাবিলিটি এক্সপার্ট পাসকাল টারলান এবং ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ল এক্সপার্ট ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক পরিচালক আব্বাস ফয়েজ।বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এবং ইউরোপ অঞ্চলের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা।দীর্ঘ এ বৈঠকে প্রতিনিধি দলটি জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যক্রম এবং তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলের উপস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চায়। একই সঙ্গে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াতের গঠনমূলক ও দায়িত্বশীল ভূমিকার কথাও তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে বলে জানায় জামায়াত।বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলটি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। এরপর তারা দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া মানবাধিকার প্রতিনিধি দল জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে দলের অবস্থানের প্রশংসা করে বলে জানা গেছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ভবিষ্যতেও আরও কার্যকর হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ